ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

ম্যাঙ্গো ট্যুরিজম

উচ্চ ফলনশীলে হারিয়ে যাচ্ছে বাহারি সব আম

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৬
উচ্চ ফলনশীলে হারিয়ে যাচ্ছে বাহারি সব আম ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: উচ্চ ফলনশীল আম গাছের ভীড়ে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হচ্ছে বাংলাদেশের প্রায় সাতশ’র অধিক আমের জাত। এগুলোর মধ্যে অনেক জাতের আমগাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

আর কিছু জাত বিলুপ্ত হওয়ার পথে রয়েছে।

বেশি ফলনের জন্য গাছে হরমোনের ব্যবহার ও অতিমাত্রায় রাসায়নিক সারের জন্য অনেক সময় আমগাছ মরে যায়। এছাড়াও এককালীন বেশি টাকার প্রয়োজনে বয়স্ক আমগাছ কেটে ফেলা, নগরায়ন কিংবা নতুন নতুন বসতি স্থাপনের জন্য অনেক প্রজাতির আমগাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। তার বদলে আশে পাশে লাগানো হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল জাতের আম্রপালি, ফজলি, হিমসাগর, লক্ষণভোগ জাতের আমগাছ।

আর এভাবেই দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে নানা জাতের বাহারি নামের বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, শিবগঞ্জ, কানসাট, ভোলাহাট ঘুরে দেখা গেছে, শত শত একর ধানি জমিতে আম বাগান করা হচ্ছে। আর সেসব বাগানে লাগানো হয়েছে ফজলি, আশ্বিনা, হিমসাগর, জোহরি, আম্রপালি কিংবা ল্যাংড়া জাতের আমগাছ।

ভোক্তার চাহিদার কথা মাথায় রেখে এর বাইরে কোহিতুর, চোষা, গোপালভোগ জাতের আমের চারাও লাগানো হয়েছে। তবে সংখ্যায় তা খুবই কম।
শিবগঞ্জের ধোবড়া বাজার এলাকার আমের চারা ব্যবসায়ী মাসুদ রানা বাংলানিউজকে জানান, বাগানিদের চাহিদা মতো তারা আমের চারা উৎপাদন করেন। ফজলি, আশ্বিনা, হিমসাগর, ল্যাংড়া, লক্ষণভোগসহ কয়েক জাতের আমের চারার চাহিদা থাকায় তারা এগুলোই উৎপাদন করেন। অন্য চারা উৎপাদন করলে তা বিক্রি হয় না। পড়ে থাকে বছরের পর বছর।

শিবগঞ্জের একাডেমি এলাকার আমচাষি শামিম খান জানান, এক সময় বৃন্দাবনি, গোলাপবাস, দাদভোগ, গোড়ভোগ, ফুনিয়া, দিলশাদ, কাঞ্চন খোসাল, সিন্দুরি, খুদি ক্ষিরসাপাত, গোলাপ খাস, টিক্কাফরাশ, দুধিয়া, দেওভোগ, দুধস্বর, নারিকেলি, নয়ন ভোগ, নাগ ফজলি, বৈশাখী, বারমাসি, বোম্বাই, বৌ ভুলানি, বাদশাভোগ, মতিচুর, মোহনভোগসহ শত শত প্রজাতির আম পাওয়া যেতো। বর্তমানে সেগুলো তেমন একটা দেখা যায় না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (আম গবেষণা কেন্দ্র) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শরফ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, এক সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আটশ’ প্রজাতির আমগাছ দেখা যেতো। এর কোন প্রজাতি কখন কে কেটে ফেলেছেন, কিংবা কোন প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে তার কোনো পরিসংখ্যান নেই।

তিনি আরও জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম গবেষণা কেন্দ্রে ৩১৭ প্রজাতির আমের গাছ আছে। এ জাতগুলো হয়তো হারিয়ে যাবে না। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আমের জাতগুলো কী অবস্থায় আছে, এর কোন কোন জাত হারিয়ে গেছে তা জানা সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৬
এমআই/এএসআর

**
আমযজ্ঞ দেখতে চাঁপাইনবাবঞ্জের শিবগঞ্জ-কানসাট
** ‘বাগানের আম ফরমালিনমুক্ত’
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ