কেয়ারি সিন্দবাদ, বঙ্গোপসাগর থেকে: সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে নাফ নদীর কেয়ারি ঘাট থেকে ছাড়লো জাহাজ কেয়ারি সিন্দবাদ। মিনিট পাঁচেক আগেই ছেড়ে গেছে বে ক্রুজ।
নয়নাভিরাম নাফ নদী। যাত্রা পথের বিভিন্ন সময় নাবিক মাইকে জাহাজের অবস্থান জানাচ্ছিলেন, ‘ডানে টেকনাফের পাহাড়, বামে মায়ানমার। ’
এরপর নদী ছেড়ে সাগরের মুখে জাহাজ। চৈত্রের এ সময়টা সাগর উত্তাল থাকে, পর্যটকও কম। পুরো জাহাজে শ’ দুয়েক যাত্রী। বঙ্গোপসাগরে পড়ার কিছু আগেই লঞ্চ দোল খেতে শুরু করলো। মনে হচ্ছিলো এই বুঝি কাত হয়ে যাবে। কখনও ডানে-বামে, কখনও সামনে-পিছনে দোল খেতে খেতে এগিয়ে যেতে থাকলো কেয়ারি সিন্দবাদ।
ভয় হিম হয়ে যাওয়া সে দুলুনি। সাগরের বিশাল-বিশাল টেউ আছড়ে পড়ছে লঞ্চের ওপর। যেন লঞ্চটি নিয়ে খেলছে ভয়ঙ্কর সুন্দর রূপ নেওয়া বঙ্গোপসাগর। লঞ্চটি যেন শূন্যে তুলে আছাড় মারছে। যারা ডেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন, নাবিক বারবার তাদের লঞ্চের ভিতর গিয়ে বসার অনুরোধ করলেন। মহিলা ও শিশুরা ভয়ে একে অপরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরছিলো। দাঁড়িয়ে থাকা তো দূরের কথা চেয়ারে বসে থাকাও যাচ্ছিলো না। ঢেউয়ের তীব্রতায় অনেক শিশু-কিশোর কান্না জুড়ে দেয়। নারী ও শিশুদের কেউ কেউ বমি করে দেয়।
বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের চোখ বন্ধ করে রাখার পরামর্শ দিচ্ছিলেন। যারা খুব বেশি ভয় পাচ্ছে অভিজ্ঞরা তাদের লঞ্চের ঠিক মাঝখানে বসার পরামর্শ দেন।
লঞ্চে পরিচয় হলো সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সরোয়ার কামালের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বললেন, ‘এটা পর্যটন মৌসুম নয়। এ সময় সাগর খুব উত্তাল থাকে। ৫/৬ দিন আগেও পর্যটকরা সেন্টমার্ন্টিনে আটকে পড়েছিলেন। ’ নাবিক বার বার অভয়বাণী শোনালেও ভয় আর আতঙ্কে আমরা এগিয়ে চলি সেই সেন্টমার্ন্টিনের দিকে। বেলা ১২টা নাগাদ পৌঁছে যাই স্বপ্নের সেন্টমার্টিন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৬
এমআই/টিআই
** ১২ মাস কক্সবাজারকে ব্যস্ত রাখতে চায় মারমেইড