ঢাকা: নীল আকাশের কথা শুনেছেন, কিন্তু নীল জল, নীল কষ্ট- নীল বরফের দেশের কথা কি শুনেছেন? বেশ, না শুনে থাকলে আপনাকে তার গল্প শোনাতে পারি!
এক যে ছিল নীল বরফের দেশ। নাম তার চিলি।
সব থেকে ভালো হয়, যদি একটা সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। তাহলেই ভালোভাবে দেখা মিলবে নীল বরফের হৃদ, সাথে ধুলো ওড়া পথ আর পাহাড়ের ডাক। যদি আরও রোমাঞ্চ চান, দেরি না করে বেরিয়ে পড়ুন ক্যারেটেরা অস্ট্রালের যেকোনো প্রান্ত ধরে।
অনিঃশেষ নির্জন রাস্তা, দু’ধারে গা ছমছমে বন, কখনো গ্রাম বা কখনোও বসন্তের উষ্ণতায় কোথায় যে হারিয়ে যাবেন, টেরও পাবেন না। যত যাবেন মনে হবে, মিলিয়ে যাচ্ছে ফেরার ইচ্ছে। পিঠে তাবু ঝুলিয়ে নিতে ভুলবেন না। সেইসাথে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেওয়ার কথা বলে না দিলেও চলবে। দিনে চলবে সাইকেল ভ্রমণ আর যেখানে রাত সেখানে কাত।
বলে রাখা ভালো, ক্যারেটেরা অস্ট্রাল মূল চিলি থেকে বেশ দূরে, বিচ্ছিন্নই বলা চলে। এটাই তো মজা। রাস্তাটি তৈরি হওয়ার আগে বিস্তৃর্ণ এ অঞ্চলটি পাতাগোনিয়ার অংশ ছিল। প্রতিবেশী দেশ আর্জেন্টিনা ভ্রমণেই বেশি ব্যবহার হতো পথটি। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে ক্যারেটেরা অস্ট্রালের বেশ ভারিক্কি পরিচিতি রয়েছে।
তিন থেকে চার দিনের ভ্রমণেই ঘোরা হয়ে যাবে ক্যারেটেরা অস্ট্রাল। দক্ষিণ দিক বরাবর যেতে থাকলে একে একে পড়বে ভালডিভিয়ান রেইনফরেস্ট, ম্যাগেনিক ফরেস্ট আর অ্যান্টার্কটিক বিচ। একেবারের দক্ষিণাঞ্চলের শেষ দিকে পাতাগোনিয়ার বিস্তৃত উপত্যকা ও বরফের পাহাড়।
বলতে পারেন, সবই বোঝা গেল, তা শুরু করবো কোথা থেকে! দেশটির দুই জাতীয় পার্ক হর্নোপাইরেন ও পার্ক ন্যাসিওনাল কুয়েলাতের পাশ দিয়ে অনেকগুলো রাস্তা গেছে ক্যারেটেরা অস্ট্রাল অভিমুখে। শুরুতে রাস্তার দু’ধারে দেখা মিলবে বেশকিছু নীল জলের হৃদ। তাতে খেলছে হামিংবার্ড আর আমুদে ডলফিন।
তবে যত দক্ষিণ দিক ধরে সামনে এগোবেন, হিমশীতল বাতাস আপনাকে ততই পেয়ে বসবে। এর আগে পেয়েছেন নীল জলের হৃদ, এবার মিলবে নদী। মন খারাপের কিছু নেই, এখানেও হৃদ পাবেন। পরিচিত নামের মধ্যে আছে লাগো জেনারেল কারেরা।
নদীগুলো মিলেছে দক্ষিণ পাতাগোনিয়ার বরফ অঞ্চলে। কোথায় বলুন তো, পৃথিবীর সবচেয়ে তীব্র বরফাঞ্চল অ্যান্টার্কটিকায়!
আসল কথা তো বলাই হয়নি! যার লোভে আপনাকে এতদূর টেনে আনা। হ্যাঁ, নীল বরফের দেশ। একটু আগে বললাম না, দক্ষিণ পাতাগোনিয়ার বরফ অঞ্চলের নদী আর হ্রদের কথা, এখানেই আপনার নীল বরফের দেশ!
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৪