ঢাকা, রবিবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

পড়ালেখা ভালো লাগে না!

শিমুল সুলতানা, কান্ট্রি এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৬
পড়ালেখা ভালো লাগে না! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার: বয়স ১৪ কি ১৫। হাসি হাসি মুখে একবার ছাতা খুলে, আবার বন্ধ করে কাস্টমারকে বাহারি ছাতা দেখাচ্ছিল।

ভাঙা ভাঙা বাংলায় চমৎকারভাবে বলে যাচ্ছিল কোনটির কতো দাম। কাস্টমার বের হওয়ার পর নাম জানতে চাইলে বললো, মাখাচিম সুমি।

কক্সবাজার শহরের দুবাই বার্মিজ মার্কেটের একটি দোকানে কাজ করে সে। পড়ালেখা করে কিনা জানতে চাইলে ‘হ্যাঁ’ সূচক মাথা নেড়ে সুমি জানালো, এটা তার আন্টির দোকান। ক্লাস শেষে দোকানে বসে সে। খুবই ভালো কথা। কোন ক্লাসে পড়ো জানতে চাইলেই ঘটলো বিপত্তি! হেসে কুটিকুটি! বললো, পড়ালেখা করতে ভালো লাগে না। তাই ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়ে স্কুল ছেড়েছি।

যে বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা, সে বয়সে দোকান কর্মচারীর কাজ করছে সে।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এই ডিম লাগবে, ডিম? বলে হাঁক ছাড়ছিল ১২/১৩ বছরের আনোয়ার। বাবা-মা ও দু’ভাই এক বোনের সংসারে বাবা কিছুই করেন না। মা হোটেলে কাজ করেন। আনোয়ার ও তার ভাই বিচে ডিম বিক্রি করে। বোনটা শুধু পড়ালেখা করে। তার মতো আরেক ফেরিওয়ালাকে পড়ালেখার বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই উত্তর, করি। স্কুলের নাম কি? এবার মুখ ঘুরিয়ে সলজ্জ হেসে উত্তর, জানি না। অকপটে স্বীকার করলো, পড়ালেখা করে না সে। তবে কেন না, সে উত্তর জানা নেই তার।

কক্সবাজার থেকে ইনানী বিচে যাওয়ার পথে সমুদ্র থেকে মাছের পোনা সংগ্রহ করছিল ১৪ বছরের মিজানসহ কয়েকটি শিশু। স্কুলে যাওয়া হয় না তাদেরও। সেখানে কয়েকজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকও ছিল। তাদের সাহায্য করছিল শিশুগুলো। পড়ালেখার চেয়ে এসব কাজেই আনন্দ তাদের।

শুধু সুমি, আনোয়ার বা এ ছেলেটিই নয়, পর্যটন নগর কক্সবাজারের দোকানগুলো ও সমুদ্র সৈকতে যারা বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছে, তাদের বেশিরভাগই শিশু ও কিশোর-কিশোরী। বিচে ডিম, পানি, কফি, চিপস, ঠাণ্ডা পানীয়সহ বিভিন্ন পণ্য ফেরি করে বিক্রি করছে তারা। এসব শিশুর অনেকেই অভাব নয়, স্বভাবের কারণে পড়ালেখা করছে না। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের দেখতে ভালো লাগে তাদের।

আবার, অনেক বাবা-মা পরিবারে সচ্ছলতা আনতে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে না পাঠিয়ে পণ্য বিক্রি করতে বিচে পাঠান। কেউ কেউ সাময়িক লাভের জন্য সন্তানদের কাজে লাগান।

কিছু করে অর্থনৈতিকভাবে পরিবারের পাশে দাঁড়ানো দোষের নয়, বরং প্রশংসনীয়। কিন্তু সাময়িক লাভের আশায় বা শুধুমাত্র ভালো লাগে না বলে পড়ালেখা বন্ধ করা ‘জাতীর ভবিষ্যতদের’ কাছে কাম্য নয়।  


বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৬
জেডএস/এসআই

** টিপলে ২০০, কিনলে ডিসকাউন্ট​
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ