মেলা প্রাঙ্গণ থেকে: বাণিজ্য মেলায় খাবারের দাম রাখা হচ্ছে মেলার বাইরের যে কোনো খাবার দোকানের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। খাবারের অতিরিক্ত মূল্য রাখাকে ‘নিছক ডাকাতি’ বলছেন দর্শনার্থীরা।
আগে থেকে খাবারের দাম না শুনে খেতে বসে বিল দেওয়ার সময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন অনেকে। এমনকি দোকানে বসা ম্যানেজারদের সঙ্গে অনেকে জাড়িয়ে পড়ছেন তর্কবিতর্কে।
এমন পরিস্থিতিতে যারা মেলা সচিবালয়ে গিয়ে খাবার দোকানগুলোর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ করছেন তারা কেউ কেউ ফেরত পাচ্ছেন বাড়তি টাকা। তবে মেলা সচিবালয়ে অভিযোগ করছেন অল্পসংখ্যক মানুষ।
মেলায় খাবার দোকানগুলোর মধ্যে দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে ‘হাজীর বিরিয়ানী অ্যান্ড কাবাব হাউজ’। মেলায় এ নামের বড় বড় ৩টি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এখানে খাবারের দামের তালিকা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেটা মানছে না কেউ।
রেজোয়ান আহমেদ, মিথিলা এবং জনি তিন বন্ধু এসেছেন মেলায়। সকাল থেকে মেলায় ঘুরে দুপুরের খাবারের জন্য প্রবেশ করলেন হাজীর বিরিয়ানী অ্যান্ড কাবাব হাউজে। হোটেলে প্রবেশের আগে বাইরে রাখা মূল্য তালিকায় দাম দেখে নিলেন। সেখানে লেখা চিকেন বিরিয়ানি (৯০০ গ্রাম) ২৮০ টাকা। তারা সিদ্ধান্ত নিলেন দুপুরে তারা হাফ করে চিকেন বিরিয়ানি খাবেন। তাদের ধারণা ছিল হাফ প্লেটের দাম বেশি হলে দেড়শ’ করে রাখবে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাম না শুনেই তিনটি হাফ চিকেন বিরিয়ানির অর্ডার দিলেন তারা। খাবার শেষে তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হলো ৮১০ টাকার বিল। বিল দেখে তারা সবাই অবাক। তারা ম্যানেজারকে বললো আমরা তিন হাফ খেয়েছি কিন্তু আমাদের কাছ থেকে সম্পূর্ণ দাম রাখছেন কেন?
জবাবে ম্যানেজার বললেন, আপনারা যা খেয়েছেন তার চেয়ে ৭০ টাকা কম নিয়েছি। আর কম করা যাবে না। দ্রুত বিল দেন..। কিভাবে ৭০ টাকা কম নিয়েছেন জানতে চাইলে ম্যানেজার বলেন, তিন প্লেট বিরায়ানির মূল্য ৮৪০ টাকা এবং সার্ভিস ৪০ টাকাসহ মোট ৮৮০ টাকা বিল হয়। সেখানে আপনার বিল করেছি ৮১০ টাকা।
রেজোয়ান বললেন, আমরা তো হাফ করে খেয়েছি। তারপরও কেন সম্পূর্ণ দাম দিতে হবে। ম্যানেজার বললেন, আমাদের এখানে এটাই নিয়ম। হাফ ফুল বলে কিছু নেই। আমাদের এ দোকান ভাড়া কত দিতে হয় আপনি জানেন? খাবারের দাম তো একটু বেশিই পড়বে।
কোনো উপায় না পেয়ে তারা ৮১০ টাকা বিল পরিশোধ করে ভাউচার নিলেন। এখন তারা ভাবছে কী করবে।
হোটেল থেকে বেরিয়ে জনি বললেন, শুনেছি এখানে মেলা সচিবালয়ে অভিযোগ করা যায়। তারা মেলা সচিবালয়ে গিয়ে অভিযোগ করলে সেখান থেকে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে দিয়ে ‘হাজীর বিরায়ানী’ হোটেলে পাঠানো হলো।
সেখানে গিয়ে ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসা করা মাত্র তিনি বললেন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তালিকা অনুযায়ী আমরা বিল করেছি। এক পর্যায়ে তাদের মালিককে মেলা সচিবালয়ে ডিজি’র কাছে যেতে বললে তাৎক্ষণিকভাবে ম্যানেজার অভিযোগকারীদের ৩শ’ টাকা ফেরত দিলেন।
টাকা ফেরত পেয়ে রেজোয়ান ও জনির মন্তব্য ‘এটা নিছক অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাকাতি’ করা ছাড়া আর কিছুই না। তারা দর্শনার্থীদের জিম্মি করে পকেট কাটছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৪