এবারের গন্তব্য লাদাখ, যার পরিকল্পনা চলছিল কয়েকমাস আগে থেকেই। কারণ লাদাখের প্রধান শহর লেহ-তে যেতে বাংলাদেশিদের কোনো পারমিট লাগে না।
পরিকল্পনা ছিল দিল্লি থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে চণ্ডিগড়, শ্রীনগর, কার্গিল, দ্রাস হয়ে লেহ-তে যাওয়ার তারপর লাদাখের সব স্পট ভালো করে দেখে মানালি হয়ে দিল্লি ফেরার। সেই মোতাবেক ইনার লাইন পারমিটের জন্য অ্যাপ্লাই করে বাংলাদেশ এবং ইন্ডিয়ার প্রভালশালী মহলের রেফারেন্স কাজে লাগিয়েও শেষ পর্যন্ত পারমিট ম্যানেজ করতে পারলাম না।
এদিকে আমার দিল্লির কিছু বন্ধু যারা আমার সঙ্গে এই ট্যুরে অংশগ্রহণ করবে তারা শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করলো কিন্তু ফলাফল জিরো। অথচ এই ট্যুরের উদ্যোক্তা ছিলাম। কি আর করা, প্ল্যান চেঞ্জ করে বাই এয়ারে শ্রীনগর চলে গেলাম, সঙ্গী দু’জন ভারতীয় বন্ধু। হোটেলে চেক ইন করে ফ্রেশ হয়ে ঘুরতে বের হয়ে গেলাম। যদিও আগেও শ্রীনগর এসেছি, তবুও এর সৌন্দর্য যতবার দেখি ততবারই মুগ্ধ হই। শহরের স্পটগুলো ঘুরে ডাল লেকে শিকারায় চড়ে বেশ খানিকক্ষণ সময় কাটালাম।
পরদিন শ্রীনগরে আমাদের সঙ্গে জয়েন করলো বাংলাদেশ থেকে আসা শ্রদ্ধেয় দুই বড় ভাই। শুরু হলো আমাদের মূল ভ্রমণ, সিদ্ধান্ত মোতাবেক একটি টয়োটা ইনোভা নিয়ে শুরু হলো আমাদের যাত্রা। এ এক অন্যরকম যাত্রা, জীবনে অনেক জায়গায় ঘুরতে গিয়েছি, অনেক লম্বা লম্বা রোড ট্রাভেল করেছি। কিন্তু এই যাত্রার কথা আমার সারাজীবন মনে থাকবে।
সবুজ পাহাড়, পাইন গাছের সারি, আপেল বাগান সরিষা ক্ষেত খরস্রোতা নদীকে পাশে রেখে আমরা এগিয়ে চলছিলাম। শহর ছাড়িয়ে বেশ খানিকটা যাওয়ার পর আমাদের প্রথম যাত্রাবিরতি হলো অ্যাপল ট্রি রেস্টুরেন্টে। রেস্টুরেন্টটির পাশ দিয়েই বয়ে গেছে নদী, চারিদিকে সবুজের সমারোহ আর সুউচ্চ পাহাড়ের সারি। সব মিলিয়ে অন্যরকম একটা পরিবেশে চা বিরতি নিয়ে আবার যাত্রা শুরু করে গিয়ে থামলাম সোনমার্গে। সোনামার্গের অবস্থান শ্রীনগর-লাদাখ মহাসড়কের পাশে। বিস্তীর্ণ সবুজ ঘাস, পাইন গাছ আর পাহাড় চূড়ায় সাদা বরফ যেন সোনামার্গকে দিয়েছে অন্যরকম সৌন্দর্য। শ্রীনগর থেকে উত্তর-পূর্বে প্রায় আড়াই-তিন ঘণ্টার পথ। সোনামার্গ বিখ্যাত থাজিওয়াজ হিমবাহের জন্য। ট্রেক করে অথবা ঘোড়ায় চড়ে হিমবাহে যাওয়া যায়। ঘোড়ায় চড়ে যেতে চাইলে ঘোড়ার মালিকের সঙ্গে দর কষাকষির করে নিতে ভুলবেন না।
সোনামার্গে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে যাত্রা শুরুর কিছু পর এলো জোজিলা পাস। এই জায়গার রাস্তা বেশ খারাপ এবং রাস্তা বেশ সরু হওয়ায় জ্যাম লেগেই থাকে। এই জায়গা অতিক্রম করার সময় অনেক নিচে দেখতে পেলাম অমরনাথ বেসক্যাম্প, যেখান থেকে হিন্দু তীর্থযাত্রীরা অমরনাথ ধাম এর জন্য যাত্রা শুরু করেন।
প্রতিবছর প্রায় ৩ লাখ হিন্দু তীর্থযাত্রী অমরনাথ মন্দির ভিজিট করেন। পাহাড়ি রাস্তা ধরে সামনে যতই এগোতে থাকলাম সবুজ ততই কমতে থাকলো, দৃষ্টিজুড়ে থাকলো শুধু ধূসর পাহাড় আর মাঝে মধ্যে তাদের বরফ ঢাকা চূড়া। এই পথে কিছুদূর পরপর আর্মি পোস্ট চোখে পৎবে। এভাবে চলতে চলতে দুপুর নাগাদ আমরা দ্রাস পৌঁছালাম, নেমেই বেশ ঠাণ্ডা হাওয়ার ধাক্কা খেলাম তবে যতটা আশা করেছিলাম ততটা নয়।
দ্রাস হচ্ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় শীতলতম স্থান (১০৫৯৪ ফুট) যা শীতকালে পুরোপুরি বরফে ঢেকে যায় এবং তাপমাত্রা নেমে যায় -৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত। কারগিল যুদ্ধের সময় দ্রাসের বেশ কিছু পাহাড়চূড়া পাকিস্তানি বাহিনী দখল করে নিয়েছিল। পরবর্তীতে ভারতীয় স্থলসেনা ও বিমান বাহিনী মিলিতভাবে তীব্র লড়াই করে পাকিস্তানিদের হটিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলটি পুনরায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনেছিল।
দ্রাসে ভালোমানের তেমন কোনো হোটেল পেলাম না। অতশত ভাবলাম না যেমনটা পেলাম সেটাতেই দুপুরের খাবার খেয়ে ছুটলাম কারগিলের উদ্দেশ্যে। জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের একটি জেলা শহর হলো কার্গিল যা শ্রীনগর থেকে ২০৫ কিমি দূরে অবস্থিত। তার পাশ দিয়েই বয়ে চলে গেছে সুরু নদী এবং তার পাশেই উত্তর কাশ্মীরের লাইন অফ কন্ট্রোল অবস্থিত। বিশ্বের উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্রটি এখানেই অবস্থিত।
কারগিল খুব একটা বড় শহর নয়, যাইহোক রাতটা কারগিলে কাটিয়ে পরদিন সকালে ছুটলাম লেহ’র উদ্দেশ্যে। লেহ পৌঁছানোর জন্য সারাদিনে ২৩০ কিলোমিটার সড়কপথ পাড়ি দিতে হবে। সকালের সোনালি রোদে কারগিল শহর ও তার চারপাশের পাহাড় চূড়াগুলি তখন ঝলসাচ্ছে, কয়েকটিকে মনে হলো কেউ যেন সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিয়েছে। কারগিল শহর ছেড়ে আসার পর সবুজ রংটা প্রায় হারিয়েই গেলো। চারিদিকে কেবল রংবেরঙের পাহাড় আর মাথায় উপর চোখ জুড়ানো ঘন নীল রং।
কারগিল থেকে দুইভাবে লেহ যাওয়া যায়, আমাদের প্ল্যান ছিল মূল বেক, লামাউরু এবং নিমো হয়ে যাওয়ার। তাই আমরা সে পথেই যাত্রা করলাম। কিছুদূর যাওয়ার পর মূলবেক এরিয়ায় এসে পৌঁছালাম। ওয়ালা নদীর ধারে একফালি সবুজের সমারোহ। মূলবেক ছাড়িয়ে আর বেশ কিছুদূর যাওয়ার পর নামিক-লা (১২৫০০ ফুট) ভিউ পয়েন্টে গাড়ি দাঁড় করালাম, ফটোসেশন সেরে আবার যাত্রা শুরু করলাম।
এরপর লামাউরুতে একটু হল্ট নিলাম, খোলা রেস্টুরেন্টের ছাদে গরম গরম মোমো আর চা খেতে খেতে লামাউরু মনেস্ট্রি আর মুনল্যান্ডের বিচিত্র পাথরগুলো দেখতে থাকলাম। পাথরের বিচিত্র গড়ন আর রং-বিন্যাসের জন্য-ই ওই যায়গাটাকে মুনল্যান্ড বলা হয়। পেটে দানাপানি শেষে গাড়ির চাকা আবার চলতে শুরু করলো। এবারে শ্রীনগর-লেহ সড়ক পথের সর্বোচ্চ স্থান ফোতু-লা’তে (১৩৪৩২ ফুট) দাঁড়ালাম এবং যথারীতি ফটোশেসন শেষে শুরু হলো যাত্রা। এরপর নিমু পেরিয়ে আরও ৩০ কিমি গিয়ে একটি স্থান এলো যার নাম সঙ্গম। এখানেই ঝাসকর নদ ও সিন্ধু নদ মিলে মিশে একটি ধারায় পরিণত হয়েছে। এরপর ম্যাগনেটিক ও পাথ্থর সাহিব গুরুদোয়ারা পেরিয়ে বিকেল নাগাদ লেহ শহরে পৌঁছলাম।
যেমনটা ধারণা করে গিয়েছিলাম তারথেকেও বেশি গরম লেহ শহরে। যেখানে জুন মাসে প্রায় ৮টার দিকে সন্ধ্যা আর ভোর হয় পৌনে ৫টার দিকে। যাইহোক হোটেলে চেক করে ফ্রেশ হয়ে বের হলাম পরবর্তী দিনের জন্য ভাড়ার মোটরসাইকেল ঠিক করতে। একেবারে নতুন ১৮ দিন বয়সী একটা মোটরসাইকেল ভাড়া করে রেখে হোটেলে ফিরে ডিনার করে ঘুমুতে চলে গেলাম। লেহ শহরের উচ্চতা প্রায় ১১৫০০ ফুটের কাছাকাছি। সিন্ধু তীরের এই শহরের ইতিহাস অতি প্রাচীন।
বহু শতাব্দী ধরে পূর্বে তিব্বত ও চীন এবং পশ্চিমে কাশ্মীর ও ভারতের অন্য অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ ও ব্যবসার মাধ্যম হিসেবে লেহ শহর পরিচিত। অতীতকাল থেকেই এ স্থানের ওপর দিয়ে পশমিনা, কাশ্মীরি উল, চরস, তুঁত প্রভৃতি জিনিসের ব্যবসা চলতো। লেহর বাতাসে অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে, তাই খুব জরুরি এখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া। অনেকেই এখানে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথাসহ অন্য হাই অল্টিচুট সিকনেস এখানে খুবই কমন ব্যাপার সমতলে থাকা লোকদের জন্য। কিছুটা ধীরে চললে শ্বাসকষ্ট এড়ানো যায় এবং প্রয়োজনে ডায়ামক্স ট্যাবলেট বেশ কাজ দেয়।
পরদিন সকালে রেন্টেড মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পরলাম লেহ শহর দেখতে। হোটেলের অদূরের পেট্রোল পাম্প থেকে পর্যাপ্ত তেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম, প্রথম গন্তব্য শ্যে প্যালেস। মানালি-লেহ জাতীয় সড়ক ধরে লেহ থেকে শ্যে প্যালেসের দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। ১৬৫৫ খ্রিস্টাব্দে পাহাড়ের ওপর তৈরি গুম্ফা ও প্রাসাদের ভগ্নাবশেষ এখন প্রায় অনেকটাই সংস্কার করা হয়েছে। বাইক পার্ক করে রেখে বড় সিঁড়ি বেয়ে গেলাম প্যালেসের ভেতরে। ধ্বংসপ্রাপ্ত এই প্রাসাদের ভেতরের ঘেরা বারান্দা থেকে নিচের পথঘাট, জমি, উপত্যকার দৃশ্য ও আশপাশের পাহাড়ের দৃশ্য মনে রাখার মতো।
শ্যে প্যালেস থেকে আরও কিছুদূর দূরে থিকসে গুম্ফা। পাহাড় চূড়ায় সুন্দর ও বিস্তৃত এই গুম্ফাটিকে দেখা যায় পৌঁছাবার বেশ খানিকটা আগে থেকেই। একটি ছোট পাথুরে পাহাড়ের ওপর ধাপে ধাপে ঘর-বাড়ি দিয়ে সাজানো অদ্ভুত সুন্দর এর দৃশ্য। এই এলাকার লোকালয়ই গড়ে উঠেছে ছোট পাহাড়টি ঘিরে। একেবারে উপরে রয়েছে ত্রিস্তরবিশিষ্ট গুম্ফা, যেখানে রয়েছে প্রাচীন মন্দির, প্রার্থনাকক্ষ ও লামাদের আবাসস্থল। থিকসে প্যালেস থেকে ফেরার পথে ঢুঁ মারলাম র্যাঞ্চোর স্কুলে, থ্রি ইডিয়টস সিনেমার কল্যাণে বলিউড সিনেমার দর্শকদের মাঝে ব্যাপক পরিচিতি পাওয়া এই স্কুলটি এখন একটি জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট। স্কুল কতৃপক্ষ রীতিমতো ভিজিটর সেন্টার স্থাপন করে দফায় দফায় নির্দিষ্ট বিরতিতে টুরিস্টদের ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়। পুরো স্কুলটি ঘুরে দেখার প্রয়োজন অনুভব না করায় ভিতরে আর ঢুকলাম না, ভিজিটর সেন্টার ও র্যাঞ্চো ক্যাফে দেখেই চলে আসলাম।
এবার চললাম লেহ শহরে শান্তিস্তূপা আর লেহ প্যালেস দেখার উদ্দেশ্যে। শহরকে পাশ কাটিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে সোজা উঠে গেলাম সান্তিস্তূপার গেটে অবশ্য আরেকটা পথ দিয়ে বেশখানিকটা সিঁড়ি ভেঙেও যাওয়া যায়। সান্তিস্তূপা থেকে মোটামুটি লেহ শহরের পুরোটাই দেখা যায়। ক্ষুধায় পেট চো চো করায় আর ট্যুরমেটদের এনার্জি না থাকায় সান্তিস্তূপা থেকেই লেহ প্যালেহ চোখের দেখা দেখে চললাম লাঞ্চ করতে। লাঞ্চ সেরে চললাম পাথ্থর সাহিব গুরুদোয়ারার দিকে। একজন ট্যুরমেটের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারনে যেতেই হলো।
কথিত আছে, গুরু নানক এখানে এসে ধ্যানে বসেছিলেন কোনোও এক দৈত্যের সেটা অপছন্দ হয়েছিল। পাহাড়ের ওপর থেকে এক বিরাট পাথর গড়িয়ে পিষে মারতে চেয়েছিল নানককে। কিন্তু নানকের স্পর্শে পাথরটি মোমের মতো গলে যায়। গুরু নানকের অবয়ব, স্পষ্ট ছাপ দেখা যায় সেই শিলা খণ্ডে। পরবর্তীতে কোনো এক সময়ে পাথরটি উদ্ধার করে প্রতিষ্ঠিত হয় পাথ্থর সাহিব গুরুদ্বারা যার রক্ষণাবেক্ষণে রয়েছে ভারতীয় সেনারা। গুরুদুয়ারা থেকে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো, মোটরসাইকেল জমা দিয়ে হোটেলে চলে এলাম। ফ্রেশ হয়ে ডিনার সেরে ঘুমুতে গেলাম।
পরদিন বেরহলাম শহর দেখতে। লেহ শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান হলো মেইন বাজার, যাকে বলা হয় লেহ শহরের প্রাণ এবং পর্যটকদের প্রধান সমাগমস্থল। মেইন বাজারের কাছেই পাহাড়ের উপরে লেহ প্রাসাদ। লেহ বৌদ্ধ প্রধান এলাকা হলেও এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলিমও বাস করে। মেইন বাজারের মধ্যেই রয়েছে বেশ বড় একটি মসজিদ। মেইন বাজার এবং আশপাশের এলাকা সবসময়ই সরগরম থাকে টুরিস্টদের কারণে। নানা দোকানপাট, শপিং সেন্টার, সাইবার কাফে, পার্লার, জেনারেল স্টোরস, বেশির ভাগ ব্যাঙ্ক এবং এটিএম সবই কি নেই এইখানে।
তিব্বতীয় শরণার্থীদের পরিচালিত মার্কেটগুলোর কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয় যেখানে পাবেন নানা রকমের গহনা ও অন্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র। মেইন বাজার এলাকায় একটু ঘুরে চলে গেলাম লেহ ট্যুরিস্ট সেন্টারে যেখানে অপেক্ষা করছে দিল্লির বাইকার বন্ধুরা। বর্তমানে এই টুরিস্ট সেন্টার থেকেই সবাইকে পারমিট নিতে হয় রেস্ট্রিক্টেড এরিয়ার। গিয়ে দেখি ওখানে লাঞ্চ বিরতি চলছে। তাই সবাইকে অফিস থেকে বের করে দিয়ে তালাবন্ধ দিয়ে দিয়েছে, খুলবে দেড় ঘণ্টা পর। আমরা আমাদের সরকারি অফিস নিয়ে অনেক আফসোস করি, কিন্তু ওদের অবস্থা আমাদের দেশের মতোই।
যাইহোক বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে গরম গরম মোমো আর চা খেয়ে চলে আসলাম। ফেরার পথে একটু আফসোস লাগছিলো আমি বাংলাদেশি হিসেবে পারমিট ম্যানেজ করতে পারিনি বলে। অনেকেই বলেছিল পারমিট ম্যানেজ করে দেবে। তবে তা ইন্ডিয়ান আইডেন্টিটিতে কেন জানি বাংলাদেশি পরিচয়টা কোনোভাবেই লুকাতে মন সায় দেয়নি। যদিও লাদাখের প্রধান আকর্ষণই হলো ওইসব রেস্ট্রিক্টেড এরিয়া। রাস্তায় ওভাবে চেক করে না বা অরিজিনাল আইডি প্রুফ কেউ চেক করে দেখে না, পারমিটটাই শুধু দেখে। তারপরও মন সায় দিলো না।
হিন্দি মোটামুটি ভালোই বলতে পারি আর চেহারা দেখেও তো বাংলাদেশিদের আলাদা করা যায় না। তারপরও মন বললো ‘না থাক, যখন পারমিট ওপেন করবে তখন বাংলাদেশি হয়েই ভ্রমণ করো’। মেইন বাজারে ঘুরাঘুরি ও হাল্কা শপিং সেরে লাঞ্চ করলাম। লাঞ্চ করতে করতে হাল্কা বৃষ্টি শুরু হলো অতঃপর লাদাখের হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডার দেখা পেলাম।
কাঁপতে কাঁপতে হোটেলে ফিরলাম কারণ এবার ফেরার প্রস্তুতি নিতে হবে পরদিন ভোরে ফিরতি ফ্লাইট।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৮
এএ