ঢাকা, রবিবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

টিলার ওপর দৃষ্টিনন্দন ফ্রুটস ভ্যালি

এম জে ফেরদৌস, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৬
টিলার ওপর দৃষ্টিনন্দন ফ্রুটস ভ্যালি ছবি: আবু বকর সিদ্দিকী- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ফ্রুটস ভ্যালি থেকে ফিরে: হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের একান্ত প্রয়াসে গড়ে তুলেছেন এক অনন্য ফলের বাগান। গ্যাসফিল্ডের ভেতরে উঁচু টিলার চূড়ায় অপূর্ব ফলের বাগানটি আকৃষ্ট করবে যেকোনো দর্শনার্থীকে।

সরকারের আলাদা কোনো অনুদান ছাড়াই গ্যাস ফিল্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এখানে শোভা পাচ্ছে ২০০ প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফলের সহস্রাধিক গাছ। কৃত্রিম পাহাড়, ঝরনা, লেক ও ওষুধি গাছের বাগান রয়েছে ফ্রুটস ভ্যালির পূর্ব পাশে। বাম পাশে ফোয়ারার লেকে রয়েছে শাপলা।

টিলার তলদেশে বড় সাইনবোর্ডে দেওয়া আছে ফ্রুটস ভ্যালির বৃক্ষ তালিকা। টিলার গায়ে বাঁধানো পাকা সিঁড়ি বেয়ে টিলার উপরে ওঠার সময় থেকেই চোখে পড়ে গাছের গায়ে গায়ে লেখা বৃক্ষরোপণ সংক্রান্ত বাণী। প্রতিটি গাছের গায়েই হয় খনার বচন, নয় হাদিস কিংবা গুণীজনের বৃক্ষসংক্রান্ত বাণী বাঁধানো।
‘যদি বর্ষে ফাগুনে/রাজা যাবে মাগুনে’, ‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ/ধন্যি রাজার পূণ্য দেশ’- এরকম খনার বচন শত শত গাছের গায়ে শোভা পাচ্ছে। ‘যদি কোনো ব্যক্তি কোনো গাছ বা শস্য রোপণ করে, সেই গাছের ফল বা শস্য যদি কোনো মানুষ বা পশু-পাখি খায় তবে তা ছদকা হিসেবে গণ্য হয়’- বৃক্ষরোপণ সংক্রান্ত এরকম সুন্দর হাদিসও দেখা যাচ্ছে গাছের কাণ্ডে কাণ্ডে।

শুধু বাণী নয়, কোন গাছটি কে কবে রোপণ করেছিলেন, দিন-তারিখ ও নামের তথ্যও দেওয়া আছে ফ্রুটস ভ্যালির গাছে গাছে। ভ্যালিতে একটি শ্বেতচন্দন রোপণ করেছেন কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। একটি লটকন গাছ রোপণ করেছেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ। হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ডের সাবেক ও বর্তমান ব্যবস্থাপকরাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা যেসব গাছ রোপণ করেছেন সেই তথ্য দেওয়া আছে গাছগুলোতে।

কেবল গাছের সৌন্দর্য নয়, ভ্যালির ভেতর পালন করা হচ্ছে দেশি-বিদেশি পশু-পাখিও। টারকি মুরগী দর্শনার্থী দেখলে এমনভাবে পেখম মেলে দৌড়ে আসে মনে হবে ঠোকর দেবে বুঝি। পাখির খাঁচায় রয়েছে দেশি-বিদেশি কবুতর, খরগোশ, বেজি, চীনা হাঁস, তিতির ও মোরগ।

গ্যাস ফিল্ডের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সারওয়ার আলম জানান, ২০০৫ সালে গ্যাস ফিল্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই ফলের বাগান স্থাপনের উদ্যোগ নেন। গ্যাস ফিল্ডের আওতাধীন অব্যবহৃত টিলার প্রায় ৭ একর এলাকাজুড়ে তৈরি করা হয়েছে এই ফ্রুটস ভ্যালি। বাগানের গাছের পরিচর্যা ও পশু-পাখির যত্নের ব্যাপারে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অত্যন্ত আন্তরিক বলেও জানান তিনি।

ফ্রুটস ভ্যালির অবস্থান
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার শাহাজীবাজার এলাকায় উঁচু টিলার চূড়ায় মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে স্থাপিত ফ্রুটস ভ্যালি। ভ্যালিটি হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ডের মালিকানাধীন। গ্যাস ফিল্ড সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠান হওয়ায় নিরাপত্তার কারণে ফ্রুটস ভ্যালি সবার জন্য খুলে দেয়নি কর্তৃপক্ষ। এখানে ঘুরতে হলে আগাম অনুমতি নিতে হবে দর্শণার্থীদের।

**পোস্টার-ব্যানারে ঢাকা এম এ রব চত্বরের নামফলক
** শীতল বনের খোঁজে বোকা বনে যাওয়া
** আরও পড়ুন... দিনের যাত্রী আসনই রাতের বিছানা


বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৬
এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ