ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

শাহরাস্তিতে ডাকাতিয়ার পাড়ে হচ্ছে নান্দনিক ওয়াকওয়ে

মুহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩
শাহরাস্তিতে ডাকাতিয়ার পাড়ে হচ্ছে নান্দনিক ওয়াকওয়ে

চাঁদপুর: চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া ব্রিজ এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে ১ কিলোমিটার জুড়ে তৈরি হচ্ছে ওয়াকওয়ে। এর কাজ শতভাগ বাস্তবায়ন হলে জেলায় নান্দনিক এক পর্যটনকেন্দ্রের সুবিধা পাবে ভ্রমণপিপাসুরা।

 

এটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ইতোমধ্যে লোকজন আসতে শুরু করেছেন।  

প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ওয়াকওয়ের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)।

জানা গেছে, প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা একটি জায়গায় পরিবেশবান্ধব ব্যতিক্রমী ওয়াকওয়ে করার উদ্যোগ নেন চাঁদপুর-৫ (শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম।

সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ওয়াকওয়ের নির্মাণ কাজ শেষ করতে ব্যস্ত শ্রমিকেরা। ডাকাতিয়া নদীর পাড় বাঁধ দিয়ে সূচিপাড়া ব্রিজ থেকে শুরু করে ছিখটিয়া ব্রিজ পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে এই ওয়াকওয়ে। দুই পাশে রেলিং দিয়ে ওয়াকওয়ে এবং কিছুটা দূরত্ব রেখে নদীমুখে করা হয়েছে বসার স্থান। পুরো এক কিলোমিটারজুড়ে লাগানো হচ্ছে বিভিন্ন জাতের গাছের চারা।  

এই ওয়াকওয়ে ঘিরে এখানকার জমির দামও অনেকগুণ বেড়ে যাচ্ছে বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা।  

নদীর পাড়ে ঘুরতে আসা সূচিপাড়া এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী জুবায়ের, আব্দুর রহমান ও ফয়সাল জানান, আমাদের বাড়ির কাছে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে এমন সুন্দর এবং দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে তৈরি হচ্ছে আমরা জানতাম না। দূর থেকে দেখেছি কেবল। আজ এসে দেখলাম খুবই সুন্দর। যে কেউ এখানে এলে তার দারুণ সময় কাটবে এবং প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে হাঁটতে হাঁটতে শরীরের সঙ্গে তার মনটাও ভালো হয়ে যাবে।

নির্মাণাধীন ওয়াকওয়ের পাশে দাঁড়িয়ে ডাকাতিয়ার সৌন্দর্য দেখছেন স্থানীয়রা

ওয়াকওয়ে দেখতে আসা দন্ত চিকিৎসক মাসুদ হাসান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটি নির্মাণ হচ্ছে দেখেই চলে এলাম। আমার জানা মতে, নদীপাড়ে এ ধরনের ওয়াকওয়ে দেশের অন্য কোথাও নেই। এটির কাজ শেষ হলে পুরো শাহরাস্তির উপজেলার চিত্র পাল্টে যাবে।  

শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ হুমায়ন রশিদ বলেন, স্থানীয় এমপির একক উদ্যোগে শাহরাস্তি পৌর এলাকায় এক কিলোমিটারজুড়ে নির্মাণাধীন ওয়াকওয়ের অনেকটা শেষের পথে। এটি তৈরি হলে দুটো লাভ হবে। প্রথমত: নদীর পাড় ঘিরে একটি নান্দনিক পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা, দ্বিতীয়ত: দীর্ঘস্থায়ীভাবে নদী ভাঙন থেকে পাড়কে রক্ষা করা।  

তিনি আরও বলেন, এই ওয়াকওয়ে থাকবে সম্পূর্ণ যানবাহন ও ধুমপানমুক্ত। পাশাপাশি এখানে বিনোদন পার্ক, আধুনিক রেস্তোরাঁ ব্যবস্থা ও পার্কিং ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। তাছাড়া পর্যটকদের নদীতে প্যাডেলচালিত নৌযানও থাকছে। যেটি পুরো চাঁদপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে স্থান পাবে।

বিশ্রামের জন্য তৈরি হচ্ছে বেঞ্চ

বিআই ডাব্লিউটিএ চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন জানান, ২০২১ সালের ৪ ডিসেম্বরে এটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এতে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে খুব শিগগিরই এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মেজর (অব) রফিক ইসলাম বীরউত্তম।

ওয়াকওয়ে নির্মাণ প্রসঙ্গে মেজর (অব.) রফিক ইসলাম বলেন, আমি ৯৬ সাল থেকে টানা এই আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে আছি। আমার এলাকায় ৩ হাজার কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। তবে জনগণের মাঝে আমি আমার একটি স্মৃতি ধরে রাখতে এই ওয়াকওয়ে করে গেলাম। যাতে করে স্থানীয়রা নিজ এলাকাতেই বিনোদনের সুবিধা পান। আর এটি করতে পেরেছি আমি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি হওয়ার কারণে। তাই আমি এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে এটি বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।