সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
প্রায় এক বর্গ কিলোমিটারের কিছু বেশি জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে ওল্ড কোয়ার্টার। ১০১০ সালের দিকে লি বংশের রাজত্বকালে বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে ব্যবহৃত হতো এই ওল্ড কোয়ার্টার।
ওয়াটার পাপেট শো
ওয়াটার পাপেট শো বা পানির ওপর পুতুল নাচের এই আয়োজন হ্যানয়ের ওল্ড কোয়ার্টারে খুবই বিখ্যাত। প্রতিদিন এক ঘণ্টা বিরতিতে শো অনুষ্ঠিত হয় এখানে। তিনটি ক্যাটাগরিতে প্রতিজনের প্রবেশমূল্য পড়বে ২ লাখ, দেড় লাখ এবং ১ লাখ ভিয়েতনাম ডং। বাংলাদেশি মুদ্রায় যথাক্রমে প্রায় ৭৩০ টাকা, ৫৪০ টাকা এবং ৩৬৫ টাকা।
বাংলাদেশের পুতুল নাচের মতো ভিয়েতনামেও পুতুল নাচ অতীত ইতিহাস ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রায় ৪৫ মিনিটের পুতুল নাচে দেশটির ইতিহাস এবং সংস্কৃতি বিশেষ করে গ্রামীণ জীবনযাত্রার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়। পুতুল নাচের সময় যেসব কথা এবং গান শিল্পীরা পরিবেশন করেন সেগুলো ভিয়েতনামের স্থানীয় ভাষায়। তাই সেসব হয়তো বুঝতে না পেরে ঘুমিয়ে গেলে সুরের মূর্ছনা থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন।
হোয়ান কিয়েম লেক
ভিয়েতনাম মিথোলজির অবিচ্ছেদ্য অংশ হোয়ান কিয়েম লেক। প্রচলিত আছে, রাজ শাসনামলের সময় এক বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষায় লেকটিতে থাকা এক কচ্ছপের শরণাপন্ন হয়েছিলেন তখনকার এক রাজা। কচ্ছপ তাকে একটি বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন তলোয়ার দেয় যা দিয়ে যুদ্ধ জয় করে দেশকে রক্ষা করেন তিনি। রাজা যখন তলোয়ারটি কচ্ছপকে ফিরিয়ে দিতে চাইলে কচ্ছপ সেটি আর ফেরত নেয় নি। বরং এই তলোয়ার যতদিন টিকে থাকবে ততদিন ভিয়েতনাম টিকে থাকবে এমন বার্তা দিয়ে লেকের জলে হারিয়ে যায় ওই কচ্ছপ।
এখানকার এক ট্যুরিস্ট গাইড মিস্টার মিন লো মো বলেন, সাধারণ কচ্ছপ আর এখানকার কচ্ছপের মধ্যে পার্থক্য আছে। হোয়ান কিম লেকের কচ্ছপগুলোর ওপরের খোলস বেশ নরম।
সেই ঘটনার কিছু দিন পর ওই কচ্ছপের মরদেহ পাওয়া গেলে লেকের ভেতরে একটি দ্বীপ বানিয়ে মন্দির করে কচ্ছপটির মরদেহ রাখা হয়। এখনো লেকটিতে ওই কচ্ছপ প্রজাতির কচ্ছপ পাওয়া যায়।
এসবের বাইরেও ওল্ড কোয়ার্টারে ঘুরে দেখার জন্য আছে রোমান ক্যাথলিক চার্চ সেইন্ট জোসেফ ক্যাথেড্রেল, বাচ মা টেম্পল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন কারাগার হোয়া লো প্রিজন, অপেরা হাউজ ইত্যাদি।
এছাড়াও সোভিয়েতদের নির্মিত ডং জুয়ান মার্কেটও আছে এখানে। অনেকটা নিউ মার্কেটের হকার্স মার্কেটের মতো। আছে অপেরা হাউজ। আর এসব কিছুই একে অপরের থেকে কমবেশি এক কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে। হাঁটতে কষ্ট হলে খুবই অল্প ভাড়ায় নিতে পারবেন সাইকেল বা বাই সাইকেল।