ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

শিশুদের জন্য সেন্টমার্টিন নয়!

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০১৬
শিশুদের জন্য সেন্টমার্টিন নয়! ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল - বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সেন্টমার্টিন থেকে কক্সবাজার ফিরে: জোয়ার-ভাটার যে ঝুঁকি সেন্টমার্টিনে তার প্রকোপ শিশুদের উপরই সবচেয়ে বেশি। কেননা, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন গিয়ে নামার হুড়াহুড়ি আর জাহাজ থেকে নামার জন্য নেই কোনো সুব্যবস্থা।

এ অবস্থায় বড়দের নামতে যেখানে ত্রাহি দশা, সেখানে ছোটদের বিপদ আরও বেশি। আর ছেঁড়াদ্বীপে ঢেউ মোকাবেলা করে তীরে পৌঁছানো সে এক পুরোদস্তুর যুদ্ধ!


বৃহস্পতিবার (০৭ এপ্রিল) সেন্টমার্টিন থেকে ছেঁড়াদ্বীপ গিয়ে নামতে হলো আরেকটি নৌকায় করিডোর ব্যবহার করে। সেই করিডোরে ঢেউ আঘাত হানছে একের পর এক। উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে কখনও নৌকায় পানি উঠে পড়ছে। এখানে নৌকা উল্টে গেলে তীর বহুদূর বলে জানান মাঝিরা।

দম্পতি শাহিন-মাসুমা তো ভয়ে অস্থির। প্রায় আধঘণ্টা চেষ্টার পর ছেঁড়াদ্বীপে উঠতে সফল হন তারা। কিন্তু ততক্ষণে অন্যদের ভ্রমণ শেষ। তাই নেমেই ফিরতে হলো।

ছেঁড়াদ্বীপ ঘুরে আসা বেশিরভাগই মনে করেন, শিশুদের জন্য খুবই রিস্কি এ দ্বীপ। প্রথমত দ্বীপে ওঠানামা শিশুদের জন্য মুশকিল হবে। আর ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে গিয়ে আছে মৃত্যুঝুঁকি। সাঁতার জানা থাকলেও শিশু যে বয়সের হউক, প্রবল স্রোত তাকে ভাসিয়ে নেবে দ্রুত। যেহেতু সেন্টমার্টিন আর ছেঁড়াদ্বীপ প্রবালঘেরা, সে কারণে শিশুদের পা মোটেও সৈকতে ফেলা ঠিক নয়।

আর সেন্টমার্টিনে অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করাও কঠিন। কারণ না আছে হাসপাতাল, না ডাক্তার। সেন্টমার্টিন বাজারে কয়েকটি ফার্মেসি দেখা গেলেও প্রয়োজনীয় অনেক ওষুধ নেই তাদের কাছে।


তবে সেন্টমার্টিনে বসতি গেড়ে বড় হওয়া শিশুরা অবলীলায় হেঁটে বেড়ায় দ্বীপজুড়ে। জোয়ার-ভাটা দেখে বড় হওয়া এসব শিশুরা যেন অনেকটা অভ্যস্ত এ পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ন্যাশনাল হোটেল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ পারভেজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘সেন্টমার্টিন ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষিত। এ কারণে অবাধে সেখানে পর্যটক যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা উচিত’।


তিনি বলেন, ভুটান তাদের পরিবেশ-প্রকৃতি-ঐতিহ্য রক্ষায় নির্দিষ্ট সংখ্যক পর্যটক গ্রহণ করে। একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে আমাদেরও।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদুল হাসান বলেন, সেন্টমার্টিনে দিনে কয়েক হাজার পর্যটক আসা-যাওয়া করে, যা সেন্টমার্টিনকে নষ্ট করছে। আর সেখানে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বসবাস করছে, যেখানে বাস করার কথা আড়াই হাজার।


বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৬
এসএ/জেডএস

**
‘বাবা, গোয়া সৈকতের সঙ্গে যে দারুণ মিল’
** নতুন পরিকল্পনায় সাজছে কক্সবাজার
** উত্তাল সাগর, উপচে পড়া রূপ
** সৈকতের প্রহরী, সাগরের যোদ্ধা
** খেলায়-হেলায় সমুদ্র সৈকতকে আঘাত
** সেন্টমার্টিনের বাহন ‘ভ্যানগাড়ি’
** সেন্টমার্টিন হারিয়ে যাবে!
** ছেঁড়া দ্বীপের মৌসুমী!
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ