ঢাকা, শনিবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

মেঘলা সৌন্দর্যে পাহাড়ি সংস্কৃতি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৬
মেঘলা সৌন্দর্যে পাহাড়ি সংস্কৃতি ছবি: ডি এইচ বাদল/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র (বান্দরবান) থেকে: পাহাড়ের কোল ঘেঁষে দেখতে পুরোপুরি পাহাড়ি পল্লীর মতো। মারমা ও ত্রিপুরাদের বাড়ির আদলে।

তবে, ভেতরের ডেকোরেশনে নান্দনিকতার ছোঁয়া। খরচও থাকবে হাতের নাগালে। যাকে বলে সাধ ও সাধ্যের অপূর্ব সমন্বয়।

বান্দরবান জেলা প্রশাসন পরিচালিত মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে এই পরিসেবা যুক্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ।  

অনেকে পাহাড়ি পরিবেশে থাকতে চান। তাদের সেই সাধের কথা মাথায় রেখেই এই আয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি।

বান্দরবানে গেছেন কিন্তু মেঘলায় যাননি এমন লোকের সংখ্যা সম্ভবত খুবই নগন্য। কারণ মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সে না গেলে অনেক কিছুই অপূর্ণ থেকে যাবে আপনার। যে কারণে কেউ বান্দরবান গেলে মেঘলাকেও রাখেন তার পছন্দের তালিকায়।

দর্শনার্থী চাহিদা অনুযায়ী সাজানো হয়েছে এই পর্যটন কেন্দ্রটি। জেলা প্রশাসন নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। পুরোদমে চলছে সেই শ্রীবৃদ্ধির কাজ। আগে যারা ঘুরে গেছেন তারা হয়তো কিছুদিন পরে এলে আর চিনতেই পারবেন না।

প্রবেশ পথের ছোট্ট টিকেট কাউন্টার ভেঙে তৈরি করা হচ্ছে দ্বিতল অফিস কমপ্লেক্স। সেখানে থাকবে অত্যাধুনিক তথ্য কেন্দ্র, টিকেট কাউন্টার, ম্যানেজারের জন্য কক্ষ ও বিশ্রামাগার। তথ্যকেন্দ্রে মেঘলার পাশাপাশি পুরো বান্দরবানের প্রয়োজনীয় সেবা পাওয়া যাবে।

প্রধান ফটক থেকে ঢালুতে নামার পথটি আগে ছিল কিছুটা বিপদজনক। একটু অসাবধান হলে বিশেষ করে সামান্য বৃষ্টি হলে পা পিছলে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। সে কারণে মেইন ফটক থেকে ঝুলন্ত ব্রিজ পর্যন্ত পার্কিং টাইলস বসানো হচ্ছে।
এখন ঝুলন্ত ব্রিজে ওঠার মুখে স্বল্প পরিসরে শিশু পার্ক রয়েছে। এই পার্কটি সরিয়ে দুই নম্বর ঝুলন্ত ব্রিজের ওপারে বৃহৎ পরিসরে স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।  

এর থেকে খানিকটা এগিয়ে গেলে থাকছে ফলদ উদ্যান। রয়েছে কদবেল, করমচা, তেঁতুল, বেল, জলপাই ও কামরাঙ্গাসহ দেশীয় ১৩ প্রজাতির ফলদ বৃক্ষ। নতুন প্রজন্মকে দেশীয় প্রজাতির ফলদ বৃক্ষের সঙ্গে পরিচিত করার জন্যই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এখন গাছগুলো ছোট রয়েছে, একটু বড় হয়ে উঠলে এই ছায়ায় বসে নির্মল বাতাস খাওয়ার বন্দোবস্ত থাকছে।

ফলদ উদ্যান স্থাপনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে এনডিসি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী একটি জরুরি বিষয়ে সময়োচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করলেও ফলে কিন্তু ঘাটতিতে রয়েছি। সে জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঘুরতে এসে যেন আইডিয়া নিয়ে যেতে পারেন। ফলদ উদ্যানের পাশেই থাকছে আম্রকানন। ঐতিহাসিক মেহেরপুর আম্রকাননের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এর নামকরণ করা হয়েছে।  

আর পুরো লেকের কোল ঘেঁষে থাকছে নারিকেল গাছ। এরই মধ্যে রোপিত গাছগুলো উঁকি দিতে শুরু করেছে। তার পাশ দিয়ে থাকছে ওয়াক ওয়ে। হাঁটার সময় পাতার ঝাপটানি আপনাকে অন্যরকম ভালো লাগায় জুড়িয়ে দিয়ে যাবে। যে কেউ ইচ্ছা করলে লেকের নির্মল বাতাস গায়ে মেখে মর্নিং ওয়াক সেরে নিতে পারবেন।  

আমাদের নতুন প্রজন্মকে আগর গাছের পরিচিত করতেই এক কোণে লাগনো হয়েছে আগর বাগান। দর্শনার্থীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে পাহাড় ঘেরা লেকে নামানো হচ্ছে আরও তিনটি আঁচলের নৌকা। যা চলবে সৌর বিদ্যুতে। যেন শব্দ দূষণ আপনার ভাবনায় ছেদ ঘটাতে না পারে।

লেকে ভেসে বেড়ানোর সময় পানির ছলাৎ ছলাৎ শব্দ জলজ পাখির খেলা আর গাছে কাঠ বিড়ালীর তিড়িং বিড়িং নাচ আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে।
থাকছে জলঘর ও ভেষজ উদ্যান।  

শ্রীবৃদ্ধির সব কর্মযজ্ঞ চলছে বান্দরবানের জেলা প্রশাসন দিলীপ কুমার বণিকের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। দেশের একমাত্র সেবাধর্মী পর্যটন কেন্দ্র এটি। যার আয়ে ঘরে ঘরে আলোকবর্তিকা তৈরি হচ্ছে। (চলবে)

** ‘ভাবার লোকদের তো সমস্যা নেই’
** ঝরনা নিজেই এসে মিশে গেলো শরীরে
** খাগড়াছড়িকে পাহাড়ের সঙ্গে মেলালে ভুল হবে
** হ্রদে ছয় ঘণ্টা রোমাঞ্চকর নৌ ভ্রমণ, ১৪০ টাকায়

 বাংলাদেশ সময়: ০৮০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৬
এসআই/এমআই/পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ