ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

শত ব্যস্ততায় আতিথেয়তায় অনন্য চীনারা

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০১৮
শত ব্যস্ততায় আতিথেয়তায় অনন্য চীনারা জিলান সিটির বেইয়ান অ্যালাবেটেড সড়ক। ছবি: বাংলানিউজ

পূর্ব চীন (জিনান সিটি) থেকে: ইয়ে মিং শান হোটেলে প্রাতঃরাশ সেরে বেরিয়ে আসতেই দু’জন চীনা নাগরিক অভিবাদন জানাচ্ছেন। কারণ অজানা নয়, তারা নিতে এসেছেন তাদের কারখানায়। দিনশেষে আবার দিয়ে যাবে। ব্যবসার কাজে যারা চীনে আসেন তাদের এমন সম্মানই দেয় চীনারা। 

এ আতিথেয়তা ফাইভস্টার হোটেলের পিকআপ ও ড্রপআপের চেয়ে বেশি কিছু। কারণ এজন্য কেনো টাকা দিতে হয় না।

 ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরে ব্যবসা হোক বা না হোক। যন্ত্রাংশ  বা মেশিনারিজ দেখাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য  প্রয়োজনে ২০০ বা ২৫০ কিলোমিটার  ড্রাইভেও আপত্তি নেই তাদের।  

উল্টো কোথায় নামিয়ে দিতে হবে বা তা কতদূর সেটাও বিষয় নয়। আতিথেয়তার এই দিকটি খুবই মেনে চলছে চীনারা। সিজো, সিজুয়ান, জিলান সব শহরেই এটা দেখা গেলো!

রোববার (০৭ জানুয়ারি) পূর্ব চীনের উপকূলীয় শহর শানডং প্রদেশের জিলান সিটিতে আছি।  আগের রাতে সিজো থেকে ফিরে এখানে হোটেলে উঠেছি।  রাজধানী বেইজিং মাত্র  ১০০ কিলোমিটার  দূরত্বে। জিনান সিটির সড়কে সিগন্যাল।  ছবি: বাংলানিউজইয়ে মিং শান হোটেলের ৫ তলায় রুম। ভোরে ঘুম থেকে ওঠে জানালার পর্দা সরিয়ে দিলেই দেখা যায় বেইয়ান অ্যালাবেটেড সড়ক। সে সড়ক ধরে গেছে বিআরটি লাইন। এ বিআরটি লাইন চালু করতে চায় বাংলাদেশ। বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট নামের দ্রুত গতির বাস চলবে ঢাকায়।

গাজীপুর-এয়ারপোর্ট বিআরটি লাইনের কাজ চলছে। এখনও ছবি দিয়ে দেখানো হয় এটি। জিয়ানের এখানে  স্মার্টকার্ড ব্যবহার করে মানুষ বাসে উঠেছে-নামছে। দ্রুত বাসে যেতে এটি ব্যবহার করে যাতায়াতকারী।  

তবে আমার গণপরিবহনে ওঠার সুযোগ নেই। এখানকার যে যন্ত্রাংশ কারখানা ঘুরতে যাবো তারাই এসে গাড়ি নিয়ে হাজির।  গার্মেন্টস, হোটেল, প্রিন্ট প্যাকেজিংসহ নানা অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ তৈরির জন্য বিখ্যাত জিয়ান সিটি।  

আবহাওয়াগত দিক বিবেচনায় স্প্রিং সিটি নামেও পরিচিত শানডংয়ের মূল শহরটি।  জিনান সিটির হোটেল ইয়ে মিং শান।  ছবি: বাংলানিউজসারি সারি বৃক্ষরাজিতে ভরা হোয়াংহুর পাড়। সকালের দিকে এ বৃক্ষরাজি খসে পড়ে তুষার। পাতা ঝরে যৌবন হারানো গাছ। তবে নিচে বনসাইসহ অনেক বৃক্ষরাজিকে তুষার বরফ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।  পলিথিনের ভেতরে যে গাছ সেটি আর বোঝা যাচ্ছে না।  প্রায় ৩০ থেকে চল্লিশ মিনিট দূরত্বে হোয়াংহু নদী পেরিয়ে কারখানা এলাকা। একের পর এক মিল ইন্ড্রাট্রিজ। দুপুরে এসব ঘুরে দেখে ফিরেছি হোটেলে। বেলা গড়িয়ে  তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ায় একটুও তুষার নেই এখন।  

রাতে আবার ঝরে সকালে তুষার জমবে। শুভ্রতা গাছে গাছে ছড়িয়ে যাবে জিনান শহরে। তখন তার রূপে শুভ্রতার আচল পড়ে। তবে তুষারপাত সুজো বা সুজিয়ান সিটির মতো নয়। যেখানে প্রকাণ্ড বরফ জমে চারদিকে।  ব্যবসায়িক কাজে অতিথিদের আনা নেওয়া করে চীনা।  ছবি: বাংলানিউজউপকূলীয় জিনান ছাড়তে হবে রাত পোহালে। পরের গন্তব্য আবারও সাংহাই। গতি আর প্রযুক্তির এ শহরে যেতে হবে নতুন কিছু দেখতে।  

ব্যবসা সম্প্রসারণে মনোযোগী চীন তার ক্রেতাকে প্রাধান্য দেয় বেশি। যেমনটা শুরু করে আনা নেওয়ার মতো আন্তরিকতা দিয়ে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৮
এসএ/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।