ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

আম-বকুলের ছায়ায় শান্তির আলয়

অমিয় দত্ত ভৌমিক, ওয়েব ইনচার্জ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৬
আম-বকুলের ছায়ায় শান্তির আলয় ছবি: অমিয় দত্ত ভৌমিক / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বারদী (সোনারগাঁ) থেকে ফিরে: বারদীর লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম কেবল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান নয়। এটি ধর্ম বর্ণ জাতি নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষের কাছেই পবিত্র স্থান।



কর্পোরেট জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে বা ধর্মীয় স্থান দর্শন, যে কোন কারণেই হোক না কেন; দেখে আসতে পারেন ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বারদীতে অবস্থিত লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম।

আশ্রমের ভেতরে রয়েছে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তৈলচিত্র। এখানে সকাল-সন্ধ্যা পূজা হয়। তাছাড়া লোকনাথ ব্রহ্মচারীর দেহত্যাগের জায়গায় মন্দিরে রয়েছে পাথরের মূর্তি।

১৮ ভাদ্র লোকনাথ ব্রম্মচারীর আবির্ভাব দিবস ও ১৯ জৈষ্ঠ্য তিরোধান দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর আশ্রমে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। আশ্রমের সামনে সপ্তাহব্যাপী মেলা বসে।

আশ্রমের ঢোকার সময় ঠিক দক্ষিণের উঠোনে তাঁর সমাধিস্থলের পশ্চিম পাশে মূল গেটের সামনে রয়েছে বিশাল আকৃতির বকুল ও আম গাছ।

মন্দিরে ভোগ দিতে চাইলে মন্দিরের সামনেই রয়েছে অসংখ্য ভোগের দোকান। রয়েছে ধুপকাঠি আর মোমের দোকানও।

আশ্রমে রয়েছে পাঁচতলা বিশিষ্ট তিনটি যাত্রীনিবাস। যাত্রীনিবাসগুলোতে যে কেউ গিয়ে থাকতে পারেন। এজন্য একশ’ টাকা জামানত রাখতে হবে। যাত্রীনিবাসে অতিথি কম থাকলে ২-৩ দিন পর্যন্ত থাকা যায় কোন রকম পয়সা ছাড়াই।

আশ্রমের ডান পাশে বাঁধানো পুকুরে রয়েছে বিশাল আকৃতির শিব মূর্তি।

ঘাটের পাশেই রয়েছে নাম সংকীর্তনের মন্দির। মন্দিরে প্রতিবছর ডিসেম্বরে ৫৬ প্রহর ব্যাপী হরিনাম সংকীর্তন হয়।

আশ্রমের পেছনে রয়েছে শ্মশানকালী মন্দিরসহ আরও কয়েকটি মন্দির। এখানেও পূজা অর্চ্চনা হয় নিয়মিত। রয়েছে গীতা বেদী। যেখানে প্রতিদিন শ্রীমদ্ভগবদগীতা পাঠ হয়।

আশ্রমের প্রসাদ পেতে চাইলে আপনাকে নিতে হবে কুপন। সকালের বাল্যভোগ পেতে নিতে হবে ১২০ টাকার কুপন। আর দুপুরের রাজভোগ পেতে ১৪০ টাকার কুপন। বাল্যভোগ বিতরণ করা হয় সকাল ১১টা থেকে, আর রাজভোগ দুপুর ২টায়।

বাল্যভোগে থাকে আলুসিদ্ধ, মুগডাল আর ঘি ভাত। দুপুরের রাজভোগে বাড়তি সবজি থাকে। একটা ভোগ ৩ থেকে ৪ জন অনায়াসে খেতে পারবেন।

প্রসাদ গ্রহণ করার জন্য প্লেট, গ্লাস, বালতি, জগ ও হাতা (বড় চামচ বিশেষ) সংগ্রহ করতে আপনাকে অল্প কিছু টাকা জামানত রাখতে হবে। যা একটি রশিদের মাধ্যমে জমা রাখা হয়। প্রসাদ গ্রহণ শেষে আপনি জিনিস ফেরত দিলে জামানতের টাকাও ফেরত পেয়ে যাবেন।

প্রসাদ পেতে লাইনে দাঁড়াতে হবে বালতি জগ নিয়ে।

প্রসাদ খেতে হোগলার পাটি পেতে বসে যেতে হবে যাত্রীনিবাস, খোলা জায়গা বা কোন বারান্দায়। পানীয় জলের সুবিধা রয়েছে।

ঢাকা থেকে বারদী ঘণ্টা দু’য়েকের রাস্তা। গুলিস্তান থেকে বোরাক পরিবহন বা সোনারগাঁ এক্সপ্রেসে মদনপুর নেমে অটোরিকশায় যাওয়া যাবে। তাছাড়া ঢাকা থেকে মোগরাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে নেমে অটোরিকশায় যাওয়া যাবে। আর ঢাকা থেকে গাড়ি নিয়ে যেতে চাইলে সময় লাগবে এক ঘণ্টা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৬
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ