নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে: নাইক্ষ্যংছড়ি বান্দরবান জেলার একটি উপজেলা হলেও পর্যটন নগরী কক্সবাজার থেকে এর যোগাযোগ বেশ সহজ। রামু থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরত্বে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের অবস্থান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৩ একর জমির ওপর এই লেকে স্বল্প পরিসরে বসার কয়েকটি ছাউনি থাকলেও নেই তাতে শৈল্পিকতার ছোঁয়া, দায়সারাভাবে বানিয়ে রাখা হয়েছে। লেকে নামার জন্য কয়েকটি সিঁড়ি থাকলেও ধরে ওঠা-নামা করার রেলিং আছে মাত্র একটিতে। আছে একটি ঝুলন্ত সেতুও। লেকের জলে চলছে মানুষের গোসল ও কাপড়-চোপড় ও হাড়ি-পাতিল ধোয়ার কাজ। এতে লেকের পানি স্বচ্ছতা হারিয়েছে।
বিকেল ৪টায় যখন আমরা ওই লেক দেখতে যাই তখন মাত্র তিনজন দর্শনার্থীর দেখা মেলে। তাদেরই একজন সুলতানা রাজিয়া শিমু। তিনি এসেছেন পাশের ইউনিয়ন গর্জনী থেকে তার ৩ বছর বয়সী ছেলে আর বোনকে নিয়ে।
তিনি বলেন, ৮ বছর আগেও যেমন দেখেছি, এখনও তেমনি আছে। কোন পরিবর্তন নেই। শোনা যায় সারা দেশে উন্নতি হইতেছে কিন্তু এই লেকের কোনো উন্নতি নেই।
ঝুলন্ত ব্রিজটির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বান্দরবানের মেঘলা স্পটে ঝুলন্ত ব্রিজটি দেখতে কত সুন্দর আর এটার কোনো সৌন্দর্য নেই। দায়সারাভাবে বানিয়ে রেখেছে।
লেকটির উন্নয়নের পাশাপাশি এখানে শিশুদের জন্য ছোট পরিসরে হলেও কিছু বিনোদনের ব্যবস্থা আর একটি ফুডকোর্ট থাকা খুবই জরুরি বলে মনে করেন শিমু।
এখানে আসা আরেক ভ্রমণার্থী নজরুল ইসলাম। যিনি আমরা লেকের ভেতরে অবস্থান করার সময় ১০টাকায় একটি টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করেছেন। কিন্তু ভেতরে এসে তিনি হতাশ। ৫-৭ মিনিট অবস্থান করে চলে যাওয়ার সময় কথা হয় তার সাথে।
রামুতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন নজরুল। মানুষের মুখে শুনে এসেছিলেন লেক দেখতে। কিন্তু এখানে এসে ভুল হয়েছে বলেই আফসোস করলেন তিনি।
স্থানীয় এক হোটেল ব্যবসায়ী জানান, উপবন লেক ও ঝুলন্ত সেতু দেখতে সারাবছরই পর্যটকের ভিড় থাকার কথা কিন্তু পর্যটকরা আসছে না বাইরে থেকে। এখানে শুধু শীতকালে স্থানীয় এবং আশপাশের এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পিকনিক করতে আসে। আর সারা বছরই চলে বখাটেদের আড্ডা। এ জন্য অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করেন ওই ব্যবসায়ী।
তার মতে, সরকার যদি নাইক্ষ্যংছড়িতে পর্যটনের ওপর জোড় দিতো তাহলে এই লেক ঘিরে নাইক্ষ্যংছড়ির অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতিও হতো।
লেকটির তত্ত্বাবধায়কের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি উপস্থিত না থাকায় কথা হয় তার ছেলে শৈখোয়াই মারমা অনিকের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, শুক্রবারে দর্শনার্থী কিছু থাকলেও অন্যান্য দিনে খুবই কম থাকে। সপ্তাহে গড়ে শ’খানেক টিকিট বিক্রি হয়।
সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে আমাদেরও মনে হয়, পর্যটনের উন্নয়নে লেকটির প্রতি কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া জরুরি। না হলে দর্শনার্থী খরায় ভুগতে হবে সম্ভাবনাময় এই পর্যটন কেন্দ্রটির। রাজস্ব আয় থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৬
এডিবি/এমজেএফ/
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ
** ‘মইশাইল্যা পানের খিলি তারে বানাই খাওইতাম’
** সমুদ্র আর সৈকতই ভরসা পর্যটন নগরীর