ঢাকা, রবিবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

ডিজিটাল যুগে পাল্টাতে সময় লাগে না!

মাহমুদ মেনন, হেড অব নিউজ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৯ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৬
ডিজিটাল যুগে পাল্টাতে সময় লাগে না! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পারাবত এক্সপ্রেস থেকে: এবার পাল্টে গেছে পুরো ব্যবস্থা। পারাবত এক্সপ্রেসে আর চক দিয়ে বগির নম্বর লেখার চল নাই।

দেওয়া হয়েছে 'গ', 'চ', 'ঠ' এসব অক্ষর লেখা নম্বর। দূর থেকেও চোখে পড়বে নম্বরগুলো। ফলে বলা চলে যাত্রীদের বগি খোঁজাখুজির দিন শেষ।  

না হলে প্ল্যাটফর্মে ট্রেন থামার পর সেকি ভোগান্তি ছিলো যাত্রীদের। বগিগুলোর নম্বরও ছিল এলোমেলো। আগে ঠ পরে ঘ এই ছিলো দশা। যাত্রীরা নিজের বগি পেতে একবার এদিক আরেকবার ওই দিক ছোটাছুটি করতো। আবার কেউ কেউ ট্রেনে উঠে ব্যাগ-ব্যাগেজ নিয়ে এই বগি থেকে সেই বগি হয়ে তবেই নিজের আসন খুঁজে পেতো।  

কিন্তু বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সকালে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে সিলেটগামী এই ট্রেনের অবস্থান ১ নং প্ল্যাটফর্মে তার তথ্য মিললো ডিজিটাল স্ক্রিনেই। এগিয়ে গিয়ে ট্রেনর বগি খুঁজতে বেগ পেতে হলো না। কারণ প্রতিটি বগির গায়েই ঝকঝকে অক্ষরের নম্বর বোর্ড লাগানো। দূর থেকেই নজরে আসে কোনটা ‘গ’ আর কোনটা ‘চ’ বগি।  

সামনেই দেখা মিললো এই ট্রেনের কর্মী আবদুল কুদ্দুসের সঙ্গে। যাত্রীদের পথ দেখিয়ে দিতে ব্যস্ত।  

বাংলানিউজের পাঠকরা এর আগের দু’টি খবর ‘কিছু হয়, কিছু হয় না! একই হ-য-ব-র-ল পারাবতে’ ও ‘হ-য-ব-র-ল বগিতে ভোগান্তির পারাবত!’ শীর্ষক দু’টি খবর পড়েছেন, যাতে চক দিয়ে বগির নাম লিখে রাখা এবং বগিগুলোও এলোমেলো আর তাতে যাত্রী হয়রানির খবর দেওয়া হয়েছে। ওই খবরের পরই এই পরিবর্তন সে দাবি করাই যায়।  

বগিতে বসে আবদুল কুদ্দুসের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিলো, জানতে চাইলাম রাতারাতি এই পরিবর্তনের কথা। একেবারে ঝকঝকে নম্বর প্লেট লাগিয়েছেন। ঘটনা কী?

উত্তরে বললেন, ‘এইটা ডিজিটাল যুগ, পাল্টাইতে সময় লাগে না। ’

বোঝা গেলো উপরের নির্দেশেই বদলে গেছে প্লেটগুলো। তবে ট্রেন ছাড়ার মুহূর্তে দেখা গেলো কর্মীরা প্লেটগুলো আবার খুলে নিচ্ছেন।  

পরে তারও ব্যাখ্যা মিললো। কুদ্দুস জানালেন, রুটে একেক দিন যাত্রী বাড়ে, একেক দিন কমে। ফলে বগির সংখ্যাও বাড়ে কমে। আর বগিও পাল্টাতে হয় ঘন ঘন। ফলে ট্রেনের বগির স্থায়ীভাবে নাম লিখে রাখা সম্ভব নয়। এই কারণে অস্থায়ী ব্যবস্থাই তাদের নিতে হয়।  

আর বৃষ্টির দিনে চক দিয়ে লিখলে তা মুছে যায়। সে জন্য তাদের নম্বর প্লেট লাগানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে পুরো সেট বগির জন্য চারটি করে নম্বর প্লেট থাকলে ভালো হয়। পুরো যাত্রায় আর পাল্টাতে হবে না।  

এই নম্বর প্লেট লাগানোরও একটা ঝক্কি আছে, বললেন তিনি। কারণ পথে একেকটি স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম একেক দিকে। ফলে কখনো ডান দিকে। কখনো বাম দিকে নম্বর প্লেটগুলো লাগাতে হয়। এটা যেমন ঝক্কির, তেমন ঝুঁকিরও বটে।  

এছাড়া রয়েছে চোরের ভয়ও। সামান্য একটা নম্বর প্লেটও চুরি করে রেল স্টেশনের চোররা। এদের থামানো বড়ই কঠিন। আর তাই একবার চুরি গেলে চক দিয়ে লেখা ছাড়া আর কোনো পথ থাকে না, বললেন এই রেলকর্মী।  

বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৬
এইচএ/এমএমকে

**এক্সপ্রেস ট্রেনে স্ট্যান্ডিং সিটের যাত্রীরা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ