জেনেভা (সুইজারল্যান্ড) থেকে: ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় দেশ ছেড়েছিলেন কুমিল্লার আমজাদ চৌধুরী (৪৬)। ছিলেন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী।
আল্পস পর্বতমালা, প্রশস্ত হৃদ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ সুইজারল্যান্ডে আজ সেই তিনিই বিশাল তিনটি রেস্টুরেন্টের মালিক।
এছাড়াও তার রয়েছে একটি সুপার শপ, মানি এক্সচেঞ্জ আর ইন্টারনেটের ব্যবসা। চড়েন সর্বাধুনিক মডেলের মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়িতে।
এখন তার অধীনে কাজ করছেন সুইস, ফরাসি, স্পেনিশ, পর্তুগিজ, নেপাল, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ৩৫ জন কর্মী।
নিজের মেধা, প্রজ্ঞা আর দুরদর্শিতার কারণে একসময়ের ডিশ ওয়াশার আমজাদ চৌধুরী এই দূর-প্রবাসে সবার কাছেই ‘আপনজন’। সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশ কমিউনিটির সভাপতি তিনি। কমিউনিটির সদস্যদের বিপদ-আপদ থেকে হাসি-কান্না সবকিছুরই অংশীদার তিনি।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সোনাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ চৌধুরীর ছেলে আমজাদ চৌধুরী।
চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। পেশায় ছিলেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। কিছুদিন ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ায়। কাজ করেছেন রঙের কারখানার শ্রমিক হিসেবে।
১৯৯৮ সালে ভাগ্য পরিবর্তনের উদ্দেশে পাড়ি দেন স্বপ্নের দেশ সুইজারল্যান্ডে। দেশটি তখন আরো শান্ত আর নিরিবিলি। অভিবাসীদের তেমন ভিড় ছিল না সে সময়। এদেশে এসে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।
২০০০ সালে বিয়ে করেন এক সুইস নারীকে। সেই সুবাদে সুযোগ পান দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ। জেনেভার লেক লেমন সংলগ্ন হোটেল নোউগা হিল্টনে কাজ নেন। পদবী ডিশ ওয়াশার। টানা দুই বছর ডিশ ওয়াশারের কাজ শেষে পেশা পরিবর্তন করেন তিনি।
কাজ নেন জর্ডান দূতাবাসে। সাড়ে তিন বছর সেখানে কাজ করার পর ২০০৭ সালে ব্যবসা শুরু করেন তিনি।
সিটি সেন্টার এলাকার গারকর্নাভিনে বাবুল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর সহায়তায় দেন ‘রেস্টুরেন্টে বোম্বে’ নামে একটি খাবারের দোকান।
তারপরের গল্পটা কেবলই সাফল্যের। একাধিক হোটেল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখভালের পাশাপাশি কমিউনিটির কল্যাণেই এখন তার নজর বেশি।
কেবল নিজের ভাগ্যই বদলাননি তিনি, বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডে নিয়ে এসেছেন আত্মীয়-স্বজনদের অন্তত ২০ জনকে। আমজাদের ছোয়ায় আজ তারাও প্রতিষ্ঠার পথে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৬
এসআর