ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

মেঘলা আকাশ তো পর্যটকদের উচ্ছ্বাস কম নেপালে

তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৭
মেঘলা আকাশ তো পর্যটকদের উচ্ছ্বাস কম নেপালে নেপালের মেঘলা আকাশ/ছবি: সোহেল সারওয়ার-বাংলানিউজ

নেপাল থেকে: পটে আঁকা ছবির মতো অনিন্দ্য সুন্দর শহর পোখারা। মূলত সারাংকোটে সূর্যোদয় আর অন্নপূর্ণা ট্রেকিং পয়েন্ট দেখতেই আসেন পর্যটকেরা। হিমালয়ের পাদদেশে পাহাড়চূড়ায় রানির মুকুটের মতো চিকচিক করা সূর্যোদয়। কিন্তু আকাশ মেঘলা তো পর্যটকদের উচ্ছ্বাসে পড়ে ভাটা।

শনিবার (১১ মার্চ) সারাংকোটের চূড়ায় কথা হয় সিলেট থেকে আসা পর্যটক আবুল হাসানের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এখানকার সবকিছু নির্ভর করছে আবহাওয়ার মর্জির ওপর।

কথাটা অন্যভাবে বলা যায়, ভাগ্য ভালো তো সূর্যমামা আপনাকে দর্শন দেবে।   আমরা সূর্যোদয় দেখতে পারিনি মেঘের ভেলার কারণে। তারপরও যা দেখেছি তাতেই আমি মুগ্ধ। বিশেষ করে পর্বতচূড়ায় 'হীরের দ্যুতি'।

পর্যটক বাসের চালক রাম ভক্ত নুপানি (৪৭) বাংলানিউজকে বলেন, ১৫ বছর নেপালে গাড়ি চালাই। আবহাওয়া খারাপ তো পর্যটকদের মুখের হাসি উধাও। কিন্তু চোখের তারায় খেলা করে আলোর নাচন। তা কুয়াশার চাদরে ঢাকা হোক, কিংবা বৃষ্টিস্নাত সকালই হোক। একজীবনে নেপাল প্রসঙ্গে বিদেশিদের মুখে সবচেয়ে বেশি শুনেছি 'বিউটিফুল' শব্দটি।

সূর্যোদয়ের ছবি তোলায় ব্যস্ত পর্যটকরা/ছবি: সোহেল সারওয়ার-বাংলানিউজতিনি জানালেন সারেংকোট পোখারা লেক সাইট থেকে ২৫ কিলোমিটার জার্নি। ৪৫ মিনিট। তবে পোখারার মন ভালো করে দেওয়ার মতো সব প্রাকৃতিক বিউটি উপভোগ করতে হলে ২-৩ রাত থাকা উচিত।

শনিবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের অজিত পালেরর সঙ্গে কথা হলো পোখারা টু কাঠমান্ডু রুটের বেনি ঘাট এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে। সেখানে পর্যটকদের গাড়ি যাত্রাবিরতি দিয়ে থাকে।

তার কণ্ঠেও কিছুটা অনুযোগ আবহাওয়া নিয়ে। বললেন, হিমালয় কন্যার দেশে আকাশের মর্জি বোঝা দায়। আজ পর্বতে সূর্যোদয় দেখবো বলে রাত জেগেছিলাম। কিন্তু আশা পুরলো না, আবার আসতে হবে। এক্ষেত্রে ভিসা পেতে যেহেতু সমস্যা নেই আসতে পারবো। বারবার আসবো।

নেপালের একজন পর্যটক/ছবি: সোহেল সারওয়ার-বাংলানিউজতিনি বলেন, সূর্যোদয় দেখতে ঘুম থেকে উঠতে হয় ভোর পাঁচটায়। তারপর ট্যুরিস্ট বাসে ছুটতে হবে। সমতল পেরিয়ে যখন সর্পিল বাঁক ভেঙে গাড়ি পাহাড়ে উঠতে শুরু করবে তখন নিচের বাসাবাড়ি, হোটেল মোটেলের বাতিগুলো মনে হবে জোনাকির আলো মিটিমিটি হাসছে।

লেকসাইটের হোটেল হোয়াইট পার্লের পরিচালক (অপারেশন) শংকর টেন্ডন বাংলানিউজকে বলেন, শনিবার সকালে পোখারায় তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারেংকোট আর অন্নপূর্ণায় আরও কম। শুক্রবার বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বৃষ্টি ছিল। স্বাভাবিকভাবে আবহাওয়ার মন খারাপ। সঙ্গে আমাদেরও। কারণটা আমাদের ওয়াই পাসওয়ার্ড বললেই বুঝতে পারবেন। সেটি হলো 'গেস্ট ইজ গড'।

তিনি জানান, বছরের ১২ মাসই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটক ও পর্বতারোহীরা নেপাল আসেন। তবে মার্চ-এপ্রিল এবং অক্টোবর-নভেম্বর প্রধান মৌসুম পর্যটন শিল্পের।

হোটেল বিজনেসের সঙ্গে জড়িত শিশির ভট্টরায় আরেকটু বুঝিয়ে বললেন, সাউথ ইস্ট এশিয়ানরা জুন-জুলাইতে নেপাল বেড়াতে আসেন। বাংলাদেশ ও ভারতের লোকজন মার্চ-এপ্রিলে আসেন। যখন ওই দুই দেশে বেশি গরম পড়ে তখনেও অনেকে নেপাল ছুটে আসেন স্বস্তির জন্য। পাশ্চাত্যের লোকজন অক্টোবর-এপ্রিল নেপাল বেশি আসেন।

তিনি বলেন, নেপাল পর্যটনবান্ধব দেশ। এখানে তাদের অবাধ চলাফেরা, পানাহারের অবারিত সুযোগ যেমন আছে তেমনি কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। তবে নিরাপত্তার নামে হয়রানি করা হয় না। আবার স্থানীয়রা পর্যটকদের সেবায় যথেষ্ট আন্তরিক।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
টিসি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।