ঢাকা, শনিবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

সাঙ্গুর বাঁকে 'ডিম’ পাহাড়ে, বিকেলেই সূর্য ডুবে!

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৬
সাঙ্গুর বাঁকে 'ডিম’ পাহাড়ে, বিকেলেই সূর্য ডুবে! ছবি: আবু বকর

থানচি, বান্দরবান থেকে: পড়ন্ত বিকেলে পাহাড়ের কোলে ঢলে পড়ছে সূর্য। হেমন্তের মেঘে ঢাকা আকাশ থেকে সূর্যরশ্মির বিচ্ছুরণ সুউচ্চ সবুজে ঢাকা পাহাড়কে করে তুলেছে মোহনীয়।

বিকেলের সূর্য আলো ঢালছে নদীর জলে, নদীর বুকে ছলাৎ ছলাৎ ঢেউ তুলে চলছে তরি।
 
পাহাড়, নদী ও মেঘের এমন অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে আসতে হবে থানচি, বান্দরবানের শেষ সীমানার পাহাড় ঘেরা উপজেলায়।
 
প্রকৃতির চার উপাদান- পাহাড়, ঝরনা, নদী এবং মেঘের মিতালী পার্বত্য অন্য অঞ্চলের অন্যান্য জায়গা থেকে পৃথক করেছে থানচিকে। আর তাইতো অল্প অল্প করে প্রতিদিন বাড়ছে এখানকার পর্যটকের সংখ্যা।
ল্যান্ড ক্রুজার মডেলের চান্দের গাড়ি নিয়ে বান্দরবান থেকে শৈলপ্রপাত, নীলগিরি, চিম্বুক, জীবননগর, বলিপাড়ার আঁকা-বাঁক উচু নিচু পাহাড়ি পথ ধরে এগোতে এগোতে সাঙ্গু নদী।
 
সেই নদীর ওপর থানচি ব্রিজ। ব্রিজের ওপর উঠতেই দুই পাশে প্রশস্থ পাহাড়, যেনো নদীর ওপর ডানা মেলে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে প্রথমবার আসা অতিথিদের!
 
বিকালে মেঘে ঢাকা পাহাড়ের কোলে নদী, এই সৌন্দর্য উপভোগ করছিলেন পাহাড়ি-বাঙালি মিলেমিশে। আর ব্রিজের পাশে মুক্তমঞ্চে সন্ধ্যার পর প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব দেখতে আসা মানুষের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। তারা উপভোগ করছিলেন বিকেলের সৌন্দর্য্য, চোখের কেন্দ্রে পশ্চিম আকাশের একটি গোলাকার উচু পাহাড়ের দিকটায়।
 
সন্ধ্যার আগেই এখানে সূর্য হারিয়ে গেলো দূর পাহাড়ের আড়ালে। ব্রিজের দক্ষিণে নানা জাতের মানুষের চোখের কেন্দ্রে থাকা ওই পাহাড় সম্পর্কে জানতে আগ্রহ বেড়ে গেলো আমাদের।
 
ব্রিজের উপরে কথা হয় থানচি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ময়ন মারমার সঙ্গে। বলেন, ওটাই ‘ডিম পাহাড়’। নাম শুনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিমের মতো আকৃতি, তাই নাম হয়েছে ‘ডিম পাহাড়’।
 
বান্দরবান থেকে আলীকদম-থানচি সড়কের ৩৩ কিলোমিটার পয়েন্টে সড়কের পাশে সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩ হাজার উচ এই পাহাড়। ডিম্বাকৃতিরর ন্যায় এ পাহাড়কে ‘ডিম পাহাড়’ নামে চেনেন স্থানীয়রা।
 
স্থানীয় চিকিৎসক মানেন্দ্র বড়ুয়া বলেন, ছোট বেলা থেকে শুনে আসছি এ পাহাড়ের নাম ‘ডিম পাহাড়’।
 
কবে কোন কালে এই পাহাড়ের নাম ‘ডিম’ হয়েছে তা নির্দিষ্ট করে জানা না গেলেও এই পাহাড়কে ঘিরে আকর্ষণ পর্যটকদের।
 
 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম (ইউএনও) বাংলানিউজকে বলেন, এই ডিম পাহাড় থানচিতে হয়ে উঠেছে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। বান্দরবানে ডিম পাহাড়সহ অন্যান্য স্পটগুলোতে দিন দিন বাড়ছে পর্যটকদের ভিড়।  
 
পর্যটকদের বিনোদনের খোরাক যোগাতে পারে একই সঙ্গে নদী ও পাহাড় ঘেরা থানচি।

** দুর্গম পাহাড়ের আড়ালে অপূর্ব দু’টি ঝরনা
** লেকের ধারে পাহাড়পাড়া, মেঘের কোলে স্বর্গীয় লীলাভূমি!
** ঝরনায় ফেলছে বোতল-প্লাস্টিক, দেখার নেই কেউ?
** টাকার গাছ!
**পাহাড়ি ঝরনায় পর্যটকের সঙ্গী যখন মুলি বাঁশ
** পাহাড়িদের প্রিয় খাবার নাপ্পি’র সাতকাহন

** সাদা রঙের হলুদ আর আদা ফুল অনন্য, পর্যটকের কাছেও আকর্ষণীয়
**  ভরা মৌসুমে পর্যটক টানছে পাহাড় ঘেরা খাগড়াছড়ি
** পাহাড়ে উদ্ভাবিত ফলের জাত ছড়াচ্ছে সারাদেশে
** ওয়ান স্টপ সার্ভিসের প্রস্তুতি নিচ্ছে বান্দরবান পুলিশ

 
বাংলাদেশ সময়: ০৭২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৬ 
এমআইএইচ/এমআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ