দিন ৬৪
ঈদগাঁও (কক্সবাজার)-কক্সবাজার= ৩৩.৭০ কিমি
কাল রাতের আবাসস্থল ছিল ইফতেখারের বাড়ি। চকরিয়ার মাঝের ফাঁড়ি বাজার পেরিয়ে মাতামুহুরী নদী লাগোয়া ওর বাড়ির অবস্থান।
পানিরছড়া বাজারে রাস্তার পাশে হাজারো খাম্বা। এই রাস্তাটা ভয়াবহ ব্যস্ত। বার কয়েক বাস চলে গেল একেবারে গা ঘেঁষে। যাত্রীবাহী বাসগুলোর ভয়াবহ তাড়া যেন। একটু পরেই ফরহান ভাইয়ের ম্যারাথন সত্ত্বা জেগে উঠলো। হাঁটা ছেড়ে উনি দিলেন দৌড়। জোয়ারিয়ানালা পার হয়ে রাবার বাগান।
একটু পরেই শায়িত বুদ্ধমূর্তির বিহারটায় যাওয়ার রাস্তা। পরের মোড় তথা চা বাগান থেকে একটা রাস্তা এগিয়েছে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দিকে। বিশাল ফুটবল ভাস্কর্য দেখে বুঝলাম আমরা এসে পড়েছি রামু বাইপাসের কাছে। আজ আমরা সংখ্যায় বেশি থাকায় লোকের প্রশ্ন শুনতে হচ্ছে কম। লোকে ঠারে ঠারে দেখলেও কাছে ঘেঁষে প্রশ্ন করছে না কেউ।
কলঘর বাজার হয়ে খরুলিয়া থেকে আবার সদর উপজেলায়। মুক্তারকুলের খানিকটা আগে চট্টগ্রাম থেকে এসে যোগ দিলেন তসলিম ভাই। উনি আসার মিনিট দশেকের মধ্যে পায়ে ফোস্কা পড়ায় রণে ভঙ্গ দিল মিসাই। টমটমে করে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিল সে। এমরান, পলাশ আর নজীব ভাই আসায় দল আরো ভারী হলো। বাঁকখালী নদীর উপর নির্মিত সেতু পেরিয়েই লুকিয়ে লুকিয়ে আসা খ্যাত মেরিন সিটি মেগা শপিং কমপ্লেক্স।
লিংক রোড থেকে রাস্তার চেহারাই বদলে গেলো। দু’পাশের সব গাছ কাটা পড়েছে চার লেনের খপ্পরে। ভয়াবহ রকমের ধূলা-বালি রাস্তায়। মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করলে কদিনের মধ্যেই শ্বাসতন্ত্রের রোগ নির্ঘাত।
বাস টার্মিনাল থেকে কলাতলীর রাস্তায় আমার অনেক স্মৃতি। গাড়িযোগে নিয়মিত যাতায়াত ছাড়াও এ রাস্তায় আমি দৌড়াতাম একসময়। ছোট দু’টি আপহিল-ডাউনহিল দৌড়ানোর প্র্যাকটিসে দিত অন্য মাত্রা। চারলেনে উন্নীত করার প্রজেক্ট চলমান থাকায় রাস্তার পাশে আমার তৎকালীন দৌড়ানোর জায়গাটুকু এখন উধাও। তার জায়গায় এখন বড় বড় গর্ত। পুলিশ লাইন্সের বাঁক ছাড়াতেই বিকাশ বিল্ডিংয়ের বামে চিরচেনা সেই রশিদা ম্যানশন। জীবনের বিশটা মাস এ বাড়ির দোতলা আর তিনতলাতেই কাটিয়ে দিয়েছি আমি। ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্টের কাছ থেকে তারিক ভাই সঙ্গী হলেন।
হাঙ্গরের ভাষ্কর্য সমৃদ্ধ ডলফিন মোড় থেকে রাস্তা ধরে না গিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম বিচ ধরে এগোনোর। আমাদের যাত্রাপথের শেষবিন্দু হলিডে মোড়ের কক্সবাজার ০ কিমি লেখা মাইলফলক। মূল রাস্তার ব্যস্ততা আর হর্নের শব্দের চেয়ে সৈকতের বালুকাবেলাই বেশি টানলো। সুগন্ধা চিচের কাছে সৈকত ছেড়ে আবার ধরলাম রাস্তা। সেকেন্ড হোমের সামনে অপেক্ষা করছিল রাজীব। সুদীর্ঘ তিন-চারশ মিটার হাঁটার প্ল্যান আমাদের সঙ্গে ওর। চারটা নাগাদ হলিডে মোড়ের কাছাকাছি গিয়েই পেয়ে গেলাম জনি, সাকিব, শিহাব ভাইদের। উখিয়া থেকে চলে এসেছে রহিম আর মোস্তফাও। ওদের সাথেও সঙ্গী হয়েছে আরো বেশ ক’জন।
হলিডে মোড়ে গিয়ে অবশ্য আমার কাঙ্ক্ষিত সেই মাইলফলক খুঁজে পাওয়া গেলো না। সংস্কার কাজের মাঝে হারিয়ে গেছে সেই মাইলফলক। অগত্যা একটু এগিয়ে বিমানবন্দরের রানওয়ে লাগোয়া মাঠেই উদযাপিত হলো যাত্রার শেষটা। সাইমুন চলে এলো কেক নিয়ে। কিছুক্ষণের মাঝে দেখা গেলো ডালিয়াকেও। বেশ খানিকক্ষণ ফটোসেশন করে শেষদিনের স্মৃতিগুলোকে ধরে রাখা হলো সবার মোবাইলে। পঞ্চগড় থেকে যেদিন হাঁটা শুরু করেছিলাম সেদিন আমি ছিলাম একা। আর যাত্রার শেষদিনে আমি দাঁড়িয়ে আছি এতগুলো মানুষের ভিড়ে। যদিও মনের মধ্যে কাজ করছে বিশাল এক শূন্যতা। কাল থেকে নতুন কোনো অ্যাডভেঞ্চার নেই, এই ভাবনাই কুরে কুরে খাচ্ছে ভেতরটা।
আরও পড়ুন...
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৬৩)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৬২)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৬১)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৬০)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৫৯)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৫৮)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৫৭)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৫৬)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৫৫)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৫৪)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৫৩)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৫২)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৫১)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৫০)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৪৯)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৪৮)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৪৭)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৪৬)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৪৫)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৪৪)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৪৩)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৪২)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৪১)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৪০)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৩৯)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৩৮)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৩৭)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৩৬)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৩৫)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৩৪)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৩৩)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৩২)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৩১)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৩০)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-২৯)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-২৮)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-২৭)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-২৬)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-২৫)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-২৪)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-২৩)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-২২)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-২১)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-২০)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-১৯)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-১৮)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-১৭)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-১৬)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-১৫)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-১৪)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-১৩)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-১২)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-১১)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-১০)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৯)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৮)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৭)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৬)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৫)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (পর্ব-৪)
** পায়ে পায়ে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা (দিনাজপুর-৩)
** পায়ে পায়ে ৬৪ জেলা (ঠাকুরগাঁও-২)
** পায়ে পায়ে ৬৪ জেলা (পঞ্চগড়-১)
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২০
এএ