ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ট্রাইব্যুনাল

মানবতাবিরোধী অপরাধে নোয়াখালীর ৩ জনের ফাঁসি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৮
মানবতাবিরোধী অপরাধে নোয়াখালীর ৩ জনের ফাঁসি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

ঢাকা: নোয়াখালীর সুধারামের জামায়াত নেতা আমির আলীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসির রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। অপর এক আসামি আব্দুল কুদ্দুসের ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ মার্চ) সকালে চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন।

প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের বিচার হয়েছে।

তিনটি অভিযোগই প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। সর্বোপরি এ রায়ে প্রসিকিউশন সন্তুষ্ট।

অন্যদিকে আসামি মো. জয়নাল আবদিনের আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম রায়টিকে অসঙ্গতিপূর্ণ দাবি করে বলেন, আদালতের প্রতি আমরা সব সময়ই শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু আমার মক্কেল এ রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি এ রায়ে ন্যায় বিচার পাননি বলে মনে করছেন। কারণ, ঘটনার ৪৫ বছর পরে সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর কোনোটাই বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাছাড়া এক সাক্ষীর সাক্ষ্যের সঙ্গে আরেক সাক্ষীর সাক্ষ্যের অনেক অসঙ্গতি রয়েছে; যেটা আদালতের বিবেচনা করার কথা ছিল। কিন্তু আদালত তা করেননি। ফলে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করলে তারা ন্যায়বিচার পাবেন বলে আমার বিশ্বাস।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আবুল কালাম ওরফে এ কে এম মনসুরের পক্ষে রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী তামিম বলেন, মামলাটির সাক্ষ্য এবং এভিডেন্সে এত বেশি অসঙ্গতি যে, আইন-আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে তিনি যদি এই আদালতে আত্মসমর্পণ করে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন, তাহলে তিনিও ন্যায় বিচার পাবেন বলেই আমার বিশ্বাস।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষে এ মামলা সিএভি (রায়ের জন্য অপেক্ষমান) রাখা হয়।

২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলার আসামি চারজনের মধ্যে কারাগারে রয়েছেন আমির আহম্মেদ ওরফে রাজাকার আমির আলী, জয়নাল আবদিন ও আব্দুল কুদ্দুস। পলাতক রয়েছেন আবুল কালাম ওরফে এ কে এম মনসুর। মামলার আরেক আসামি ইউসুফ আলী গ্রেফতার হওয়ার পর অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নোয়াখালীর সুধারামে ১১১ জনকে হত্যা-গণহত্যার তিনটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। ২০১৬ সালের ২০ জুন অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ চারজনের বিচার শুরু হয়।

২০১৪ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে গত বছরের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এ মামলায় পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হেলালউদ্দিন। গত বছরের ৩১ আগস্ট তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওইদিনই প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেয় তদন্ত সংস্থা।

২০১৫ সালের ০৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানান প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম। ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ওইদিনই নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর থেকে গ্রেফতার হন আমির আহম্মেদ ওরফে রাজাকার আমির আলী, জয়নাল আবদিন ও ইউসুফ আলী। পরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেফতার করা হয় আব্দুল কুদ্দুসকে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৮/আপডেট: ১৪০৯ ঘণ্টা
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ট্রাইব্যুনাল এর সর্বশেষ

welcome-ad