ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

পর্যটন

ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন সুন্দরবন

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২২
ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন সুন্দরবন সুন্দরবনের ঐতিহ্য বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার -ফাইল ছবি

খুলনা: ভ্রমণ পিপাষুদের জন্য এক আকর্ষণীয় স্থান সুন্দরবন। অপার প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সুন্দরবন যারা দেখেননি তারা এবার ঈদের ছুটিতে বেড়িয়ে যেতে পারেন এই সুন্দরী ম্যানগ্রোভ বন।

যেখানে শুধু বন নয়, চিরাচরিত সবুজ বনভূমির সঙ্গে দেখা মিলতে পারে দুর্লভ রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চঞ্চলা চিত্রা হরিণের পাল। সেই সঙ্গে দুরন্ত বানরদের নাচানাচিসহ পাখিদের ওড়াউড়ি।

চলতি বছরের এপ্রিলে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে আবারও বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখা পেয়েছেন পর্যটকরা। এবার পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভয়ারণ্যে খালের পাড়ে গাছের ডালে বাঘের দেখা পান একদল পর্যটক। ১০ জনের এ পর্যটক দলের অনেকে ক্যামেরায় সে দৃশ্য ধারণ করেন। ভাগ্য ভালো হলে আপনার চোখেও ধরা পড়তে পারে এই রয়েল বেঙ্গল টাইগার।

সুন্দরবনের কটকা, হিরণ পয়েন্ট (সাধারণভাবে নীলকমল নামে পরিচিত), দুবলার চর এবং টাইগার পয়েন্টে (কচিখালী) প্রতিবছর পর্যটকদের প্রচুর সমাগম ঘটে। কটকার অনবদ্য প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং বন্যপ্রাণী ভ্রমণকারীদের জন্য অতি আকর্ষণীয়। এখানে বনবিভাগ পরিচালিত একটি ডাকবাংলো এবং একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার আছে। হিরণ পয়েন্টেও আছে পর্যটকদের জন্য অতিথি ভবন এবং একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। দুবলার চর একটি ছোট দ্বীপ, এর সমুদ্র সৈকত অতি মনোরম।

সুন্দরবনের আকর্ষণ অফুরান, সে কারণে দেশের বাইরে থেকেও পর্যটকরা আসেন এ বনে। রহস্য-রোমাঞ্চে ঘেরা ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের বেশির ভাগ ট্যুর শুরু হয় খুলনা থেকে। ঢাকা থেকেও কিছু ট্যুর রয়েছে। সামর্থ্য অনুযায়ী পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারেন সুন্দরবন। সাধারণত ৩ দিন ২ রাতের কিংবা ৪ দিন ৩ রাতের ভ্রমণ প্যাকেজ হয়। বিলাসবহুল লঞ্চ রয়েছে সুন্দরবন ভ্রমণে।

যেভাবে যাবেন: একদিনেই সুন্দরবন ভ্রমণ করতে চাইলে করমজল পর্যটন কেন্দ্রে যেতে পারেন। ঢাকার মতিঝিল, আরামবাগ, শ্যামলী, কল্যাণপুর, গাবতলী থেকে গ্রিনলাইন, সোহাগ, হানিফ, ঈগল, এ কে ট্রাভেলসসহ বিভিন্ন এসি/ননএসি বাস খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যায় সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। এছাড়া সায়দাবাদ থেকে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, ফাল্গুনী পরিবহন, ইমাদ পরিবহন, সুন্দরবন, পর্যটক, বনফুলসহ বিভিন্ন বাস খুলনা, বাগেরহাট ও মোংলার উদ্দেশে ছেড়ে যায় সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত।   এছাড়া খুলনায় ট্রেনে এবং যশোর পর্যন্ত বিমানেও যাওয়া যাবে। পাশাপাশি নৌপথেও আসা যায়। খুলনায় নেমে লোকাল বাসে বাগেরহাট, মোংলা যাওয়া যাবে।

মোংলা থেকে করমজল লঞ্চ বা ট্রলারে মাত্র ৪৫ মিনিটের পথ হওয়ায় দিনে যেয়ে দিনে ফিরে আসার সুবিধা রয়েছে। এছাড়া ভ্রমণে তুলনামূলক খরচও কম। খুলনার বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চ ঘাট থেকেও সুন্দরবন যাওয়া যায়।

ট্যুর অপারেটররা বন বিভাগের কাছ থেকে ভ্রমণের অনুমতিসহ সবকিছুর দায়িত্ব নেন। খুলনা ও মোংলায় রয়েছে এমন শতাধিক ট্যুর অপারেটর। ঢাকাতেও আছে। সুযোগ আছে খুলনার কয়রা এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও মুন্সিগঞ্জ থেকে সুন্দরবন দেখার। ভ্রমণ পরিকল্পনা অনুযায়ী এই ঈদে আপনিও সময় করে বেড়িয়ে যেতে পারেন সবুজে ঘেরা সুন্দরবন থেকে। তবে ভ্রমনকারীকে বৈশাখ মাস হওয়ার কারণে কিছুটা সতর্কতার সঙ্গে ভালো মানের লঞ্চ বা ট্রলার ভাড়া করতে হবে। যাতে ঝড় উঠলে নিরাপদে থাকতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২২
এমআরএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।