মহেশখালী, কক্সবাজার থেকে: 'ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি'
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য ক্ষুধাতুর মানুষের ক্ষুধার তাড়নাকে প্রতীকায়ন করেছেন তার এই পঙক্তির মাধ্যমে। মানুষের চিরায়ত ক্ষুধা প্রবৃত্তিতে পূর্ণিমার চাঁদ ঝলসানো রুটি হয়ে ধরা দিয়েছে তার কবিতায়।
মানুষ যেমন হন্যে হয়ে ওঠে ক্ষুধার যাতনায়, তেমনি তীব্র ক্ষুধায় অবলা প্রাণীকূলও হয়ে যায় পাগলপ্রায়।
এরকমই এক দৃশ্য চোখে পড়লো মহেশখালীর আদিনাথ মন্দিরের ঘাটে।
আদিনাথ মন্দিরের পাড় থেকে প্রায় ৫০ গজ দূরেই বনবিভাগের তৈরি ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। মহেশখালীর কোল জুড়ে সহসাই চোখে পড়বে এই লবণাক্ত পানির বনভূমি।
আদিনাথ মন্দিরের পাশে নোনাপানির বনভূমিটি প্রস্থে প্রায় ২শ' আড়াইশ' গজ হবে। এখানেই চোখে পড়ে সেই অদ্ভুত চিরায়ত ক্ষুধার জ্বালাতনের চিত্র।
জোয়ারের পানিতে তখন বনভূমিটির ডুবুডুবু দশা। এরই মাঝে দেখি, একটি গাভী সেই পানি সাঁতরে বনভূমির দিকে যাচ্ছে। হাঁপাতে হাঁপাতে ইতোমধ্যে পাড়ি দিয়েছে ৬০-৭০ গজেরও বেশি।
পেছনে দাঁড়িয়ে গরু-মালিক হাঁক দিয়ে ফেরানোর চেষ্টা করছে। তবে একরোখা গাভীটি সাঁতরেই চলেছে কোনোকিছু কর্ণপাত না করে।
অবাক হয়ে গরু মালিকের কাছে জানতে চাইলাম- গরুটা সাঁতরাচ্ছে কেন, কোথায় যাচ্ছে? তিনি জানালেন- জঙ্গলের মাঝে যাচ্ছে, গাছের পাতা খেতে। ক্ষুধায় পাগল হয়ে গেছে গাভীটা!
এরপর আদিনাথ মন্দির ও পাহাড়ে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক বেড়িয়ে ফেরার পথে দেখি, ডুবে থাকা বনভূমি পানির তল থেকে জেগে উঠেছে আবার। ভাটার টানে জঙ্গলটাকে ডুবিয়ে দেওয়া জলরাশি কোথায় যেন হারিয়ে গেছে!
আর কি অদ্ভুত! সেই গাভীটি বনভূমির মাঝে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে চিবিয়ে চলেছে। তবে এখন আর পাতা নয়, সদ্য জেগে ওঠা সবুজ ঘাস তার আহার্য।
এবার তার চোখে নেই ক্লান্তির কোনো ছাপ। ক্ষুধা নিবারণের তৃপ্তি ফুটে উঠেছে গাভীটির চোখেমুখে!
** অটল পাহাড়ের বুকে উদ্দাম সাগর
** শারদ মেঘের দেশে, পাখির ডানায় ভেসে
** গরম গরম ফিশ ফ্রাই
** মহাপতঙ্গের পেটে একঘণ্টা!
** রিজেন্টে ফ্রি কক্সবাজার দর্শন
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৪