সূর্য তখনও দিগন্তে হারিয়ে যায়নি। দিগন্তের খেজুর গাছের মাথা ছুঁই ছুঁই করছে।
আমাদের হাতেও সময় নেই। ঠিক সন্ধ্যায়ই শহরে ফিরতে হবে। তাই কথা না বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ফুল ফুটতে কয়দিন লাগে? ‘তা প্রায় তিন মাস লেগে যায়। মাঝে মাঝে আগেও হয়ে যায়। ঠিকমতো যত্ন-আত্মি করা লাগে’। কারা ফুল কেনে? ‘শহর থেকে লোক আইসা নিয়া যায়। আগেই ঠিক করা আছে। শহরে নিয়া ব্যাচে’। আপনারা কত পান? ‘বেশি না। শ’য়ে হাজার। খরচও কম না। চারা কেনা, ওষুধ দেওয়া, সপ্তায় কমে একবার পানি দেওয়া। মাঝে মাঝে বেশিও লাগতে পারে। খাটনির কথা বাদই দিলাম’। বিভিন্ন রঙের গ্লাডিওলাস হয়ে থাকে, যেমন-লাল, সাদা, বেগুনি, গোলাপি।
বাকি তিনমাস ক্ষেতে কী চাষ করেন? ঠিক নাই, একেক সময় একেকটা।
কৃষকের খাটনির কথা, শ্রমের কথা বাদই থাকে। ফুলের সুগন্ধের কাছে ঘামের গন্ধ সহজেই মিলিয়ে যায় আরকি! সেকথা থাক।
ফুলটির নাম গ্লাডিওলাস। যশোর-বেনাপোল সড়কের পাশে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে চোখে পড়বে এই ফুল। তবে চারা রোপণ করতে হয় অক্টোবরের দিকে। নির্দিষ্ট দূরত্বে সারিবদ্ধভাবে চারা রোপণ করতে হয়।
আবু হানিফ বছরের এই সময়টাতে বাবার জমিতে কম সময়ে নগদ ও বেশি লাভের আশায় গ্লাডিওলাস চাষ করেন। মাঝে মাঝে রজনীগন্ধা, গোলাপ ফুলও চাষ করেন তিনি।
শহরের বিয়ে, জন্মদিন, প্রেম-ভালোবাসা, রোগী দেখতে যাওয়া, ঘরের শোভা বর্ধন, অভ্যর্থনা জানানোসহ আরও নানা উপলক্ষে গ্লাডিওলাস লাগবেই।
যশোরে বিশেষ করে ঝিকরগাছায় এরকম আরও অনেকেই গ্লাডিওলাস চাষ করেন। এই অঞ্চলের ফুলের চাহিদা পূরণ করে ঢাকায়ও সরবরাহ করা হয় গ্লাডিওলাস। ফুলের চাহিদা পূরণে আবু হানিফও একজন অংশীদার।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৬
এমজেএফ