গোয়ার রাজধানী পানাজি একাধারে আধুনিক ও ঐতিহাসিক শহর। গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্রও।
১৫৪১ সালে তৈরি এই চার্চ। এখান থেকে সামান্য দূরে পানাজির জামা মসজিদ।
আদিল শাহের গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ ১৫১০ সালে পর্তুগিজদের দখলে আসে। ১৯১৮ অবধি এখানে গোয়ার ভাইসরয়রা বাস করতেন। বর্তমানে এটি গোয়া সেক্রেটারিয়েট। সাধারণের এখানে প্রবেশ নিষেধ।
এর পশ্চিমেই আধুনিক হিপনোটিজমের জনক আবে ফারিয়ার বিখ্যাত মূর্তি। সম্ভব হলে পানাজির সেন্ট্রাল লাইব্রেরির প্রবেশপথের সুদৃশ্য হলটি দেখে নেবেন। নীল টালিতে চিত্রিত হয়েছে পর্তুগালের বিখ্যাত কবির লেখা অনুসারে ভাস্কো-ডা-গামার জীবনকাহিনি। গোয়া স্টেট মিউজিয়ামটিও দেখে নেওয়া যায়।
মিরামার বিচের আসল নাম গ্যাসপারডিয়াম। মিরামার বিচ থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে ডোনা পাওলা। স্থানীয় প্রেমকাহিনির নায়িকা ডোনা পাওলা। আসল আকর্ষণ মান্ডবী ও জুয়ারি নদীর খাঁড়িকে ভাগ করা টিলাটি। স্যুভেনির স্টল ও খাবার দোকানে জমজমাট ডোনা পাওলা এলাকা। টিলার ওপর থেকে সমুদ্রের দৃশ্য খুবই সুন্দর।
পানাজি থেকে ঘুরে নিন কালাঙ্গুটে বিচ। গোয়া পর্যটনের হোটেল কালাঙ্গুটে বিচ রেসিডেন্সি সবচেয়ে ভালো, একদম বিচের ওপর। দোকান ও রেস্টুরেন্টের ভিড় ঠেলে একফালি রাস্তা গিয়েছে বিচের ধারে। বিচের ওপরেও প্রচুর দোকান। ঘোড়ার গাড়ি, উটের পিঠে চড়া থেকে ওয়াটার স্কুটার, ব্যানানা বোট, এমনকি প্যারাসেলিংয়ের ব্যবস্থাও আছে এখানে। আর সুমদ্রস্নান তো আছেই। এখানকার ছোট-বড় রেস্টুরেন্টে গোয়ার নিজস্ব খাবারের স্বাদ অবশ্যই নেবেন।
একটা কথা মনে রাখা ভালো, ইদানীং বেশ কিছু গোয়ার হোটেল তাদের এজেন্টদের পাঠায় টাইম-শেয়ার বিক্রি করার জন্য। এই এজেন্টরা ভ্রমণার্থীদের বিনামূল্যে লাঞ্চ বা ডিনার, গিফট কুপন ইত্যাদির লোভ দেখিয়ে হোটেলে নিয়ে যায়। তারপর টাইম-শেয়ার কেনার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু যদি আপনি রাজি না হন, তখন গালাগাল দিতে বা খারাপ ব্যবহার করতে পিছপা হয় না। তাই যতই লোভনীয় অফার থাক না কেন, এদের এড়িয়ে চলাই ভালো।
কান্ডোলিম সৈকত
কালাঙ্গুটে বিচের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে রয়েছে কান্ডোলিম বিচ। নির্জন নিরিবিলি সাগরবেলা। পাশেই কালাঙ্গুটে বিচ পর্যটকদের মক্কা হলেও কান্ডোলিম বিচ এখনো তেমন প্রচার পায়নি। এই বিচকে বলা হয় কোস্টাল প্যারাডাইস। এখান থেকে সুন্দর সূর্যাস্ত দেখা যায়। তবে ধীরে ধীরে বিদেশিদের আনাগোনা বাড়ছে এখানে। তাঁরা সানবাথ নিতে আসছেন।
এখানে ফেনি চেখে দেখতে পারেন। ফেনি গোয়ার নিজস্ব পানীয়। কান্ডোলিম বিচে জলক্রীড়ার ব্যবস্থা আছে। করা যায় প্যারাসেলিং এবং ডলফিন সাইটিং ট্যুর। কান্ডোলিমে শুধু সৈকত দর্শন না করে দেখে আসা যায় গ্রাম্য কান্ডোলিমের রমণীয় রূপ।
তেরাখোল
তেরাখোল একটি নদী এবং দুর্গের নাম। তেরাখোল নদী সীমানা টেনেছে গোয়া এবং মহারাষ্ট্রের মধ্যে। দুর্গের ওপর থেকে নীল সাগরের মনোরম শোভা দেখতে বেশ লাগে। এখানে তেরাখোল নদী এসে মিশেছে আরব সাগরের বুকে। তেরাখোল দুর্গটির অবস্থান একদম নদীর ধারে। সতেরো শতকে সাওন্তবাড়ির রাজা খেম সাওন্ত ভোঁসলে এই দুর্গটি তৈরি করেন। পরবর্তীকালে মারাঠাদের দখলে যায় এই দুর্গ। ঐতিহাসিক তেরাখোল দুর্গের একদিকে সবুজে ঘেরা সহ্যাদ্রি পাহাড়, অপরদিকে সাগর ও নদীর বন্ধন।
প্রিয় পাঠক, ভ্রমণ যাদের নেশা, বেড়ানোর সুযোগ এলে যারা উড়িয়ে দেন সব বাধা, কাজের অংশ হিসেবে যারা ভ্রমণ করেন কিংবা যাদের কালেভদ্রে সুযোগ হয় ভ্রমণের তারা সবাই হতে পারেন ট্রাভেলার্স নোটবুক’র লেখক। আপনার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন বাংলানিউজের পাঠকদের সঙ্গে।
আর একটা কথা লেখার সঙ্গে ছবি পাঠাতে ভুলবেনই না, সেই সঙ্গে বাতলে দিন সেখানে যাওয়ার পথঘাটের বিবরণও।
প্রিয় পাঠক, আপনার ভ্রমণ আনন্দ বিশ্বজুড়ে বাঙালির কাছে ছড়িয়ে দিতে আমাদের ই-মেইল করুন-
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৪