পর্যটনখাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা ভাইরাস না কমলে পর্যটকরা যাবেন না ভ্রমণে। ফলে এই সময়ে পর্যটনস্পট খুলে দিলেও তেমন লাভ হবে না।
তারা এও বলছেন, করোনার কারণে আন্তর্জাতিক পর্যটনে বেশ পরিবর্তন আসবে। প্লেন ভাড়া বাড়ার পাশাপাশি অন্য খরচও বাড়বে। ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণির যেসব পর্যটক থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, নেপাল বা সমমানের দেশে যেতেন, খরচ বাড়ার কারণে তারাও করোনা পরবর্তী সময়ে সেসব দেশে যাবেন না।
টানা বাসায় থাকতে থাকতে মানুষের মধ্যে যে পরিবর্তন হয়েছে, তাতে বিদেশের ঝক্কি না নিয়ে নিজ দেশে ঘুরতে বের হবেন তারা। এতে দেশের পর্যটনখাত ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টে সরকারি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতসহ কিছু পর্যটনস্পটে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে সেই নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হবে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, হোটেল-মোটেল ও পর্যটনস্পটে সরকারি নিষেধাজ্ঞা নেই। এজন্য পর্যটনখাত খুলে দেওয়ারও কিছু নেই। করোনার মধ্যে মানুষও ভ্রমণে যাবে না। করোনা যখন কমে আসবে, মানুষ তখন এমনিতেই ঘুরতে যাবে।
জানা যায়, আগামী শীতকালীন ট্যুরিজম সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছেন পর্যটনখাত সংশ্লিষ্টরা। শীতকালনী ট্যুরিজমে পর্যটনখাতের প্রাণ সঞ্চার করার পাশাপাশি এ খাতের ক্ষতিও পুষিয়ে উঠতে পারবে।
করোনার কারণে এ খাতের যেসব কর্মী চাকরি হারিয়েছেন, পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেই তারাও আবার ফিরবেন। সেই পরিকল্পনা রেখে এগোচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) কোষাধ্যক্ষ ও ট্যুরিজম উইন্ডোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান মাসুম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আশা করি আগামী অক্টোবর নাগাদ পর্যটনখাত স্বাভাবিক হবে। পুরো শীতকালীন সিজন ব্যবসায়ীদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। করোনা কমে গেলে শীত মৌসুমে পর্যটকরা ভ্রমণে বের হবেন। ফলে এ খাতে যে ক্ষতি হয়েছে, সেটা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে অভ্যন্তরীণ পর্যটনের উন্নতি হবে। আন্তর্জাতিক পর্যটনে খরচ বাড়বে। এজন্য অভ্যন্তরীণ পর্যটন ঘুরে দাঁড়াবে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক বাংলানিউজকে বলেন, করোনা পরবর্তী পর্যটন কেমন হবে, সেজন্য আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। করোনা মাথায় রেখে পর্যটকদের জন্য খসড়া ও গাইডলাইন তৈরি করেছি। কক্সবাজারে একটি হোটেলে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি, করোনা পরবর্তী পর্যটন কেমন হবে সে বিষয়ে। হোটেল সংশ্লিষ্ট ও পর্যটক উভয়ই সেই গাইড লাইন অনুসরণ করবে।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত কবে নাগাদ পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র সচিব বলেন, সেখানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। এটা কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ভালো বলতে পারবেন। তবে আশা করি, আগামী মাস নাগাদ খুলে দেওয়া হতে পারে। তবে সবই নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির উপর।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২০
টিএম/এএ