নিজেই নিজের দুর্বলতা তুলে ধরে বাংলানিউজকে বলেন, আমার সমস্যা একটাই। আমি দেশে থাকি না।
দুবাই প্রবাসী এই নেতা বলেন, আমি ফেসবুক, মোবাইল, হোয়াটস অ্যাপে এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। এখন দুবাই থাকা আর ঢাকায় থাকার মধ্যে পার্থক্য নাই।
২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশের মতো এখানেও বিএনপি থেকে প্রার্থী ছিল না। দীর্ঘ আট বছর ধরে সংসদ নির্বাচনের বাইরে থাকা দলটির নেতারা এখন নির্বাচনে যেতে চায়- এটা পরিষ্কার। তবে দলীয় অবস্থান এখনো বিশৃঙ্খল।
এখানে বিএনপি'র টিকিটের প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন দুই জনই। মহাদেবপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি সাবেক ডেপুটি স্পিকার আখতার হামিদ সিদ্দিকী এবং বদলগাছি উপজেলা বিএনপি সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল।
আখতার হামিদ এখন বয়সের ভারে অনেকটাই ন্যুব্জ। তবে বিএনপি'র তেমন কোন বড় খেলোয়াড় নেই যে তার বিপরীতে শক্ত অবস্থান তৈরি করবেন মাঠের রাজনীতিতে। আর গত কয়েক বছরে মাঠের রাজনীতি থেকে অনেক দূরেও সরে গেছে দলটি।
বদলগাছি ও মহাদেবপুরের ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে বিএনপি'র আর কোন অবস্থান নেই। সোহেল নামে একজন টমটম চালক বলেন, ২০০৯ এর ইলেকশনেই বিএনপি এখান থেকে নির্বাসিত। ওই নির্বাচনে হারার পর আর বিএনপির অস্তিত্ব নেই। এখানে বিএনপির লোকদের ওপর ধড়পাকড়ও হয়েছে। আর আখতার হামিদ সিদ্দিকীকে মানুষ ভালবাসতো, কিন্তু তার বয়স হয়েছে।
বদলগাছি প্রেসক্লাবে কথা হয় স্থানীয় সাংবাদিক সাগরের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখানে জামায়াতে ইসলামীর আলাদা করে অস্তিত্ব নেই। বিএনপি'র মধ্যে আখতার হামিদ সিদ্দিকী এবং ফজলে হুদা বাবুলের নাম শোনা যায়।
স্থানীয় ধান বিক্রেতা রশিদ বলেন, বিএনপি'র লোকেরা ভোট দিতে চায়। দলের উচিত নির্বাচনে আসা। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হলেও ক্ষতি কি! যারা ধানের শীষে ভোট দেবে তারা তো আর নৌকায় সীল মারবে না!
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আখতার হামিদ সিদ্দিকী বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। ফোন দিয়ে পাওয়া গেলো ফজলে হুদা বাবুলকে।
এক সময়ের জাসাস সহ-সভাপতি ফজলে বাবুল স্থানীয় নেতাদের নিয়ে উপজেলা ডাকবাংলোতে অবস্থান করছিলেন।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, যদি নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকে তবে বিএনপি অংশ নিতে পারে। যেমন বদলগাছিতে একসময় বিএনপির নেতাকর্মীদের অনেক ধড়পাকড় করা হয়েছে। ৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই এখানকার বিএনপি সমর্থকরা নিজেদের রাজনীতির মাঠ তৈরি রেখেছেন।
আপনি দেশে না থাকলে, কিভাবে এলাকার রাজনীতি করবেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শুধু এখানকার মানুষের জন্য রাজনীতিতে এসেছি। আমি বিদেশে থেকে মালটি ন্যাশনাল কোম্পানিতে যা আয় করি, তা কোন সংসদ সদস্যের চেয়ে কম নয়। তবে এখন ঢাকা আর দুবাইয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। আমি ফেসবুকে, হোয়াটস অ্যাপে বা ইমোতে কানেক্ট থাকি। আর প্রতি মাসেই সুযোগ পেলে দেশে চলে আসি। এখানে বিএনপির অনুষ্ঠানগুলোতে অংশ নিই।
স্থানীয় বিএনপির তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া যায় ভিন্ন চিত্র। তাদের অভিযোগ, ফজলে হুদা বাবুল দেশে এসে প্রচুর টাকা খরচ করেন বলেই আশপাশে কিছু দুধের মাছিকে দেখা যায়। তাকে কোনদিনই ফোনে পাওয়া যায় না। বিদেশে বসে দেশের রাজনীতি করা কি সম্ভব!
অন্যদিকে আখতার হামিদ দলীয় নেতাকর্মীদের কাছ থেকেই অর্থ নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩১ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৭
এমএন/জেডএম
ইউপি মেম্বার থেকে সর্বজয়ী এমপি
দখল আর ভোগে জনবিচ্ছিন্ন ইসরাফিল