বান্দরবান: ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটক বরণে প্রস্তুত পার্বত্য জেলা বান্দরবান। ইতোমধ্যে জেলার ৭০ শতাংশ হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসের বুকিং হয়ে গেছে।
প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে অসংখ্য পর্যটকের ঢল নামে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে। পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে জেলার মেঘলা, নীলাচল, প্রান্তিক লেক, নীলগিরি নীল দিগন্তসহ জেলার সব কয়টি পর্যটনকেন্দ্র।
এদিকে এবারেও ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে প্রচুর পর্যটকের বান্দরবানে সমাগম ঘটবে জেলায় এমন প্রত্যাশা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে বুকিং হয়ে গেছে জেলার বেশির ভাগ হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট আর গেস্ট হাউস। শেষ সময়ে বিভিন্ন সংস্কার কাজ শেষ করে নতুনভাবে সাজিয়ে পর্যটকদের সেবা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
জেলা সদরের হিলটন হোটেলের ম্যানেজার এস এম আক্কাস উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, আমাদের হোটেলের ৭২টি রুমের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে আর ঈদের ছুটি শুরু হলেই আরও পর্যটকের আগমন ঘটবে আর আমরা ভ্রমণকারীদের সার্বিক সেবা দিতে প্রস্তুত।
বান্দরবানের ক্লাউডি ইন রিসোর্টের ম্যানেজার মো. হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের ছুটি উপলক্ষে আমাদের বেশিরভাগ রুম বুকিং হয়েছে। আমরা পর্যটকদের বরণের অপেক্ষায় রয়েছি।
তিনি বলেন, বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সেবার জন্য প্রতিটি হোটেল-রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ বেশ সচেতন। আর তারা পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে কাজ করে যাচ্ছে।
বান্দরবান হোটেল রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মো. জসীম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, বান্দরবানের সব হোটেল মোটেল আর রিসোর্টগুলো আমরা নতুন আঙ্গিকে সাজানো এবং নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য সব মালিককে নির্দেশনা দিয়েছি এবং সেই মোতাবেক পর্যটক বরণের জন্য সবাই সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘ একমাস রমজানে বান্দরবানে পর্যটক কম থাকায় বান্দরবানের বেশিরভাগ হোটেল-রিসোটগুলোতে নানা ধরনের সংস্কার কাজ করা হয়েছে আর পর্যটকরা বান্দরবান ভ্রমণ করে এবার আরও বেশি আনন্দিত হতে পারবে।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, অসংখ্য পর্যটনকেন্দ্র আর শতাধিক হোটেল-মোটেল রিসোর্টের পাশাপাশি জেলায় রয়েছে প্রায় চার শতাধিক পর্যটকবাহী চাঁদের গাড়ি আর পর্যটকদের নিরাপত্তারক্ষাসহ জেলার পর্যটনের উন্নয়নের নিয়মিত কাজ করছে প্রশাসন।
হোটেল-মোটেলের মতো জেলায় পর্যটকদের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে ভ্রমণের জন্য ইতোমধ্যে বুকিং হচ্ছে বিভিন্ন পর্যটকবাহী যানবাহনগুলো, আর দীর্ঘদিন পরে ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকদের আগমনে ব্যবসায়িকভাবে কিছুটা লাভবান হওয়ায় প্রত্যাশা করছে পর্যটকবাহী যানবাহন সমিতির নেতারা।
বান্দরবান মাইক্রোবাস, জিপ ও পিকআপ মালিক সমবায় সমিতির লাইন পরিচালক মো. কামাল বাংলানিউজকে জানান, আমরা আমাদের সব চাঁদের গাড়িগুলো (ট্যুরিস্টবাহী যান) কাজ করে রেখেছি, আশা করি, দেশি-বিদেশি পর্যটক বান্দরবানে আসবে আর আমরা তাদের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে ভ্রমণ করাতে সক্ষম হবো।
এদিকে টানা ছুটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা যাতে নিরাপদে বান্দরবানে ভ্রমণ করতে পারেন, সেজন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা এমনটাই জানালেন ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্মকর্তারা।
ট্যুরিস্ট পুলিশ, বান্দরবান জোনের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নিত্যানন্দ দাশ বাংলানিউজকে বলেন, বান্দরবানে অসংখ্য পর্যটনকেন্দ্র আর সারাবছরই বান্দরবানে প্রচুর পর্যটক ভ্রমণে আসে। এ ছাড়া ঈদ ও পূজার ছুটিতে পর্যটকদের আগমনের মাত্রা বেড়ে যায় অনেক বেশি পরিমাণে আর পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা প্রতিনিয়ত কাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২৫
এএটি