দেখে অনেকসময় ভ্রম হতে পারে নেপাল নয়, পঞ্চগড়েই অবস্থিত হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘা! আকাশ পরিষ্কার থাকলে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেখা মেলে উচ্চতম এই চূড়ার অপরূপ দৃশ্য।
এই দৃশ্য দেখতে অক্টোবরের পর থেকে ভ্রমণপিপাসু ও প্রকৃতিপ্রেমীরা প্রতিবার ভিড় জমায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
স্থানীয় বাসিন্দা মোবারক ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর শীতে অক্টোবরের পর থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার দুর্লভ দৃশ্য খালি চোখে দেখা যায়। প্রতিবারেই এ জেলায় শীত ভিন্নভাবে আসে। তবে শীতে সব থেকে আকর্ষণীয় বিষয় হলো কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সুযোগ।
জানা যায়, এই সময়ে পাহাড়ের বরফশুভ্র গায়ে সূর্যকিরণ পড়লেই চকচকে উজ্জ্বল পাহাড় উদয় হয়। বিশেষ করে রাতের মনোরম পরিবেশে দুই দেশকে ভাগ করা মহানন্দা নদীর তীরে ডাকবাংলোয় বসে পর্বতের দিক তাকালে গাঁ ঘেষে চলাচলরত গাড়ির লাইটের আলো আরও মনোমুগ্ধ করে তোলে। শুধু তাই নয়, সারা বছর অপরূপ বাংলাদেশের বুক চিরে ভারত-বাংলাদেশকে দুই ভাগে ভাগ করা মহানন্দা নদীর দৃশ্য। এবছরও পর্যটকরা ভিড় জমাতে শুরু করেছেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন থেকে ভারতের শিলিগুড়ির দূরত্ব ৮ কিলোমিটার, দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার, নেপালের দূরত্ব মাত্র ৬১ কিলোমিটার, ভুটানের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার, এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার, চীনের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার।
তেঁতুলিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সানিউল ফেরদৌস বাংলানিউজকে বলেন, তেঁতুলিয়া একটি শান্তিপ্রিয় এলাকা। এ উপজেলায় ভ্রমণের জন্য বিভিন্ন স্থান রয়েছে, যার কারণে এখানে প্রতিবছর পর্যটকরা ভিড় জমায়। এতে আমরা সবার নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের পক্ষে থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেই।
শুধু পাহাড়ি দৃশ্য নয়, প্রাচীন সভ্যতার অনেক নিদর্শন রয়েছে উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ে। এই এলাকাকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যে উপাদান প্রয়োজন তার সবই বিদ্যমান। এ অঞ্চলের পাঁচটি গড়ের সুস্পষ্ট অবস্থানের কারণেই পঞ্চগড় নামটির উৎপত্তি। যার প্রমাণ মেলে- ভিতরগড়, মিরগড়, রাজনগড়, হোসেনগড় ও দেবনগড়।
কীভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে নাইট/ডে কোচ পরিবহনে আসতে পারেন পঞ্চগড় জেলায়। ভাড়া পড়বে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। আবার ঢাকা কমলাপুর থেকে আন্তঃনগর ট্রেনে সরাসরি পঞ্চগড় কমলাপুর স্টেশন আসতে পারেন। ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫৫০ টাকা।
ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা:
পঞ্চগড় থেকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানোর জন্য শহরের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড অথবা শহরের চৌরঙ্গী মোড় থেকে কার বা মাইক্রোবাস ভাড়া করতে পারেন। সারাদিনের জন্য রিজার্ভ কারের ভাড়া পড়বে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায়।
রাতে থাকার জায়গা:
পঞ্চগড় সার্কিট হাউজ, ডিসি কটেজ, পঞ্চগড় জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো, বাংলাবান্ধা ডাকবাংলো, তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্নারসহ রয়েছে বিভিন্ন আবাসিক হোটেল। আর যদি নিজের কোনো আত্মীয়ের বাড়ি থাকতে পারেন তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই!
বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৮
জিপি/এএ