মিলান (ইতালি) থেকে: ১৬ বছর আগে এসেছিলেন সমৃদ্ধির জন্য। আজ সবকিছু ফেলে রেখেই ভিন্ন দেশে যেতে হচ্ছে সন্তানদের লেখাপড়ার তাগিদে।
একটু স্বচ্ছলতা, নিশ্চিত জীবন আর সমৃদ্ধির স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন ঢাকার মিন্টু। প্রায় দেড় যুগে এখনো পূরণ হয়নি অনেক স্বপ্ন। তাই ইতালি ছেড়ে এখন যুক্তরাজ্যে পাড়ি দিতে হয়েছে মিন্টুর পরিবারকে।
মিন্টু একাই নন। দীর্ঘ পরিশ্রমে ইতালির নাগরিকত্ব আর মূল্যবান পাসপোর্ট পেয়েও পূর্ণতা আসেনি অনেক পরিবারে।
তার মতোই অনেকে নতুন করে অভিবাসী হতে ছুটছেন যুক্তরাজ্যের পথে।
ঢাকার সাভারের রাঢ়িবাড়ি মহল্লার নেছার উদ্দিনের ছেলে মিন্টু। দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে সবার বড় মিন্টুর ইতালি আসাটাও সহজ ছিলো না। কাজের ভিসায় নয়, ‘টারজান বা ডাংকি ভিসায়’। প্রথমে ছাত্র পরিচয়ে ইউক্রেন। পরে সড়ক পথে বুদাপেস্ট, স্লোভেনিয়া হয়ে পৌঁছান ইতালিতে।
মিন্টু বাংলানিউজকে জানান, ইতালিতে এসে মাস তিনেক বেকার ছিলাম। তারপর একটি ফার্মেসিতে স্টোরকিপার মাসিক তিনশ’ ইউরো বেতনে।
২০০১ সালে ইতালি সরকারের বৈধতার সুযোগ নিয়ে বৈধ হন তিনি। পরে ছয় বছর মিলানে একটি পিজার দোকানে পিজা তৈরির কাজ করেন। মাঝে মোটর মেকানিক্স হিসেবে বোলনিয়ায় এক বছর কাজও করেন।
স্ত্রী সাহানা আহমেদ সাথী, দুই মেয়ে সিনথিয়া আহমেদ মিম (১৪) ও তাজনিম আহমেদ মীরাকে (৫) নিয়ে থাকেন এখানেই।
এর মধ্যে বড় মেয়ে সিনথিয়া আহমেদ মিম পড়ছে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অষ্টম শ্রেণির সমমানে। এখন আর নিজের জন্য নয়, সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়েই যত দুশ্চিন্তা তার।
মিন্টু বাংলানিউজকে জানান, এখানে সন্তানদের তেমন উজ্জল ভবিষ্যত দেখছি না। তুলনামূলক লন্ডনে বাংলা কমিউনিটিতে কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণের সম্ভাবনা থেকেই চলতি বছরের জুনে যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে তার।
‘জীবনটাই এমন। ক্ষণে ক্ষণে বদলায় চাহিদা আর প্রয়োজন। আর সেই অদৃষ্ট মেনে নিয়েই আমাদের যাযাবর জীবন’।
অনাগত ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে ঝাপসা চোখেই এমন কথা বেরিয়ে আসে মিন্টুর কণ্ঠ থেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৬
জেডএস