জি-৭ আউটরিচ সম্মেলন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সংগ্রহে ৮ জুন কানাডার টরন্টো হয়ে কুইবেক পৌঁছাই আমরা। জানি, কুইবেক থেকে নায়াগ্রা যাওয়ার সুযোগ হবে না।
নিউজ লেখা শেষ করে রাত ১টায় ঘুমিয়ে পড়লাম। আড়াইটা বা ৩টার দিকে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। অন্য রুমে থাকা সুমন ভাইকে ফোন দিলাম
-ভাই আমাদের নায়াগ্রা যাওয়া ঠিক আছে তো?
-সুমন ভাই বললেন, ওটা বাতিল হয়েছে।
বিধিবাম। ১০ জুন কুইবেক থেকে টরন্টোতে পৌঁছে সংবাদ সংগ্রহ শেষে নায়াগ্রা যাওয়ার সময় ছিলো না। ১১ জুন সকালে নায়াগ্রা যাওয়ার একটা পরিকল্পনা হয়, কিন্তু ফ্লাইট মিস করার শঙ্কায় সেটাও ভেস্তে যায়। মেনেই নিলাম এ যাত্রায় আর নায়াগ্রা দেখা হচ্ছে না।
আবার ঘুমিয়ে পড়লাম। রাত সাড়ে ৩টা বা পৌনে ৪টায় হঠাৎ সাইফুল্লাহ ভাইয়ের ফোন।
-কিরে নায়াগ্রায় যাবি না কি?
-বললাম কীভাবে?
-উনি বললেন ট্যাক্সিতে। রাজি হয়ে গেলাম।
এতো রাতে সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। অনেককে ফোন করে পাওয়া যায়নি। আবার অনেককে ফোন দেওয়া হয়নি।
কয়েক মিনিটের মধ্যে সবাই হোটেলের নিচে নামলাম। রাত সাড়ে ৪টার দিকে ছোট একটা ট্যাক্সিতে ঠাসাঠাসি করে বসে রওনা হলাম। আমাদের সঙ্গে যোগ দিলেন সালাউদ্দিন ভাই।
সকাল ৬টার পরে আমরা পৌঁছে গেলাম নায়াগ্রা জলপ্রপাতের কানাডা অংশে। সূর্যের নরম আলোয় চারদিক দারুণ লাগছিলো। ট্যাক্সি থেকে নামতেই কানে এলো বিপুল জলরাশির গর্জন। প্রতি সেকেন্ডে হাজার হাজার গ্যালন জল গড়িয়ে পড়ছে।
জলপ্রপাতের পাশে নায়াগ্রা নদীর তীর ধরে হাঁটা শুরু করলাম। দূর থেকে বিপুল জলরাশি জানান দিচ্ছে আরেকটু সামনেই জলপ্রপাত। গর্জন শুনে কয়েকশ মিটার সামনে এগুতেই চোখে পড়লো নায়াগ্রা জলপ্রপাত।
কয়েকশ মিটার ওপর থেকে গড়িয়ে পড়ছে বিশাল জলের ধারা। নিচে তৈরি হচ্ছে ফেনা, সৃষ্টি হচ্ছে জলরাশির ধোঁয়া।
যে যার মতো ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
কানাডা অংশ থেকে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের পুরোটা দেখা যায়। উপর থেকে নিচ অবধি। এখানে পুরো জলপ্রপাতকে ঘোড়ার ক্ষুরের মতো দেখায়।
সবাই দ্রুত ফেরার তাগাদা দিচ্ছি। দেরি করলেই ফ্লাইট মিস হয়ে যাবে।
একটু এগিয়েই আবার যে যার মতো ছবি তুলতে শুরু করলো। এভাবে কেটে গেলো ৪০/৫০ মিনিট। নায়াগ্রা জলপ্রপাতকে আরও কিছুক্ষণ দেখার ইচ্ছাটা দমন করে হোটেলে ফিরতে হলো। এর কিছুক্ষণ পর দেশের পথে রওনা হলাম সবাই।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৩ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৮
এমইউএম/এএইচ/আরআর