ফ্রান্স-সুইজারল্যান্ড সীমান্ত থেকে: সুইজারল্যান্ড-ফ্রান্স সীমান্ত পেরিয়ে ছিমছাম শহর আনিমাস। সেখানে ব্যবসার নতুন চিন্তা আর অভিনব বিষয় খুলে দিয়েছে শাহীনের ভাগ্যের চাকা।
খালি হাতে ফ্রান্স এসে আজ তিনি বিশাল ব্যবসায়ী। প্রবাসে বসে নিজেই চাকরি দেন বহু মানুষের।
ফেনী ফুলগাজী থানার জগৎপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে আজম মজুমদার শাহীন ঢাকায় আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। আগ্রহের জায়গাটা ছিল মানুষের অধিকার সুরক্ষা। আর তাই মানবাধিকার প্রশ্নে কাজ করতে গিয়ে দেশে-বিদেশে পরিচিত হন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে।
মানবাধিকার রক্ষার সার্বজনীন আন্দোলনের কর্মী হিসেবে সৌদি আরবে শিরোশ্ছেদের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ আওয়াজ তুলে অনেকেরই নজরে আসেন তিনি।
দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে গণতান্ত্রিক সরকারের সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়েও কাজ করেছেন। তারপর ব্যক্তিগত অভিমান থেকে ১৯৯৬ সালে দেশ ছাড়েন। জার্মানির বার্লিন হয়ে চলে আসেন ফ্রান্সে। প্যারিস থেকে বহু দূরে। সুইজারল্যান্ড সীমান্ত ঘেঁষা এই শহরে।
সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেন তিনি। উদ্যোগ নেন ব্যবসার। নতুন আইডিয়ায় শুরু করলেন ফার্স্ট ফুডের ব্যবসা।
ইউরোপে মদ ছাড়া কল্পনাই করা যায় না কোনো খাবারের দোকান। নতুনত্ব নিয়ে মদ ছাড়াই চালু করলেন খাবারের প্রতিষ্ঠান। অনেকের কাছেই বিষয়টি ছিল বিস্ময়কর। তবে শাহীনের লক্ষ্য ছিল প্রথমে স্থানীয় মুসলিম অধিবাসী।
এতে কাজ হলো। যে প্রতিষ্ঠানে মদ ছাড়া খাবার মেলে তেমন বিষয়টি লুফে নিলেন অনেকে। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি শাহীনকে। এখন সেখানে তিনটি রেস্টুরেন্ট, বেশ কয়েকটি বাড়ির মালিক তিনি।
এছাড়াও বিশাল বিনিয়োগ রয়েছে স্থানীয় শেয়ার বাজার, রিয়েল এস্টেট সেক্টরে। জীবন সঙ্গী ফেনীর হামিদা আক্তার বিলু। আর দু’টি সন্তান রোয়ান (১৩) সারাকে (১১) নিয়েই প্রবাস জীবন তার।
আজম মজুমদার শাহীন বাংলানিউজকে বলেন, দেশের জন্য মায়া হয়। হাজার হোক আমার প্রিয় মাতৃভূমি। মনটা যখন ছুটে যায় তখন দেহ নিয়ে বেশ শুন্যতা অনুভব করি। তারপরও প্রবাসে একখণ্ড বাংলাদেশ গড়েছি আমরা। দেশের কিছু মানুষকে এখানে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সুখে-দুখে মিলেমিশে এখানে তৈরি করেছি বাঙালি একটি সমাজ। মনে পড়লেই পরস্পরের কাছে ছুটে আসি। হৃদয়ে এভাবেই বাংলাদেশকে অনুভব করি। এটাই আমার দেশপ্রেম।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৬
আইএ