ঢাকা, রবিবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

হাজার বছরের সংগ্রহ নিয়ে সিলেটের জাদুঘর এখনও অন্তরালে

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৬
হাজার বছরের সংগ্রহ নিয়ে সিলেটের জাদুঘর এখনও অন্তরালে ছবি:জিএম মুজিবুর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট থেকে: তিন থেকে চারশ’ বছর আগের ঘড়ি আছে সিলেটের মতিন উদদীন আহমদ জাদুঘরে। একটি দু’টি নয় অন্তত অর্ধশত এমন প্রাচীন ঘড়ি এখনও মানুষকে মনে করিয়ে দিচ্ছে সময় কতো বয়ে গেছে।

আর সেই সময়কে ধরে রাখাই জাদুঘরের কাজ।

আছে দুই হাজার বছর আগের স্বর্ণমুদ্রা। সোয়া দুইশ’ বছর আগের সোনার জড়ি মসলিন শাড়িসহ সাধারণ শাড়ি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কামান-গোলা-বারুদও সেখানে রাখা হয়েছে।
 
জীবদ্দশায় ভাষা সৈনিক মতিন উদদীন নিজের সংগৃহীত বিভিন্ন জিনিস দিয়ে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখতেন। তারই সূত্র ধরে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত জিনিসপত্র ছাড়াও পরবর্তীতে আরও অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন জাদুঘরটির পরিচালক নিজ উদ্যোগে সংগ্রহ করেছেন।
 
তবে এরই মধ্যে যারা জাদুঘর দেখেছেন, বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তারা। এই তালিকায় রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও।

আর দুর্লভ হয়ে যাওয়া শত শত বছরের স্মৃতিচিহ্ন দেখে অনেকেই বারে বারে জাদুঘরে এসেছেন। অনেক বিদেশি খোঁজ পেয়ে জাদুঘরে এসে কাটিয়ে গেছেন বহু ঘণ্টা। তবে জাদুঘরটির পরিদর্শনে আসা লোকজন ও পর্যটকের সংখ্যা এখন এতোই কম যে জাদুঘর হিসেবে এর পরিচিত বেশি দূর নেই!

জাদুঘরের পারিচালক ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বাহার বাংলানিউজকে বলেন, সিলেট বিভাগে ভাষাসৈনিক মতিন উদদীন জাদুঘরটি একমাত্র প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর- যা সিলেট ও দেশের মূল্যবান সম্পদ।

সরেজমিনে দেখা যায়, আগেকার যুগের রাজকীয় জিনিসপত্র এমনকি শত শত বছর আগের মানুষ বিক্রির দলিলও আছে এখানে। বাংলা, বিহার, ওড়িশার নবাব আলীবর্দী খাঁ সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার থানার দেওয়ান রাজা মাসুমকে বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ হাতির দাঁতের তৈরি পাখা দেন, এটিও আছে এই সংগ্রহশালায়। প্রাচীন যুগে হারিয়ে যাওয়া অনেক জিনিসপত্র জাদুরঘরটিতে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আছে ১৭১৯ শতাব্দির সংস্কৃত শিলালিপি, ১৯৪৬ সালের ওরিয়েন্ট প্রেস।
 
জাদুঘরটি হজরত শাহজালাল (র.) মাজার গেটের কাছে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের পঞ্চম তলায় ৫শ’ স্কয়ার ফুটের জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত। জাদুঘরের পরিচালক বাহার জানান, ভবিষ্যতে তার অবর্তমানে এর পুরো দায়িত্ব নেবে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ।  

জাদুঘরটির উদ্যোক্তা ও সংগ্রাহক মতিন উদদীন আহমদ ১৯০০ সালের ১০ জুন বর্তমান সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার আটগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনিই প্রথম রাষ্ট্রভাষা নিয়ে সভা-সমাবেশ করেন। ১৯৪৭ সালের ৯ নভেম্বর সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে রাষ্ট্রভাষার উপর আলোচনার আহ্বান করেন মতিন উদদীন।

একই বছরের ৩০ নভেম্বর সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে রাষ্ট্রভাষার উপর প্রথম সমাবেশ করেন তিনি। তখনও রাষ্ট্রভাষা নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানে কোনো সভা-সমাবেশ হয়নি।

**ওয়ার্ল্ড হেরিটেজে যেতে পারে এমসি কলেজ ছাত্রাবাস
** শ্রীমঙ্গলের প্রথম পছন্দ শ্রীমঙ্গল ইন
** সিলেটের হেরিটেজ নিয়ে যত উদ্যোগ
** শীতল পাটির কারুশিল্পী অরুণের করুণ কথা
** যেভাবে তৈরি হয় শীতল পাটি​
** সিলেটে রেলের সেই সুদিন ফিরবে কি!​
** উপমহাদেশের প্রথম চা বাগানে
** ঢাকা-সিলেট: চারলেনের অপেক্ষায় সিলেটবাসী ও পর্যটক
** দুই কারণে সাতছড়িতে ঝুঁকিতে বন্যপ্রাণী
** ট্রেইলে নয় ওয়াচ টাওয়ারে সাতছড়ি দর্শন
** বাসে বিমানের ছোঁয়া!
** এসি বাস নেই সিলেট রুটে!


বাংলাদেশ সময়: ১১১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৬
এসএ/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ