এ আতিথেয়তা ফাইভস্টার হোটেলের পিকআপ ও ড্রপআপের চেয়ে বেশি কিছু। কারণ এজন্য কেনো টাকা দিতে হয় না।
উল্টো কোথায় নামিয়ে দিতে হবে বা তা কতদূর সেটাও বিষয় নয়। আতিথেয়তার এই দিকটি খুবই মেনে চলছে চীনারা। সিজো, সিজুয়ান, জিলান সব শহরেই এটা দেখা গেলো!
রোববার (০৭ জানুয়ারি) পূর্ব চীনের উপকূলীয় শহর শানডং প্রদেশের জিলান সিটিতে আছি। আগের রাতে সিজো থেকে ফিরে এখানে হোটেলে উঠেছি। রাজধানী বেইজিং মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরত্বে। ইয়ে মিং শান হোটেলের ৫ তলায় রুম। ভোরে ঘুম থেকে ওঠে জানালার পর্দা সরিয়ে দিলেই দেখা যায় বেইয়ান অ্যালাবেটেড সড়ক। সে সড়ক ধরে গেছে বিআরটি লাইন। এ বিআরটি লাইন চালু করতে চায় বাংলাদেশ। বাস র্যাপিড ট্রানজিট নামের দ্রুত গতির বাস চলবে ঢাকায়।
গাজীপুর-এয়ারপোর্ট বিআরটি লাইনের কাজ চলছে। এখনও ছবি দিয়ে দেখানো হয় এটি। জিয়ানের এখানে স্মার্টকার্ড ব্যবহার করে মানুষ বাসে উঠেছে-নামছে। দ্রুত বাসে যেতে এটি ব্যবহার করে যাতায়াতকারী।
তবে আমার গণপরিবহনে ওঠার সুযোগ নেই। এখানকার যে যন্ত্রাংশ কারখানা ঘুরতে যাবো তারাই এসে গাড়ি নিয়ে হাজির। গার্মেন্টস, হোটেল, প্রিন্ট প্যাকেজিংসহ নানা অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ তৈরির জন্য বিখ্যাত জিয়ান সিটি।
আবহাওয়াগত দিক বিবেচনায় স্প্রিং সিটি নামেও পরিচিত শানডংয়ের মূল শহরটি। সারি সারি বৃক্ষরাজিতে ভরা হোয়াংহুর পাড়। সকালের দিকে এ বৃক্ষরাজি খসে পড়ে তুষার। পাতা ঝরে যৌবন হারানো গাছ। তবে নিচে বনসাইসহ অনেক বৃক্ষরাজিকে তুষার বরফ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পলিথিনের ভেতরে যে গাছ সেটি আর বোঝা যাচ্ছে না। প্রায় ৩০ থেকে চল্লিশ মিনিট দূরত্বে হোয়াংহু নদী পেরিয়ে কারখানা এলাকা। একের পর এক মিল ইন্ড্রাট্রিজ। দুপুরে এসব ঘুরে দেখে ফিরেছি হোটেলে। বেলা গড়িয়ে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ায় একটুও তুষার নেই এখন।
রাতে আবার ঝরে সকালে তুষার জমবে। শুভ্রতা গাছে গাছে ছড়িয়ে যাবে জিনান শহরে। তখন তার রূপে শুভ্রতার আচল পড়ে। তবে তুষারপাত সুজো বা সুজিয়ান সিটির মতো নয়। যেখানে প্রকাণ্ড বরফ জমে চারদিকে। উপকূলীয় জিনান ছাড়তে হবে রাত পোহালে। পরের গন্তব্য আবারও সাংহাই। গতি আর প্রযুক্তির এ শহরে যেতে হবে নতুন কিছু দেখতে।
ব্যবসা সম্প্রসারণে মনোযোগী চীন তার ক্রেতাকে প্রাধান্য দেয় বেশি। যেমনটা শুরু করে আনা নেওয়ার মতো আন্তরিকতা দিয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৮
এসএ/এমএ