মারমেইড বিচ ও ইকো রিসোর্ট ঘুরে: প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল হক চৌধুরী সোহাগের সঙ্গে কথা না হলে হয়তো অজানাই থেকে যেতো। বৈঠকি আলাপে অন্যান্য দিক সম্পর্কেও ধারণা দিলেন তিনি।
কক্সবাজারকে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান প্রতিনিধি হিসেবে গড়ে তুলতে মারমেইডের মহতী উদ্যোগগুলো দেখে নেওয়া যাক।
আশ্রম
আশ্রম হচ্ছে অতি অভিজাত, চিন্তাশীল ও খ্যাতিমানদের জায়গা। এখানে তারা একান্তে সময় কাটাতে পারেন। এমনিতেই কর্মজীবনে তাদেরকে প্রচুর মানুষের সঙ্গে ওঠা-বসা করতে হয়। এজন্য তাদেরকে একদম একান্ত সময় উপহার দিতে এই বিশেষ ব্যবস্থা। যাকে মারমেইড বলে, হাইড অ্যাওয়ে। মারমেইড ইকো রিসোর্ট থেকে ট্রলারে করে যেতে হয় সেই নির্জন দ্বীপে।
তিনটি রুম দিয়ে শুরু হলেও সাতটি রুমে উন্নীত করার ক্ষেত্রে কাজ চলছে। স্থানীয় একটি রাখাইন পরিবার আশ্রম অতিথিদের দেখাশোনা করে। খাবারও তারাই রান্না করে। দ্বীপের অবস্থানও মিলিয়ন ডলার মূল্যের। সামনে সমুদ্র, চারদিকে গাছপালা দিয়ে ঘেরা প্রকৃতির একদম নিবিড় কোল। ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু হওয়া আশ্রমকে মেডিটেশন, ইয়োগার জন্য অন্যতম শ্রেষ্ঠ জায়গা বলছেন সোহাগ।
মারমেইড গ্যালারি
‘আপনি মারমেইডের যেকোনো অঙ্গ-প্রতিষ্ঠানে ঘুরলে দেখবেন, আর্টের সঙ্গে আমাদের কী নিবিড় যোগাযোগ! রিসোর্টের প্রতিটি রুমে, রাস্তাঘাটে, সব জায়গায় সৌন্দর্যবর্ধনের কাজে আমরা আর্ট ব্যবহার করি। ’ বলছিলেন সোহাগ।
তার কথা শতভাগ ঠিক। সরেজমিন অভিজ্ঞতা তাই বলে। শুরু থেকেই আর্ট মারমেইডের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। চতুর্দিকে ছড়ানো নানা শিল্পকর্ম দেখে অতিথিরা মুগ্ধ হন, কিনতে চান। সেখান থেকে প্রাতিষ্ঠানিকতা পায় ‘মারমেইড গ্যালারি’।
সৌন্দর্যবর্ধন ও বিক্রির কাজে আর্ট নিয়ে গ্যালারি অনেক শিল্পীর সঙ্গে কাজ করে। কারও সঙ্গে কর্মশালা, কারও সঙ্গে আবাসিক বা কারও সঙ্গে স্থায়ী চুক্তি। বিশ্বের প্রায় সব নামী গ্যালারিগুলোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে মারমেইড গ্যালারি। নতুন নতুন সব কাজের খবর জানিয়ে নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে মারমেইড।
উদ্যোক্তা সোহাগের একটি স্বপ্নও রয়েছে এ নিয়ে। শোনা যাক তার মুখেই, কক্সবাজারে প্রায় ৫শ’ হোটেল-মোটেল রয়েছে। সবাই যদি আর্ট সাপ্লাই করে তাহলে কক্সবাজার আর্ট ডেস্টিনেশনে পরিণত হবে। একটি রুচিশীল পরিবেশ তৈরি হবে। নন্দন দেখার জন্য সারা বিশ্বের মানুষ তখন কক্সবাজার আসবে। মারমেইড গ্যালারি সেটি বাস্তবায়নে কাজ করে চলেছে।
মারমেইড-মারম্যান
এক কথায় বললে, মারমেইডের এ-মাথা থেকে ও-মাথা তথা আগা-গোড়া শিল্প দিয়ে মোড়ানো। ঘর, দুয়ার, চেয়ার, টেবিল থেকে শুরু করে সামান্য ময়লা ফেলার ঝুড়ি বা বেসিনও যেনো একেকটি শিল্পকর্ম। অতিথিরা বেড়াতে এসে প্রায়ই এটা-ওটা কেনার বায়না ধরেন। সেখান থেকেই মারমেইড-মারম্যানের সৃষ্টি। এটি মূলত লাইফস্টাইল ও ফার্নিচার স্টোর।
সোহাগ বলেন, বিচে যে ধরনের লাইফস্টাইল মানুষের দরকার হয়, সেইসব সামগ্রী আমরা সরবরাহ করি। মানুষ কোথাও গেলে সেখানকার স্মৃতি নিয়ে যেতে চান। কক্সবাজারকে ব্র্যান্ডিং করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা এই অঙ্গ-প্রতিষ্ঠানটি চালু করেছি। আমাদের পরিকল্পনা, কক্সবাজারের ১২০ কিমির মধ্যে ২০টি স্টোর করা।
আমরা মানুষকে উন্নত সেবার সঙ্গে সঙ্গে একটি নান্দনিক ও রুচিশীল জীবনব্যবস্থাও উপহার দিতে চাই, যোগ করেন এ স্বপ্নবাজ উদ্যোক্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৬
এসএনএস/জেডএম
** শতভাগ ‘অরগ্যানিক ফুড’ পাতে দিতে একনিষ্ঠ মারমেইড