পঞ্চগড়: পঞ্চগড় থেকে এ বছর শীতের কিছুটা আগেই পরিষ্কারভাবে দেখা দিয়েছে হিমালয়ের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়াই কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখা যাওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উত্তরের প্রান্তিক ও সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ে ছুটে আসছেন ভ্রমণ পিপাসুরা।
তবে অক্টোবরের শেষের দিকে দেখা দিলেও নভেম্বরের শুরু থেকে রোববার (৮ নভেম্বর) পর্যন্ত আকাশ পরিষ্কার না থাকায় কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে না পেয়ে হতাশ হয়েছেন পর্যটকরা।
এদিকে গত সোমবার (৯ নভেম্বর) হালকা দেখা দিলেও আকাশ পরিষ্কার হওয়ার কারণে মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) দিনভর দেখা গেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা।
স্থানীয়রা বলছেন, হেমন্ত ও শীতের এই সময়ে বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র পঞ্চগড় থেকে খালি চোখেই দেখা যায় এই পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। পর্বতের কিছু অংশ ভারতের সিকিম ও কিছু অংশ নেপালে অবস্থিত হলেও পঞ্চগড়ের প্রায় সব জায়গা থেকে খালি চোখে কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোমুগ্ধকর অপরূপ দৃশ্য দেখা মিলছে। এদিকে প্রতি বছর নভেম্বর শুরু হয়ে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি বা শেষে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা গেলেও এ বছর অক্টোবর মাসের শেষের দিকে থেকে দেখা মিলছে এবং বিগত বছরের তুলানায় আকাশ মেঘমুক্ত থাকায় গত ২৯ অক্টোবর থেকে টানা তিনদিন অনেক পরিষ্কার দেখা গেছে।
পর্যটকরা বলছেন রাত যাপনের জন্য আবাসিক ও হোটেল ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না থাকায় চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা। অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে, তেঁতুলিয়ায় পর্যটনের পরিবেশ পুরোপুরিভাবে সৃষ্টি করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
গাজীপুর থেকে আসা নাজমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, সকালে পরিবারসহ এসেছি কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে। আকাশ পরিষ্কার থাকায় অনেক সুন্দর দেখা গেছে এর অপরূপ দৃশ্য।
শাহিন নামে আরেকজন পর্যটক বলেন, মঙ্গলবার আবহাওয়া ভালো ও আকাশ মেঘমুক্ত থাকায় পুরো পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা বাংলানিউজকে বলেন, পর্যটকদের জন্য আবাসিক ও হোটেল ব্যবস্থা তেমন না থাকায় অনেকেই ভোগান্তিতে পড়েছে। আমরা এই ভোগান্তি কমাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।
উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী, কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ নেপাল ও ভারতের সিকিম সীমান্তে অবস্থিত। বাংলাদেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন (স্থলবন্দর) থেকে নেপালের দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার, ভুটানের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার, চীনের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার, শিলিগুড়ির দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। অন্যদিকে হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার আর কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। কিন্তু মেঘ-কুয়াশামুক্ত আকাশের উত্তর-পশ্চিমে তাকালেই দেখা মেলে বরফ আচ্ছাদিত সাদা পাহাড় কাঞ্চনজঙ্ঘা। প্রতি বছর নভেম্বর মাসের শুরু বা মাঝামাঝিতে দেখা গেলেও আকাশ পরিস্কার হওয়ার কারণে ২৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) সকালে হঠাৎ করে দেখা গেছে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য।
** টানা ৩ দিন দেখা দিয়ে ৩ দিন অন্তরালে কাঞ্চনজঙ্ঘা!
** ৩ দিন পঞ্চগড় থেকে দেখা যাবে না কাঞ্চনজঙ্ঘা!
** নীলফামারী থেকেও দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা
** তেঁতুলিয়ায় উঁকি দিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা!
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২০
এসআরএস