ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

পরিষ্কার হলো সেই খৈয়াছড়া ঝরনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৬
পরিষ্কার হলো সেই খৈয়াছড়া ঝরনা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ‘চলার পথের পুরোটা জুড়ে ময়লা। ঝিরিতে পানির বোতল, বিস্কিট-চিপসের বোতল ভাসছে।

প্রপাতের ঠিক নীচেই দোকানঘর। দেখে খুব অবাক হয়েছি। দোকানে কলা, পানির বোতল আর সিদ্ধ ডিম বিক্রি হয়। দোকানের সমস্ত আবর্জনা প্রপাতের পাশেই স্তূপ করে রাখা। সামনের পুরো জায়গাটা নোংরা।

খুব অসহায় লাগছিলো। ভাবলাম যে বস্তা নিয়ে এসেছি তাতে সব ময়লা আটবে কিনা। দিন শেষে ময়লা ভর্তি সব বস্তা যখন একত্রিত করা হলো, পরিবেশ সচেতন যে কোনো মানুষ দেখলে এটি নিতে পারবেন না। ’

সালেহীন আরশাদী বর্ণনা দিচ্ছিলেন খৈয়াছড়া পরিষ্কার অভিযানে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা।

গত ৬ আগস্ট বাংলানিউজে প্রকাশিত দেশের অন্যতম সুন্দর ঝরনা খৈয়াছড়ায় পর্যটকদের যথেচ্ছ ময়লা-আবর্জনা ফেলাসহ সে ঝরনা ভ্রমণের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা ‘ছি! আর আসবো না খৈয়াছড়া’ লেখাটি পাঠকের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে।

সেই লেখার সূত্র ধরেই দেশের সবচেয়ে বড় ফেসবুকভিত্তিক ভ্রমণ প্ল্যাটফরম ট্রাভেলার্স অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ‘খৈয়াছড়া ক্লিনিং ক্যাম্পেইন’ নামে একটি কর্মসূচি নেওয়া হয়।

এ কর্মসূচির পরিকল্পনাকারী ফিরোজ কবীর বলেন, আমরা যে ১৪ জন ভলান্টিয়ার খৈয়াছড়ায় পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নিয়েছি তারা সবাই ঘুরতে পছন্দ করি। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্যই মূলত ঘুরে বেড়াই। কিছুদিন আগে বাংলানিউজে একটি প্রতিবেদন দেখি। প্রতিবেদক সেখানে ঘুরে এসে পর্যটন কেন্দ্রটির বেহাল অবস্থার কথা তুলে ধরেন। যারা ঘুরতে যান তাদের মধ্যে অনেকেই না বুঝে তাদের বর্জ্যগুলো ফেলে আসেন।

তিনি বলেন, আমাদের সবসময় কিছু সামাজিক দায়িত্ব থাকে। আমার মনে হয়েছে যারা ঘুরতে যান তাদের সচেতন করা প্রয়োজন। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ট্রাভেলার্স অব বাংলাদেশ’ (টিওবি) গ্রুপে একটি ইভেন্ট করে ১৪ জন ভলান্টিয়ার নিয়ে খৈয়াছড়া যাই। খৈয়াছড়ায় পৌঁছে আমরা ভলান্টিয়ারদের জানানোর চেষ্টা করি কেন আমরা এ কাজে এলাম, কীভাবে ময়লাগুলো সংগ্রহ করতে হবে, কীভাবে পরে এসব সরিয়ে ফেলা যায়- এসব।

শুধু এখানে নয়, তাদের এখন থেকে এই নিয়মগুলো সবসময়, সব জায়গায় মেনে চলতে হবে। এতে তারাও সচেতন হলেন আবার পরবর্তীতে তারা তথ্যগুলো ছড়িয়ে দিতে পারবেন। তারা নিজেদের উদ্দ্যোগে এ ধরনের কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হবেন বলে মনে করেন ফিরোজ।
অনেকে আমাদের কাজ করতে দেখে সচেতন হবে। অনেক পর্যটককে আমরা বুঝিয়ে বলেছি কেন আমরা এ কাজ করছি, কেন ময়লাগুলো সঙ্গে নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা প্রয়োজন। আমাদের সবার উচিত নিজেদের সচেতন হওয়া, আশপাশের মানুষকে সচেতন করা। সচেতনতা বৃদ্ধি করতে না পারলে এসব দূষণ কারও পক্ষে কমানো সম্ভব নয়। আমাদের এ উদ্যেগ সেই পর্যন্ত চলবে যতদিন না আমরা পরিবেশ দূষণ রোধে সবাইকে সচেতন করে তুলছি। জানান তিনি।

ভবিষ্যতে ট্রাভেলার্স অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরও এ ধরনের কর্মসূচি নেওয়ার কথা জানালেন গ্রুপটির অন্যতম অ্যাডমিন সালেহীন আরশাদী।

কোনো একটা জায়গাকে জনপ্রিয় করতে টিওবির কিছুটা হলেও ভূমিকা থাকে। তাই সেই জায়গাগুলো এভাবে নষ্ট হলে এর দায় টিওবির উপর স্বাভাবিকভাবেই এসে পড়ে। টিওবি প্রতি বছরই এমন ক্লিন আপ ইভেন্ট করে। আগামীতে আরও সংগঠিত হয়ে করবে।

খৈয়াছড়া তার অনন্য প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে অনন্য। এর ধাপই আছে দশের অধিক। মানুষ্য ময়লা আবর্জনা মুক্ত হয়ে খৈয়াছড়া বয়ে চলুক অনন্ত কাল ধরে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৬
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ