ঢাকা: কক্সবাজাকে ‘বিশেষ পর্যটন অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণার পর পর্যটনের উন্নয়নে ১৩ মার্চ থেকে আইনগতভাবে কর্তৃপক্ষ যাত্রা শুরু করেছে। এখন থেকে আইন প্রয়োগ করে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সব ব্যবস্থা নিতে পারবে।
মহাপরিকল্পনার বাইরে অনুমতি ছাড়া আর কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এমনকি সরকারি সংস্থাও কোনো প্রকার রাস্তাঘাট বা কোনো স্থাপনা তৈরি করতে পারবে না। ফলে বন্ধ হবে পাহাড় কাটা বা পরিবেশ দূষণের মতো কর্মকাণ্ড। ভূমি ব্যবহার, জোনিং এবং প্রাকৃতিক ল্যান্ডস্কেপ অনুসরণ করে ভূমি সংরক্ষণ করবে পর্যটন কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারের পর্যটকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আলোচনা হলেও ২০১৫ সালে ব্যাপকভাবে আলোচনায় স্থান পায় পর্যটন নগরী কক্সবাজার। ২০১৫ সালকে সরকার পর্যটন বছর হিসেবে ঘোষণা করে। সেই সঙ্গে পর্যটন এলাকার উন্নয়নের উদ্যোগও নেয় সরকার।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করে তা বাস্তবায়নে জাতীয় সংসদে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৬ পাস হয়। আইন পাসের ১৭ দিন পরেই সরকার গেজেট আকারে তা প্রকাশ করে। ১৩ মার্চ থেকে পর্যটন কর্তৃপক্ষের প্রধান ‘চেয়ারম্যান’ নিয়োগের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ক্ষেত্রে আবাসনের গুরুত্ব বেশি থাকলেও কক্সবাজার কর্তৃপক্ষের পর্যটন শিল্পেরই গুরুত্ব দেওয়া হয়। তবে স্থানীয় জনগণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সীমিত পর্যায়ে আবাসন উন্নয়নের বিষয়টি রাখা হয়েছে আইনে।
পর্যটন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
কক্সবাজার এলাকার উন্নয়নের মূল কাজই হবে পর্যটনের ক্ষেত্রে উন্নয়ন করা। এ লক্ষ্যে আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ভূমির যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করে মহাপরিকল্প গ্রহণ করবে এবং তা বাস্তবায়ন করবে। পর্যটন এলাকার ভূমির উপর যেকোনো ধরনের অপরিকল্পিত উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ করবে। আধুনিক, আকর্ষণীয় পর্যটন অঞ্চল ও নগর পরিকল্পনা নিবে কর্তৃপক্ষ। পর্যটন শিল্পের বিকাশসহ কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকার গৃহায়ন ও আবাসন সুবিধা সম্প্রসারণ করবে। এ লক্ষ্যে পর্যটনকেন্দ্রিক আবাসিক, বাণিজ্যিক, বিনোদন, শিল্প বা এ সম্পর্কিত অবকাঠামো নির্মাণের জন্য আলাদা এলাকার অবস্থান নির্ধারণ ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করবে।
দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের কক্সবাজার জেলায় নিরাপদ অবস্থান ও যাতায়াত সহজ করার জন্য আধুনিক পর্যটন নগরীর প্রয়োজনীয় সড়ক, মহাসড়ক, নৌপথ, রেলপথ ও সমুদ্রপথ নির্মাণের লক্ষ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমন্বয় সাধন করবে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে।
উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে বিধি নিষেধ
কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলের মধ্যে কোনো ব্যক্তি, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সরকারি বা বেসরকারি কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি সাধারণভাবে কোনো ধরনের রাস্তাঘাট ও ইমারত নির্মাণ, উন্নয়ন প্রকল্প বা বাস্তবায়ন করতে পারবে না।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সম্পত্তি কক্সবাজার কর্তৃপক্ষের
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন কোনো ভূমি, ইমারত, রাস্তা, চত্বর বা এর কোনো অংশবিশেষ কর্তৃপক্ষের কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাধীন ভূমি উন্নয়নের প্রয়োজন হলে, কর্তৃপক্ষের অধীন ন্যস্ত হবে। কর্তৃপক্ষের অধীন ন্যস্ত রাস্তাঘাট বা সম্পত্তির জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না।
আন্তর্জাতিক টুরিস্ট জোন
সরকার এ এলাকাকে আন্তর্জাতিক টুরিস্ট জোন করার পরিকল্পনা দিয়েছে। এ জন্য সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের কাছে সহায়তারও প্রস্তাব দিয়েছে সরকার।
কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উন্নিত করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফাইভ স্টার হোটেল করার আহ্বানও জানানো হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোক্তাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৬
এসএমএ/ওএইচ/এসএইচ