ঢাকা: দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ২০১৬ সালকে ‘পর্যটন বর্ষ’ ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু স্পট কোথায়? কতোটিই বা পর্যটন স্পট আছে বাংলাদেশে? কোথায় ঘুরতে যাবে পর্যটক?
এমন কোনো তালিকা নেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও এর অধীনে থাকা বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এবং বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের কাছেও।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের পর্যটন স্পটগুলোর সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্যের তালিকা নেই। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৭০০টি স্পটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এসব স্পট নিয়ে সুনির্দিষ্ট বর্ণনা নেই সেখানে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশ আগেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৭০০ পর্যটন স্পটের কথা বলা হয়। বিভাগ ভিত্তিক সেগুলো আলাদাও করা হয়। কিন্তু এরপর সে কাজ আর এগোয়নি।
তবে সরকারিভাবে সে ধরনের কোনো তালিকা না থাকলেও বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কিছু পর্যটন সেবা প্রতিষ্ঠান পর্যটন সংক্রান্ত নানা তথ্য নিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। সেসব ওয়েবসাইটে তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন পর্যটন স্পটের বর্ণনাও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, অর্থায়নের অভাবে স্পটগুলোর সম্মিলিত তালিকার কাজ এগোতে পারেনি। তাই নিজ উদ্যোগেই খোঁজে খোঁজে ছুটি কাটাতে যান পর্যটকরা।
পর্যটন সেবা প্রতিষ্ঠান ‘ট্যুরিজম সিলেটে’র পরিচালক (বিপণন) ইমাদুল ইসলাম তানভীর বাংলানিউজকে জানান, সিলেটের চার জেলায় অসংখ্য স্পট আছে কিন্তু সরকারিভাবে এর কোনো তালিকা প্রকাশিত হয়নি। এ অবস্থা শুধু সিলেটই নয়, পুরো দেশেরই।
‘তবে ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন স্পটের তালিকা করে এসবের বর্ণনা করা হয়েছে। এসব দেখেই দেশি-বিদেশি পর্যটকরা আকৃষ্ট হয়ে ঘুরতে যাচ্ছেন,’ বলেন তিনি।
আরেকটি ট্রাভেল এজেন্সির কর্মকর্তা সাইমুম আজাদ বলেন, সুনির্দিষ্ট তালিকা থাকলে দেশি-বিদেশি পর্যটকের আগ্রহ আরও বাড়তো।
ন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ পারভেজ আহমেদ চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, পর্যটন করপোরেশন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে পূর্ণাঙ্গ একটি তালিকা প্রস্তুত করেছিলো। সেখানে কোন স্পটের কী কী উন্নয়ন প্রয়োজন তাও অন্তর্ভুক্ত হয়।
‘তবে এর হালনাগাদ কোন অবস্থায় আছে সে বিষয়ে আমি অবগত নই’ বলেন তিনি।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (প্ল্যানিং) খালেদ বিন মজিদ বলেন, সিলেট আর চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্পট আলাদাভাবে প্রিন্ট করে বাঁধাইয়ের জন্য চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদফতরে পাণ্ডুলিপি জমা দেওয়া হয়েছে।
এর পরের আর কোনো অগ্রগতি জানা নেই তারও। তবে তিনি দেখিয়ে দিলেন উপ-ব্যবস্থাপক নাজমুল আরেফিনকে। এও বলেন, ‘উনিই এটার ফোকাল পয়েন্ট। ’
নাজমুল আরেফিন বলেন, ‘তালিকা করা হলেও ফান্ড ক্রাইসিসে তা সম্ভব হয়নি। পর্যায়ক্রমে চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদফতর তা করে দেবে। ’
তালিকা প্রসঙ্গে তিনি জানান, তালিকায় সিলেট ও চট্টগ্রামে ৮০টির মতো পর্যটন স্পট ছিলো। এভাবে পুরো বাংলাদেশের তালিকা ও একটা বিবরণ ছিলো এর মধ্যে।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের (বিটিবি) নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাছেও দেশের পর্যটন স্পটের কোনো স্বীকৃত তালিকা নেই। ’
যোগাযোগ করা হলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী জানান, পর্যটন বর্ষ শুরু হয়ে গেছে। তাই এখন নিয়মিত কাজগুলোই চলছে।
‘বিস্তারিত জানতে মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে ভালো হয়,’ পরামর্শ দেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৬
এসএ/এমএ