বলছিলাম পূর্ব সুন্দরবনের (শরণখোলা রেঞ্জ) কটকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের দুই হরিণের কথা। কটকার জঙ্গলে তাদের বসবাস ও বিচরণ ক্ষেত্র।
কবে থেকে তাদের নাম মিঠু-টিটু হলো আর এ নাম কে-ই বা রাখলো, বন বিভাগের কেউই তা বলতে পারলেন না। কটকায় দায়িত্ব পালন করে যাওয়া বন বিভাগের কর্মীরা তাদের মিঠু ও টিটু বলে ডাকতেন, এখন তারাও তাদের এ নামেই ডাকেন।
মিঠুকে দেখলেই অন্য হরিণ থেকে আলাদা করে চেনা যায়। শারীরিক গঠনে অন্য যেকোনো হরিণের চেয়ে বড়। শিং দু’টিও বড়। রাজকীয় তার চালচলন। সে যখন চলাফেরা করে তখন তাকে একটি ছোটখাটো ঘোড়ার মতো মনে হয়।
বনরক্ষী মো. ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, মিঠু বলে ডাকলেই সে সাড়া দেয়। এ ডাক শুনতে পেলেই যেখানেই থাকুক ছুটে আসে। মানুষকে সে আপন করে নিয়েছে। মানুষও তাকে আপন করে নিয়েছে।
ইসলাম যখন মিঠুর কথা বলছিলেন তখন বনরক্ষী মোস্তফা হায়দার ও দেলোয়ার হোসেন তার সঙ্গে ছিলেন। তাদের চোখে-মুখে মিঠুর জন্য ভালোবাসার ছাপ স্পষ্ট।
প্রতিদিন একবার হলেও মিঠু বন বিভাগের অফিসের কাছে আসে। তারা তাকে ভাতের মাড় ও অন্যান্য খাবার খেতে দেন। পর্যটকরা মিঠু বলে ডাকলে তাদের ডাকেও সাড়া দেয়।
বাংলানিউজ টিম সুন্দরবন ভ্রমণের অংশ হিসেবে রোববার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাতটায় কটকায় পৌঁছে বন বিভাগের কর্মীদের মুখে মিঠুর গল্প শোনে।
সোমবার সকালে বাংলানিউজ টিম টাইগার টিলা থেকে ফেরার পথে কেওড়া গাছের কিছু ডাল ভেঙে হরিণদের খেতে দেয়।
পাতা খেতে দেওয়ার পর চারপাশে হরিণের দল সতর্ক হয়ে ওঠে। তারা বাংলানিউজ টিমকে পরখ করে, সন্দিগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকে। কেউ পাতা খেতে এগোয় না। যেনো কারও সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।
মিঠু এক মিনিট পর্যবেক্ষণ করে সর্বপ্রথম খাবারের দিকে এগিয়ে যায়। আর সঙ্গে সঙ্গেই চারদিক থেকে হরিণের দল সেখানে জমা হয়ে পাতা খেতে শুরু করে।
টিটুকে দেখা গেলো অফিসের পাশেই। বন বিভাগের কর্মীরা তাকে বাংলানিউজের সঙ্গে টিটুকে মিঠুর বন্ধু বলে পরিচয় করিয়ে দেন। টিটু হয়তো ভবিষ্যৎ নেতা। সে মিঠুর সঙ্গে থেকে হয়তো নেতৃত্বের তালিম নিচ্ছে।
আরও পড়ুন...
** লবণ-কেমিক্যাল মুক্ত দুবলার চরের শুঁটকি
** ঝড়ের চেয়েও বেশি ভয় দস্যুতে
** জেলেদের প্রাণ দুবলার চরের ‘নিউমার্কেট’
** বনরক্ষীদের জীবনই অরক্ষিত
** মংলা হতে পারে সুন্দরবন ভ্রমণের প্রবেশদ্বার (ভিডিও)
** গাইড থেকে ট্যুর অপারেটর
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৬
এমআই/এসএনএস