ঢাকা, রবিবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

সম্ভাবনাময় বাঁকখালী নদীর বুকে মেঘ জমছে!

আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৬
সম্ভাবনাময় বাঁকখালী নদীর বুকে মেঘ জমছে! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার থেকে: নদীর নাম বাঁকখালী। বাঁকে বাঁকে পূর্ণ এ নদীর পথ দিয়ে পর্যটন নগরী কক্সকাজারটাকে একেবারেই কাছ থেকে দেখা যাবে।

এছাড়া পাহাড়ি সৌন্দর্য উপভোগ করার ক্ষেত্রেও নদীটির জুড়ি মেলা ভার।

দেশ-বিদেশের পর্যটকরা কাছ থেকে সমুদ্র আর সৈকত দেখার পাশাপাশি এ নদীর পথ বেয়ে হারিয়ে যেতে পারেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের মাঝে। কয়েক ধাপ পার হলেই বাঁক ঘোরার আনন্দ উপভোগ করতে পারেন তারা।

মায়ানমার হয়ে বান্দরবন থেকে কক্সবাজার সদর মহেশখালী চ্যানেলে যোগ হওয়া বাঁকখালী নদীর পথ সত্যিই উপভোগ্য। শহর ঘেঁষা নদীর পথ বেয়ে মহেশখালী হয়ে সোনাদিয়া দ্বীপেও যাওয়া যায়।
 
কিন্তু অপার সম্ভাবনার এই নদী খুব বেশি ভালো নেই। পানি আর যত্নের অভাবে বাঁকখালীর বুকে জমছে মেঘ। আশীর্বাদের পরিবর্তে পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে নদীটি ক্রমেই চলে যাচ্ছে অপছন্দের তালিকায়।

সম্প্রতি সরেজমিনে ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে বাঁকখালী নদীর এমন চিত্রই উঠে এসেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়মিত খনন কাজ না করায় একদিকে নদীটি নাব্যতা হারাচ্ছে, অন্যদিকে আকস্মিক বন্যায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন পাড়ের বাসিন্দারা।
 
পর্যটকরাও চান নদী পথের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। এমনই দু’জন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে সমুদ্র সৈকত দর্শনে আসা দম্পতি আসলাম হোসেন ও শামসুন নাহার।

বললেন, নদী পথে ভ্রমণ কমবেশি সবারই ভালো লাগে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈতক কক্সবাজারের বাঁকখালীতে এটি চালু থাকলে নতুন কিছু উপভোগ করার সুযোগ পাওয়া যায়।


খুলনা থেকে আসা মাহবুবুর রহমান বললেন, আমরা যারা শহর থেকে দূরে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসি, তারা সবসময়ই চাই একটা মনোরম পরিবেশ। যেখানে থাকবে শুধুই প্রকৃতির ছোঁয়া। অথচ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমরা নদীগুলোকে কাজে লাগাতে পারছি না।
 
নদীটি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কক্সবাজার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বাঁকখালী নদীর পথে কক্সবাজার জেলার সৌন্দর্য উপভোগ করে একদিকে খুশি হবেন দর্শনার্থীরা। অন্যদিকে এটাকে ঘিরে কর্মসংস্থানও তৈরি হবে।

এ কর্মকর্তা বলেন, নদীটিকে নিয়মিত খনন করতে হবে। নইলে এর পানির প্রবাহ ধরে রাখা সম্ভব হবে না। বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটা এমনই। ধীরে ধীরে এর ধারণ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

‘বৃষ্টি হলে হঠাৎ করে পানির পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যায়। এতে ক্ষতি হয় পাড়ের মানুষদের। ’


ছোটবেলা থেকেই এই নদীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠেছে রামু উপজেলার পতেকারকুল এলাকার ‍মুফিজুর রহমানের। জানালেন, এক সময়ে এই নদী ভ্রমণ করতে অনেক পর্যটক আসতেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সে ধারায় ভাটা পড়েছে। উল্টো বাঁকখালীর পাড় ভেঙে ক্ষতি হচ্ছে পাড়ের বাসিন্দাদের।
 
অপার সম্ভাবনাময় এই নদীর প্রাণ ফিরিয়ে নিয়ে আসার দাবিও জানালেন সবাই।

তাদের ভাষ্য, পর্যটন নগরীতে ঐতিহাসিক এই বাঁকখালী নদীটি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তাছাড়া কৃষিতেও বড় ভূমিকা রেখে চলেছে এটি।

সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে ভবিষ্যতে যাতে এর ভূমিকা আরু বাড়ে সেজন্য উপযুক্ত পরিচর্যা দরকার।

 

বাংলাদেশ সময়: ০৮১২ ঘণ্টা, এপ্রির ১১, ২০১৬
একে/আরএইচ

**
যেন স্বয়ং বুদ্ধ শুয়ে আছেন!
** পদ্ম বেচে সংসারে হাসি ফেরান আহমেদ হোসেন
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** মারমেইড ও মুগ্ধতার গল্প...
 ** সেন্টমার্টিন দেখতে কেমন (পর্ব-২)
**সেন্টমার্টিন দেখতে কেমন (পর্ব-১)

** কুকুর যখন ‘টুনা’ শিকারি
** ‘পর্যটন মৌসুম শব্দটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে’
** তৈরি হচ্ছে ‘বিচ ডাটাবেজ’
** সেন্টমার্টিনে সৈকত জুড়ে কাঁকড়ার আল্পনা
** সেন্টমার্টিনে বাজার সদাইয়ের সংগ্রাম (ভিডিওসহ)
** সৈকতের আল্পনাশিল্পীদের করুণ মৃত্যুগাথা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ