ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

ঐতিহ্যের ‘পেহেচানি’ হয়ে টিকে আছে টুপি

ইসমেত আরা, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৭
ঐতিহ্যের ‘পেহেচানি’ হয়ে টিকে আছে টুপি ঐতিহ্যবাহী টুপি পরিহিত এক নেপালি। ছবি: সোহেল সরওয়ার-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নেপাল থেকে ফিরে: শুরুতেই নেপালের ঐতিহ্যবাহী পোশাক সম্পর্কে গুগল কি বলছে তা জেনে নেওয়া যাক। উইকিপিডিয়া বলছে, নেপালের পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক দৌরা সুরুৱাল এবং নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক শাড়ি।  এর সঙ্গে আরও রয়েছে পুরুষদের জন্য কোট, টুপি, প্যান্ট ও নারীদের জন্য চোলো, মাচোরা।

তবে নেপাল ঘুরে ঐতিহ্যবাহী এসব পোশাকের দেখা মিললো না নেপালিদের পরনে।   তাদের পরনে দেখা গেছে পশ্চিমা দেশগুলোর জিন্স, টি-শার্ট, জ্যাকেট বা পূর্বের দেশগুলোর পাঞ্জাবি, সেলোয়ার, কামিজ, ওড়নার মতো পোশাক।



তবে যিনি যে পোশাকই গায়ে চাপান না কেন তার সঙ্গে মাথায় শোভা পাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী নেপালি টুপি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য পোশাক ‘জাদুঘরে’ গেলেও ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে এখনো টিকে আছে এই নেপালি টুপি।

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু, পর্যটন কেন্দ্র পোখারার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নেপালিদের মাথায় এই টুপির রাজত্ব।   ছেলে থেকে বুড়ো বিভিন্ন বয়সের মানুষ মাথায় পরে আছে নেপালি টুপি। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তা রাজা বা প্রজা যেই হোন না কেন, মাথায় টুপি ধারণের ক্ষেত্রে সবাই এক। যেন এই টুপিই সব ব্যবধান ঘুচিয়ে তাদের এক করেছে। সবার মাথায় নেপালি টুপি।  ছবি: বাংলানিউজ

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নেপালের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের মধ্যে সরকারি অফিসগুলোতে দৌরা সুরুৱাল পরার বিধান রয়েছে। এর সঙ্গে গায়ে থাকে কোট ও মাথায় নেপালি টুপি। এর বাইরে বেসরকারি অফিস বা সাধারণের মধ্যে এই পোশাকের তেমন একটা প্রচলন নেই।   তবে সবার মাথাতেই থাকে নেপালি টুপি। কেননা ঐতিহ্যের জানান দিতে তাদের এটা পরতে হয়।

পোখারার লুম্বিনী এলাকার বাসিন্দা রামভক্ত নিউপানি বাংলানিউজকে বলেন, এই টুপি হল নেপালি পেহেচানি (নিশান)।   এটা আমাদের ঐতিহ্য।   আমি নেপালি হিসেবে নিজেকে বিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে পারি এই টুপির মাধ্যমে।  

তিনি বলেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের মধ্যে টুপি সবার মাথায় দেখা গেলেও অন্য পোশাকগুলো বর্তমানে তেমন একটা দেখা যায় না।   তবে বিয়ে-শাড়ি, উৎসবে-আমেজে ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেই সবাই সামিল হয়।   এছাড়া সরকারি দপ্তরগুলোতেও ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরতে হয়। কিন্তু দৈনন্দিক জীবনে টুপি আমাদের নিত্যসঙ্গী। ঐতিহ্যবাহী টুপি পরিচিত নেপালিরা।  ছবি: বাংলানিউজ

নেপালের ত্রিভূবন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আমিরা শ্রেষ্ঠা বাংলানিউজকে বলেন, নেপালি মেয়েদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক শাড়ি, চোলো, মাচোরা হলেও উৎসব ছাড়া এগুলো আসলে তেমন একটা পরা হয় না। বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে আমাদের দৈনন্দিক পোশাকেও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।   আমাদের আগের জেনারেশন শাড়ির প্রচলনটা ধরে রাখলেও বর্তমানে তরুণীদের মধ্যে এ প্রবণতাটা কম। তবে পূজাপার্বণে ঐতিহ্যকে ধারণ করেই আমরা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে হাজির হই।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নারী ও পুরুষদের নেপালি পোশাক কিনতে পাওয়া যাবে ৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার রুপিতে। এছাড়া নেপালি টুপি পাওয়া যাবে ১০০ থেকে দেড় হাজার রুপির মধ্যে।   তাই নেপাল ভ্রমণে গেলে যে কেউ সংগ্রহ করতে পারেন এসব ঐতিহ্যবাহী পোশাক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৭
আইএসএ/টিসি/জেডএম

**নেপালি পণ্যে আকৃষ্ট পর্যটকরা

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।