বান্দরবান: ভ্রমণপিপাসুদের কাছে পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলা। কিন্তু বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চলমান থাকায় এবং তিন উপজেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকায় ঈদুল আজহার এই বন্ধে বান্দরবানে পর্যটক নেই,এতে হতাশ জেলার পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
বিভিন্ন পরিমাণ ছাড় ঘোষণার পরও পর্যটকদের দেখা মিলছে না পর্যটন নগরী বান্দরবানে। জেলার হোটেল মোটেল আর বিনোদন কেন্দ্রগুলো এবারের ঈদে পুরোই ফাঁকা। ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকদের সুবিধার জন্য জেলার সব হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস ২০ শতাংশ, নীলাচল ও মেঘলা পর্যটনকেন্দ্র ২০ শতাংশ ছাড় দিয়েও পর্যটক পাচ্ছে না। এতে বিপুল পরিমাণ লোকসানে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
বান্দরবান শিশু পার্কের পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে এবার বান্দরবান শিশু পার্কে প্রচুর পর্যটক সমাগম হবে এই প্রত্যাশায় প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছিলাম, বিভিন্ন হোটেল, মোটেল ও বিনোদনকেন্দ্রে ছাড় ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তারপরেও বান্দরবানে পর্যটকদের দেখা নেই।
বান্দরবানের আবাসিক হোটেল হিলভিউয়ের ম্যানেজার পারভেজ বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে আমাদের হোটেলের সবগুলো রুম আগে থেকে বুকিং হয়ে যেত, কিন্তু এবার আগাম কোনো বুকিং নেই। ছুটি শুরু হওয়ার পরও হোটেলগুলো খালি।
পাহাড়ের চলমান অস্থিতিশীল পরিবেশ এবং তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকায় পর্যটক আসছে না বলে জানান, বান্দরবানের আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটক বরণে বিভিন্ন প্রস্তুতি নিয়েছে বান্দরবানের পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। তবে এবার পর্যটকদের আগমন নেই, ফলে পর্যটন খাতে দৈনিক প্রচুর লোকসান হচ্ছে।
তিনি বলেন,পার্বত্য জেলা বান্দরবানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের কারণে ২০২২সালের অক্টোবর মাস থেকে জেলার রুমা রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় কয়েক দফা পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রশাসন, আর এরপর থেকে থমকে যায় জেলার পর্যটন শিল্প। এদিকে ৩উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকলে ও বান্দরবান সদর, আলীকদম, লামা এবং নাইক্ষ্যংছড়িতে পর্যটকদের ভ্রমণে কোনো নিষেধ নেই।
এদিকে বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি।
ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, বান্দরবানের তিনটি উপজেলায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চারটি উপজেলায় পর্যটকরা অনায়াসে ভ্রমণ করতে পারছেন। পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারেস সেজন্য সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি পর্যটন স্পটে পর্যাপ্ত টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী পুলিশ নিয়মিত টহল পরিচালনা করছে।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, বান্দরবানের তিন উপজেলায় ভ্রমণে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বাদবাকি চারটি উপজেলায় পর্যটকরা ঘুরে এখন প্রচুর আনন্দ পাবেন। এসব উপজেলায় প্রচুর দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা পর্যটকদের অনেকের কাছে নতুন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৭ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৩
এসআইএস