বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ থেকে: সকাল থেকে দুপুর অবধি খুব একটা দর্শনার্থী ও ক্রেতা সমাগম না হলেও সন্ধ্যার পর থেকেই জমে উঠছে রাজধানীর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা।
একেবারে শুরুর দিন থেকেই ছুটির দিন ছাড়া এমন দৃশ্য প্রতিদিনই চোখে পড়েছে।
বুধবার সকাল থেকে দুপুর অবধি মেলা প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল খুবই কম। তবে বিকাল ৫টার পর থেকেই দৃশ্য বদলাতে থাকে। মাগরিবের আজানের পরেই দর্শনার্থীদের পদচারণাই মুখরিত হয়ে উঠে মেলা প্রাঙ্গণ।
সন্ধ্যার পর মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা যেমন বেড়েছে, সঙ্গেই বেড়েছে অংশগ্রহণকারী স্টকগুলোর বিক্রয়ের পরিমাণ। তবে গত কদিনের মতো এ দিনও নারীদের সামগ্রী এবং শিশুদের খেলনার দোকানগুলোতে সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
অধিকাংশ খেলনা ও নারী ঘরানার সামগ্রীর স্টলে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ের চিত্রই লক্ষ্য করা গেছে সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টা অবধি।
ক্রেতাদের এমন সমাগমে বেশ খুশি বিক্রেতারা। তবে সকাল থেকে টানা দুপুর অবধি ক্রেতা সমগম না হওয়ায় অনেকে হতাশাও ব্যক্ত করেছেন বাংলানিউজের কাছে।
তাদের দাবি মেলার প্রথম ১১ দিন চলে গেলেও বিক্রয় খুব একটা বাড়েনি। সকাল থেকে দুপুর অবধি ক্রেতা থাকে না বললেই চলে। তবে সন্ধ্যার পর দর্শনার্থী বাড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিক্রিও বাড়ে। তবে ছুটির দিনগুলোতে বিক্রি তুলনামূলক ভালো হয়।
শিশু খেলনা ও নারী সামগ্রী বিক্রয় প্রতিষ্ঠান আরাফাত এন্টারপ্রাইজের বিক্রয় প্রতিনিধি মো. কবীর বলেন, সন্ধ্যা থেকে বিক্রির পরিমাণ কিছুটা ভালো। তবে দুপুর দুইটার আগ পর্যন্ত বিক্রি একেবারেই ঢিলেঢালা। তবে ছুটির দিনগুলোতে এবার অতীতের তুলনায় বেশ বিক্রি বেড়েছে।
একটু দুরেই নামহীন শিশুদের খেলনা এবং নারীদের সাজগোজের সামগ্রী বিক্রির দোকানে বেশ ভিড় চোখে পড়ে। দোকানের ভেতরে ঢুকে দেখা গেলো নারীদের চুরি ও চুলের খোপা, নেলপালিশ, কানের দুল বিক্রি হচ্ছে বেশি। থেমে নেই শিশুদের খেলনা বিক্রি।
দোকানের বিক্রয় প্রতিনিধি আকাশ বিক্রির পরিমাণ ভালো এমন তথ্য দিয়ে জানালেন, নারী সামগ্রী সঙ্গে শিশুদের খেলনা পিস্তল, ডেমিন কার্ড, খেলনা সাইকেল, রিমোট কন্ট্রোল হেলিকপ্টার ও রেসিং কার বেশি বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রির পরিস্থিতি নিয়ে বেশ হতাশা প্রকাশ করেন ইরান প্যাভিলিয়নের বিক্রয় প্রতিনিধি রাসেল। তার তথ্যমতে, অন্য যেকোনো আসরের তুলনায় এবার বিক্রির পরিমাণ খারাপ। একে একে ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও বিক্রয় খুব একটা বাড়েনি।
ইন্ডিয়ান প্যাভিলিয়নের খালিদও বিক্রির পরিমাণ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ছুটির দিন ছাড়া বলার মতো তেমন বিক্রি হয় না। তবে মাঝেমধ্যে সন্ধ্যার পর বিক্রি কিছুটা বাড়ে। এভাবে চললে লোকসান থেকে মেলা শেষ করতে হবে।
বুধবারের বিক্রির বিষয়ে খালিদ বলেন, আজ সন্ধ্যার পর বিক্রি বেশ ভালো হয়েছে। কিন্তু দুপুরের আগে তো ক্রেতা না থাকায় এক প্রকার গল্প করেই কাটাতে হয়েছে।
এদিকে দর্শনার্থীরা বলছেন সকালে অফিস থাকায় মেলায় আসান হয় না। তা ছাড়া সকাল থেকে দুপুর অবধি নারীরা বাসার কাজে ব্যস্ত থাকেন। তাই বিকেলের দিকে মেলায় নারী সমাগম বাড়তে থাকে, জমতে থাকে মেলা।
গুলশান থেকে আসা রাজধানী বাসিন্দা রাইছা বলেন, সকালে কলেজ ছিল তাই বিকেলে এসেছি। আজ শুধু একটি প্লাস্টিকের ফুল কিনেছি। আর কিছু কিনবো না। ঘুরে ঘুরে দেখবো। অন্যদিন বান্ধবিরা (সূচনা, কাকলি, মাইসা ও নাদিরা) সবাই একসঙ্গে এসে একই ধরনের সাজগোজের জিনিস কিনবো।
সপরিবারে ঘুরতে আসা কলাবাগানের বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজ বলেন, বাণিজ্য মেলায় সবাইকে নিয়ে ঘুরতে এসেছি। দুই বাচ্চার জন্য কিছু খেলনা কিনেছি। আর বাসার জন্য নিয়েছি একটি ডিনার সেট।
পণ্যের দাম কেমন জানতে চাইলে মাহুফুজুর রহমান বলেন, দাম প্রায় মেলার বাহিরের মতোই। তবে বিভিন্ন দোকানে একসঙ্গে বিভিন্ন পণ্য কিনলে কিছুটা ছাড় দেওয়া হচ্ছে। মেলায় আসার মূল উদ্দেশ্য কেনাকাটা নয়। বাচ্চাদের আবদার মেটাতেই ঘুরতে এসেছি।
মেলায় ইলেকট্রিক চুলা বিক্রিতে প্রতারণা
বাংলাদেশ সময়: ২২০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৪