বান্দরবান থেকে ফিরে: আজ ট্রেকের শেষ দিন। থুইসা পাড়া থেকে বেরুতে বেরুতে বেশ দেরি হয়ে গেছে।
ঝলমলে সকালে পাড়া থেকে পাঁচ মিনিট হেঁটে পৌঁছে গেলাম জিনা পাড়া। সেখানে না দাঁড়িয়ে সোজা হেটে নেমে এলাম রেমাক্রিতে। গতকালের মতোই একবার রেমাক্রির এপাড় ওপাড় করছি। এখানে নির্দিষ্ট কোনো রাস্তা নেই। তাই যে দিকে সুবিধা হচ্ছে সেদিকেই যেতে হচ্ছে। এদিকে আবার রেমাক্রির স্রোতও বেশি। প্রত্যেকটা জায়গাতেই বেশ কসরত করতে হচ্ছিলো।
শরতের ঝলমলে আকাশের নীল মিশেছে রেমাক্রির জলে। আমরা বিদেশি ভূ-স্বর্গের গাল গল্পের কথা শুনি। দেখি স্রোতস্বীনি পাহাড়ি নদী, বন আর পাহাড়ের মেলবন্ধনের অপার্থিব সব দৃশ্য। এখন মনে হচ্ছে আমি সেই ভাগ্যবান যে নিজ দেশেই ভূ-স্বর্গের দেখা পেয়েছি।
থুইসা পাড়া থেকে আড়াই ঘণ্টার ট্রেকের পর অবশেষে শোনা গেলো নাফাখুমের গর্জন। আমরা পেছন থেকে আসছি। পা টিপে টিপে সেই সৌন্দর্যের আধারের সামনে এসে দাঁড়ালাম। কবির কলম এখানে থামতে বাধ্য। আমি নিশ্চিত এখানে এসে কবি থামতে বাধ্য হবেনই। মহাবিশ্বের সব প্রাণশক্তি ভর করেছে ঝরনাধারায়। অবিরত এর গর্জন শুনিয়ে যাচ্ছে জীবনের গান। আমরা সেই জীবন সুধা সর্বোচ্চ মাত্রায়ই পান করলাম।
ঠা ঠা রোদে নাফাখুমের সামনে বসে ছিলাম ৪৫ মিনিট। উঠতে যাবো তখন দেখা হলো ঢাকা থেকে আসা একদল পর্যটকের সঙ্গে। থানচি থেকে গত কয়েকদিন পর্যটক আসা বন্ধ ছিলো। ঈদের পর তারাই প্রথম দল হিসেবে নাফাখুমে এলো। কুশল বিনিময় হলো। এবার তারা নাফাখুমের রূপ প্রাণভরে দেখুক। আমাকে যেতেই হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৫
এএ