ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

সুন্দরবনের দক্ষ বনমালী চিতল হরিণ

আবু তালহা, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
সুন্দরবনের দক্ষ বনমালী চিতল হরিণ চিতল হরিণ- ছবি: ডিএইচ বাদল ও মানজারুল ইসলাম

হিরণ পয়েন্ট না বলে হরিণ পয়েন্ট বললে অত্যুক্তি হবে না! কারণ এখানে ট্রেল ধরে হাঁটলে দেখা যাবে হরিণ আর হরিণ।

হিরণ পয়েন্ট, শরণখোলা রেঞ্জ, সুন্দরবন থেকে: হিরণ পয়েন্ট না বলে হরিণ পয়েন্ট বললে অত্যুক্তি হবে না! কারণ এখানে ট্রেল ধরে হাঁটলে দেখা যাবে হরিণ আর হরিণ। সেজন্য অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে, কেননা মানুষের উপস্থিতি টের পেলেই এরা গভীর জঙ্গলে চলে যায়।



বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জেটি পার হয়ে রোববার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে ‘নীলকমল’ পৌঁছালো লঞ্চ গাঙচিল। হিরণ পয়েন্ট থেকে অন্য কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে সময়ের ব্যাপারে হতে হবে সচেতন। জোয়ার শুরুর পর রওয়ানা হতে হবে আবার জোয়ার থাকতেই বেরিয়ে আসতে হবে। সাগরের পানি একবার কমে গেলে ফের জোয়ার আসার অপেক্ষায় বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই।

কেবল হিরণ পয়েন্ট নয়, সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া বড় নদী, শাখা নদী, খাল ধরে এগুলে চোখে পড়বে দু’পাশের গাছগুলো খুব সাজানো গোছানো। নীচের দিক থেকে নির্দিষ্ট উচ্চতা পর্যন্ত নেই কোনো শাখা-প্রশাখা-পাতা। যেনো কোনো মালী সযত্নে ছেঁটে দিয়েছেন গাছগুলো।

ভালো করে লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে, বনের হরিণগুলোর নাগালে থাকা পাতা খেয়ে ফেলায় সৃষ্টি হয়েছে এই নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

ওড়া, কেওড়া, গোল, ধুন্দল, গেউয়া গাছের ফল-পাতা খুব পছন্দ হরিণের। এই বনের হরিণ কেওড়া গাছ দেখলে লোভ সামলাতে পারে না। দীর্ঘ ও ঝাঁকালো এই গাছের মগ ডালে ধরে টক স্বাদের ফল। এটি কেবল হরিণেরই প্রিয় নয়, দক্ষিণবঙ্গের মানুষ সেদ্ধ করে লবণ দিয়ে কেওড়া ফল খেয়ে থাকে।
নদীর ধারে চিতল হরিণ
হরিণ খুবই আরাম প্রিয় এবং সৌখিন প্রাণী। সুন্দরবনে দু’ ধরনের হরিণ রয়েছে- বার্কিং ডিয়ার (কাঁকড় হরিণ) ও স্পটেড ডিয়ার (চিতল)। কাঁকড় হরিণ খুব কম দেখা যায়, এরা লোক সমক্ষে প্রায় আসে না বললেই চলে। খাঁড়ি বা নদীর ধারে কদাচিৎ এদের দেখা মেলে। বাঘ কাছাকাছি এলে কাঁকড় হরিণ কুঁ কুঁ শব্দ করে।

চিতল হরিণের গায়ে লাল-খায়েরি রঙের ওপর পিঠে এবং দু’পাশে ছোট গোলাকৃতির সাদা দাগ থাকে।  এদের শিং থাকে শাখা-প্রশাখার মতো।  নদীর ধারে এদের দলবদ্ধ হয়ে ঘুরতে দেখা যায়।

হরিণ কাদা একেবারেই পছন্দ করে না। যদিও বাধ্য হয়েই তাদের এই কষ্ট সহ্য করতে হয়। পায়ে কাদা লাগা মাত্র এরা বিরক্ত বোধ করে এবং ঝাড়া দিয়ে কাদা ফেলতে থাকে।

ভীতু প্রকৃতির হলেও হরিণ খুবই সতর্ক প্রাণী। ফলে সুযোগ বুঝেই শিকার করতে হয় বাঘকে। একবার বাঘের উপস্থিতি টের পেলে এরা তীব্র বেগে দৌড় দেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় বাঘ হরিণের কাছে পরাজয় স্বীকার করে। দৌড়ানোর সময় শিং যেনো গাছের সঙ্গে বেধে না যায়, সে কারণে এরা মাথা উপর দিকে তুলে ফেলে- এতে শিং থেকে যায় পিঠের উপর।

পূর্ণবয়স্ক চিতল হরিণের ওজন হয় সাধারণত দেড়শো থেকে দু’শো পাউন্ড পর্যন্ত।

** বিপদের কাণ্ডারী বদর কবুতর
** দুবলার চরে নাম সংকীর্তন-ভাবগীতে খণ্ডকালীন জীবন
** বাঘের পায়ের ছাপ সন্ধানে ওয়াকওয়ে ধরে দেড় কিলোমিটার
** মংলা পোর্টে এক রাত
** বিস্মৃতির অতলে বরিশালের উপকথা​
**‘জোনাকি’ ভরা বুড়িগঙ্গা

সহযোগিতায়

বাংলাদেশ সময়: ১০২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
এটি/এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ