রিয়াদ: বৈশাখী মেলা বাঙালি সংস্কৃতির একটি খুবই পুরনো অনুষঙ্গ এবং ইতিমধ্যে তা আমাদের অন্যতম লোকঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। এক সময় দেশের গ্রামাঞ্চলে ৩০ চৈত্র অর্থাৎ চৈত্রসংক্রান্তিতে যে মেলার আয়োজন করা হতো,সেটাই ক্রমান্নয়ে বৈশাখী মেলার রূপ ধারণ করে।
পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগ ও স্পর্শে তা আরও মনোগ্রাহী ও দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে এবং বর্তমানে তা বাঙালির অন্যতম ও সার্বজনীন জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। কালের বিবর্তনে বাঙালির প্রাণের এই উৎসব দেশের সীমানা পেরিয়ে স্থান করে নিয়েছে বিদেশের মাটিতেও।
সম্প্রতি রিয়াদের একটি অভিজাত কমিউনিটি সেন্টারে সেরকমই একটি মেলার আয়োজন করে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংগঠন স্যাডো। মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ।
মেলা প্রাঙ্গণে বসানো হয় ৩০টির মতো স্টল যেখানে স্থান পায় বর্ষবরণের ঐতিহ্যবাহী পান্তা ইলিশ, বাংলার নানা রকম সুস্বাধু খাবারসহ নানা রকম জিনিসপত্র।
উদ্বোধনের পর মেলা প্রাঙ্গণে স্থাপিত বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রদূত। এসময় সুন্দর একটি মেলা আয়োজন করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। আগামীতে এধরনের আয়োজনে দূতাবাসের পক্ষ থেকে যে কোনো ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
মেলা স্থলের প্রবেশ মুখেই প্রদর্শন করে রাখা হয় বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকী, রিকশা। একটু সামনে পা বাড়ালেই দেখা মেলে বাংলা বিভিন্ন পিঠা-পুলির পসরা। হরেক রকম ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা আর দুধকলি পিঠা যেন প্রবাসীদেরকে মুহুর্তের মধ্যে প্রবাস থেকে নিয়ে যায় গ্রাম বাংলার রান্না ঘরে।
ব্যক্তিক্রমী এই মেলায় ছিলো না কোনো বক্তব্যের পর্ব। স্যাডোর নিজস্ব শিল্পীদের পরিবেশনায় একক গান, দলীয় গান, একক নৃত্য, দলীয় নৃত্যসহ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা আগত অতিথিদের মুগ্ধ করে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে অনুষ্ঠিত হয় র্যাফেল ড্র। এতে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন স্যাডোর উপদেষ্ঠা মন্ডলীর সদস্য, সাংস্কৃতিক টিমেদ সদস্য, রিয়াদ মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সেলিম ভুঁইয়া, অনলাইন এক্টিভিষ্ট ফোরামের সভাপতি ইকবাল হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আল-আমীন, সাংস্কৃতিক সংগঠন আমরা ক’জনের সাধারণ সম্পাদক মুসা বাবু, বাংলাদেশি পণ্য আমদানি কারক সমিতির সভাপতি কাপতান হোসেন, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েসনের সভাপতি আব্দুর রহমানসহ রিয়াদ বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৫
বিএস