ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

সাদেকের কমলার জুসে পাহাড় মাড়ানোর ক্লান্তি দূর

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৬
সাদেকের কমলার জুসে পাহাড় মাড়ানোর ক্লান্তি দূর ছবি: আসিফ আজিজ-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কেওক্রাডং ঘুরে: রুমার ১১ মাইল থেকে উত্তরে প্রায় ৩শ’ ফুট খাড়া ঢাল বেয়ে নিচে নামতেই জান কাবাব! কেওক্রাডং ট্রেকিংয়ের শুরুতেই বড় ধাক্কা। এই পথ আবার উঠতে হবে মনে হতে হাত পা ছেড়ে দেওয়ার অবস্থা।

নিচের পাহাড়ি গ্রামটির নাম স্বৈরাতন পাড়া।
পাহাড়ও পথিকের কষ্ট বোঝে! বোঝে পাহাড়ের সরল মানুষগুলোও। হয়তো তাই ঢাল বেয়ে নিচে নেমেই পাওয়া গেলো দু’টি দোকান।

আগে ঢক ঢক করে পানি গিলে শরীর এলিয়ে দিয়ে বসে পড়লো পুরো টিম। ট্রেকার সানভী বললেন, ভাই প্রথম দুই ঘণ্টা কষ্ট একটু হবেই। পরে সব দেখবেন সহজ। সেই সহজকে আরও সাবলীল করার জন্য এগিয়ে এলো আমাদের গাইড সাদেক। বললো, কমলার জুস খাবেন? বানিয়ে দিচ্ছি এখনই, সময় লাগবে না।

প্রথমে একটু দ্বিধা-দ্বন্দে থাকলেও শরীরের লবণ ও এনার্জির কথা চিন্তা করে সম্মতি দিলো সবাই। টপাটপ চার-পাঁচটি কমলা ৩০ টাকায় কিনে শুরু করলো জুস তৈরি। তার পদ্ধতিটি একটু ভিন্ন। এখানে তো আর শহুরে ব্লেন্ডার নেই। তাই নিজের সিস্টেম করে নিয়েছে নিজেই।
কমলাগুলো না ছিলে ছুরি দিয়ে মাল্টার মতো করে কাটলো প্রথমে। পাহাড়ের সবুজ টক-মিষ্টি মাল্টা। পরে চেপে বের করলো রস। তাতে মেশালো সামান্য পরিমাণ চিনি, একটু লবণ। এবার ঢেলে দিলো পানি। বিচি আর আঁশ থাকলো সেভাবেই।
 
এরপর নেড়েচেড়ে কাঁচের গ্লাসে সাদেক যেটা পরিবেশন করলো তা পান করে সবাই শুধু চোখ বন্ধ করে তৃপ্তির স্বাদ নিলো না, ধন্যবাদ দিয়ে বললো, এমন চলবে সারা পথ।

এই জুস হয়ে উঠলো সঞ্জীবনি পানি। সমস্ত ক্লান্তি যেন দূর হলো নিমিষে। উঠে রেডি হয়ে ফের শুরু হলো পাহাড়ি চড়াই-উতরাই। বারবার মনে হচ্ছিলো আবার কখন পাবো সাদেকের স্পেশাল হ্যান্ডমেড সবুজ কমলার জুস। দার্জিলিং পাড়ারটা ছিলো অসাধারণ।

এভাবে পুরো টিম সুযোগ পেলেই কেওক্রাডং অভিযানে আমাদের কমলার জুস পান করিয়ে চলার পথে ক্লান্তি দূর করে উজ্জীবিত করে রাখার সব কৃতিত্বই অভিজ্ঞ গাইড সাদেকের।

যারা নিয়মিত পাহাড় ট্রেকিং করেন, যারা শখে ঘুরতে যান, যারা একবারের জন্য হলেও যাবেন কোনো বড় পাহাড় অভিযানে তারা ট্রাই করতে পারেন এ কমলার জুস। তবে সিজনটা হতে হবে অবশ্যই সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর-জানুয়ারি পর্যন্ত।
দারুণ টনিক সাদেক স্পেশাল কমলার জুস!

**খাবারে পাহাড়ি সাজ-ঐতিহ্যের হলিডে ইন
**পাহাড়ি শিশুর খেলায় প্রাণ যায় মায়াবি পাখির
** পৃথিবীর সেরা পানি আমাদের পাহাড়ে!

** ৩ ঘণ্টার ট্রেইলে ঘেমে-নেয়ে কেওক্রাডংয়ের স্বর্গচূড়ায়
** রাস্তা হলে দেশি পর্যটকই জায়গা পাবে না বগালেকে

** পাহাড়ের ময়না যাচ্ছে পর্যটকের খাঁচায়
** হরেক পদের খাবারে ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ’র শুভেচ্ছা
** পাহাড়চূড়ায় চোখের সামনে  রংধনুর ’পর রংধনু (ভিডিওসহ)
** ইউরোপ-আমেরিকাকেও পায়ে ঠেলবে রাঙামাটির লংগদু
** ধসে যাচ্ছে রাঙামাটি শহরের পর্যটন
** রাঙামাটিতে বোটভাড়া নিয়ে ঠকবেন না যদি…
** বিকেলটা কাটুক হেরিটেজ পার্কে
** দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বুদ্ধমূর্তির দেশে
** পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী সব খাবার ‘সিস্টেমে’
** বাঁশের ভেতর মুরগি, পদের নাম ব্যাম্বো চিকেন
** পাহাড়ের সবুজ মাল্টায় দেশজুড়ে বিপ্লব
** নীলাচলে ভোরের আলোয় মেঘের ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ 


বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৬
এএ/জেডএম

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ