ঢাকা, রবিবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

বিচ ঘেঁষে বিচ পার্ক, জানেন না পাশের ব্যবসায়ীরা!

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৬
বিচ ঘেঁষে বিচ পার্ক, জানেন না পাশের ব্যবসায়ীরা! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার থেকে: সৈকতের সুইমিং জোন লাবনী পয়েন্টের বিচ ঘেঁষে নির্মিত হয়েছে একটি বিচ পার্ক। তবে সেটা পার্ক না অন্য কিছু জানেন না পাশের ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা।


কোন দিক দিয়ে এর ঢোকার পথ সেটিও জানেন না আশপাশের কেউ। অথচ বড় পরিসরের জায়গা নিয়ে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এটি পরিচালিত হয়।


শনিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে লাবনী বিচে যেতে প্রাচীর ঘেরা খোলা জায়গা দেখে দাঁড়ানো। টমটম থেকে নেমে জিজ্ঞাস করে জানা গেলো না এটি কী? প্রাচীর ঘেঁষে দাঁড়ানো কিছু বিজ্ঞাপনের ছোট বিলবোর্ড।

সীমানা ধরে কিছু দূর হাঁটার পার পাওয়া গেলো গেট। বড় সাইনবোর্ডে লেখা বিচ পার্ক। তবে প্রতিষ্ঠাকাল দেওয়া নেই। গেটও পাওয়া গেলো বন্ধ। ভিতরে উদম গায়ে এক ব্যক্তিকে দেখা গেলো কাজ করতে। ডাক দিলে ধীর গতিতে হেঁটে এলেন কাছে।

ভিতরে ঢুকতে চাইলে খুলে দিলেন গেট। বললেন, গরু ছাগল ঢোকে তাই বন্ধ।

তিনি আব্দুল কাদের। মালির কাজ করেন। ২৬ বছর চাকরি করলেও বর্তমানে আছেন পার্কের গাছগুলোর অভিভাবক হিসেবে। বিচ ঘেঁষে হলেও সেখানে বিচ কেন্দ্রিক কোনো বিনোদন দূরের কথা, বসার জন্য কোনো ছাউনিও নেই। কিছু সিমেন্ট ঢালাই বেঞ্চ থাকলেও ঠাটা রোদে বসা সেখানে অসম্ভব। বড় কোনো গাছও নেই। কয়েকটি কাঠ বাদাম আর মাঝারি আকৃতির নারিকেল গাছ সামান্য ছায়া দেয়।
 
জেলা প্রশাসনের অধীনে পরিচালিত এ পার্কটি গড়ে উঠেছে দুই একর জায়গার উপর। পার্কের কোথাও প্রতিষ্ঠাকাল লেখা নেই। দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রকৌশলী সোহেল রানার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ২০০৬-০৭ সালের দিকে হতে পারে।

কর্মরত মালিও জানেন না, জানেন না আশপাশের ব্যবসায়ীরাও। অথচ বিচের পাশে বড় একটি জায়গায় এর অবকাঠামো। আর অবাক বিষয় হলেও সত্য, পার্কের সামনে বসা হকার, চশমা ও থ্রি-কোয়ার্টার বিক্রেতারা কেউ জানেন না এটি পার্ক।

যদিও দেখতে মোটামুটি গোছালোভাবেই সাজানো হচ্ছে পার্কটি। লাগানো হয়েছে আম, মাল্টা, কমলা, লেবু, ডালিম, ড্রাগন ফল, পেয়ারা প্রভৃতি ফলের গাছ। ফুলের গাছও আছে কিছু। তবে শীতে বেশি থাকে বলেই জানালেন সালাম।
 
তিনি ছাড়াও এখানে দুই শিফটে চারজন দেখভাল করেন। প্রকৌশলী সোহেল আরও বলেন, পার্কটি বিচকে মাথায় রেখো করা হয়েছে কিনা জানি না তবে এখানে একটি শিশুপার্ক করার কথা রয়েছে।
 
না চেনা, প্রতিষ্ঠাকাল না থাকা, না বলতে পারা প্রভৃতি নিয়ে প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
 
সুইমিং জোন হওয়ায় লাবনী পয়েন্টে প্রচুর পর্যটকের ভিড় থাকে। কিটকট ছাড়া সৈকতের আশপাশে কোনো বসা বা বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা নেই। পার্কটির অবকাঠামোগত অবস্থা ভালো থাকলে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পারে। কিন্তু শুধু একটি শিশুপার্কের চিন্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ প্রশাসনের ভাবনা।
 
প্রচারণার অভাব, সাদামাঠা উপস্থাপনা, বসার, হাঁটার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় শুরুতেই জৌলুশ হারাচ্ছে পার্কটি। বছর দুয়েক এর উন্নয়ন কাজ এগোলেও বাড়েনি দর্শনার্থী।
 
পাশের ব্যবসায়ী আব্দুল কাদেরের মত, পার্ক করে লাভ কি, যদি সেখানে মানুষ না যায়। এর চেয়ে এখানে গাড়ির পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করলেও বেশি পর্যটক পাবে কক্সবাজার সৈকতে।

পার্কটিতে ঢোকার সময় লেখা রয়েছে ভোর ৬টা সকাল ৮টা ও বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা। এ সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্যুরিস্ট স্পটের জন্য পর্যাপ্ত নয়।
 
কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকা ও কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতায় এভাবে হারিয়ে যায় কিংবা পিছিয়ে পড়ে আমাদের সম্ভাবনার পর্যটন খাত।
 

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৬
এএ/


** ছেঁড়া দ্বীপকে আবর্জনার ভাগাড় বানাচ্ছেন পর্যটকরা
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** কক্সবাজারের দ্বীপগুলোতে ‘হায়েনার’ থাবা
**
ছেঁড়া দ্বীপের আইফেল টাওয়ার
**
পরিত্যক্ত অবস্থায় ছেঁড়া দ্বীপের একমাত্র মসজিদ
**
কেয়া আর নারকেল গাছ সেন্টমার্টিনকে করেছে অপরূপা
**
কেয়ারি সিন্দবাদে দোল খেতে খেতে সেন্টমার্টিন
**
অব্যবস্থাপনায় সৌন্দর্য হারাচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ