বান্দরবান থেকে: আরোগ্য-কুঞ্জের যাত্রা শুরু হলো সেবাধর্মী বিনোদন কেন্দ্র মেঘলা’য়। দু’মাস আগে মেঘলায় দেড় একর জঙ্গল পরিষ্কার করে আড়াইশো চারা লাগিয়ে ফলদ উদ্যানের সূচনা করা হয়।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় বান্দরবানের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ ওষুধি গাছের চারা লাগিয়ে এ আরোগ্য-কুঞ্জের সূচনা করেন। তাকে সহযোগিতা করেন মেঘলার কর্মী সুকুমার তঞ্চঙ্গা, মো. এমরান ও কেশপ্রু মারমা।
মেঘলার ক্যাবল কার এলাকার পাশে জঙ্গল পরিষ্কার করে তৈরি ওই উদ্যানে থাকবে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির ওষুধি উদ্ভিদরাজি। শুক্রবার লাগানো হয়েছে শতমূল, বাসক, পাথরকুচি, সর্পগন্ধা, গোলমরিচ, কালোমেঘ, তুলসী, অশোক, ওলট কম্বল, ঘৃতকুমারী, অশ্বমূল, নিম, তোকমা, যজ্ঞডুমুর ইত্যাদি।
হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ বাংলানিউজকে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃক্ষরোপণের আহ্বান জানানোর পর বান্দরবানে জঙ্গল পরিষ্কার করে গাছের চারা লাগানোর কাজ শুরু করি। মেঘলায় অনেক অব্যবহৃত জায়গা পড়ে ছিলো যেগুলো জংলি কলাগাছ আর আগাছায় ভরা। আমি সেগুলো পরিষ্কার করে দেড় একর জায়গায় ফলদ গাছ লাগিয়ে উদ্যান করি। দু’মাস আগে লাগানো জলপাই, জাম, অরবরই, কামরাঙা, আমড়া, চালতা, লেবু, ডালিম, তেঁতুল, কদবেল, বেল, আমগাছের চারাগুলো এখন বড় হচ্ছে।
৩১তম বিসিএস দিয়ে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বান্দরবানে যোগ দেওয়ার পর ইতোমধ্যে চিম্বুকে ৬০টি ফলদ, ৭শ বনজ গাছের চারা, নীলাচলে ২৫টি নারকেল গাছসহ শতাধিক গাছের চারা লাগিয়েছেন বৃক্ষপ্রেমী এ কর্মকর্তা। হাফেজঘোনায় গেজেটেড সরকারি অফিসার্স ডরমেটরিতেও শতাধিক ফলের গাছ লাগিয়েছেন তিনি।
২০১২ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক কে এম তারিকুল ইসলাম ও এনডিসি মো. শামীম হোসেন সৃজিত ভেষজ উদ্যানের অসমাপ্ত কাজ সম্পাদন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ আরোগ্যকুঞ্জ সৃজন করা হয়েছে বলে জানালেন বর্তমান এনডিসি।
এনডিসি মুজাহিদ বলেন, পর্যটকরা শুধু ফুল দেখবেন তা নয়, আমি চাই তারা ফলের স্বাদ নেবেন, পাখির ডাক শুনবেন, প্রজাপতির ওড়াউড়ি দেখবেন। তারা ফলদ, বনজ, ওষুধি গাছের সঙ্গে পরিচিত হবেন। পাশাপাশি গাছের চারা রোপণে, বাগান সৃজনে, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আন্তরিক হবেন।
তিনি বলেন, আমি জামালপুরের সন্তান। বান্দরবান আমার কর্মস্থল। এখানে গাছের চারা লাগানোর সুযোগ আছে তাই উদ্যোগ নিয়েছি। এগুলো দেশের কল্যাণ বয়ে আনবে, মানুষের উপকার করবে, পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য রক্ষা করবে এবং গবেষক ও শিক্ষার্থীদের কাজে আসবে। আশা করি, আগামী দিনে যারা আমার স্থলাভিষিক্ত হবেন তারা উদ্যানগুলো আরও সমৃদ্ধ করবেন।
মেঘলার পর্যটকদের জন্য বান্দরবান জেলা শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরের প্রান্তিক লেকের মতো গাছের বাংলা, ইংরেজি ও বৈজ্ঞানিক নামফলক দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৬
এআর/এসএনএস