এ আসনে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে টানা দু’বার এমপি নির্বাচিত হন গাজী ইসহাক হোসেন তালুকদার। গত বছরের ০৬ অক্টোবর তার মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তাড়াশ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ম ম আমজাদ হোসেন মিলন।
বর্তমান এমপি মিলন ছাড়াও এবার নৌকার মাঝি হতে চান আরও একডজন নেতা। তাদের মধ্যে প্রয়াত সংসদ সদস্য ইসহাক হোসেন তালুকদারের ছেলে ইমরুল হোসেন তালুকদার উপ-নির্বাচনেও মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
এছাড়াও প্রচারণা চালাচ্ছেন- দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য পেট্টোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হোসেন মুনসুর, শিল্পপতি এ টি এম লুৎফর রহমান দিলু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান খান, কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুইট, ব্যবসায়ী নেতা আব্দুল হালিম খান দুলাল, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ উদ্দিন খান, রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিন্নাহ আলমাজী, তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হক, সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কুমার কর্মকার, সহ সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি স্বপন কুমার রায় ও রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম শিহাব।
বর্তমান এমপি ম ম আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ থাকায় তার মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। তাদের মতে, এলাকার উন্নয়ন না করা, নিজেকে ও আত্মীয়-স্বজনদের সম্পদশালী করা, আত্মীয়করণের মতো অভিযোগ তাকে ‘মনোনয়ন’ দৌড়ে ভোগাতে পারে।
এসব বিষয়ে কথা বলতে ফোন করা হলে সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত থাকার কথা বলে এড়িয়ে যান ম ম আমজাদ হোসেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশী তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হক বলেন, ‘বহু আগে থেকেই আমি তৃণমূলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এলাকায় বহু জনকল্যাণমূলক কাজ করেছি। আগামী নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি’।
এবারই প্রথম জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহী এই নেতা বলেন, ‘যদি মনোনয়ন না দেওয়া হয়, তবে হাই কমান্ডের নির্দেশনা অনুসারে দলের পক্ষে কাজ করবো’।
তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কুমার কর্মকারও এবার প্রথম মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি বলেন, ‘দলের সভানেত্রী নতুন মুখ খুঁজছেন। বহুদিন ধরেই তৃণমূলে কাজ করছি’।
এবার আওয়ামী লীগের বহু প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকাকে ‘বিষয়টি আসলে আমাদের জন্য লজ্জার’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, এক সময় সর্বোচ্চ তিন-চারজন মনোনয়ন চাইতেন। কিন্তু এখন রাজনীতিতে অন্য ধরনের প্র্যাকটিস করা হচ্ছে’।
মনোনয়ন প্রত্যাশী ইমরুল হোসেন তালুকদার বলেন, ‘মনোনয়ন দেওয়া না দেওয়া দলের বিষয়। দল স্বচ্ছ ইমেজের প্রার্থী খুঁজছে। যে কারণে আমি সবার চেয়ে যোগ্য’।
কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুইট নিজেকে একমাত্র ‘যোগ্য’ প্রার্থী দাবি করে বলেন, ‘এখানে মনোনয়ন পাওয়ার মতো যোগ্য অন্য কেউ নেই। অন্যরা যারা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন, তারা কেউই প্রকৃত প্রার্থী নন’।
২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচন ও ২০১৬ সালের উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন চাওয়া এ প্রার্থী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যদি এ আসন ধরে রাখতে চায়, তবে আমাকেই মনোনয়ন দেবে’।
‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়’ নীতিতে বিশ্বাসী আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী শিল্পপতি এ টি এম লুৎফর রহমান দিলু বলেন, ‘বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ এ আসনে হারায় বঞ্চিত হয়েছেন নেতাকর্মীরা। তারা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। তাই আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়ে জয়ী হয়ে নেতাকর্মীদের জন্য কাজ করতে চাই’।
তবে যাকেই প্রার্থী করা হোক না কেন, হাইকমান্ডের নির্দেশে দলের পক্ষে কাজ করার আগ্রহ জানিয়েছেন ২০০৮ ও ২০১৪ সালেও মনোনয়ন প্রত্যাশা করা এ শিল্পপতি।
অন্যদিকে এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইতে পারেন ১৯৯১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত টানা তিনবারের এমপি প্রবীণ নেতা আব্দুল মান্নান তালুকদার, রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভিপি আইনুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় গ্রাম সরকার বিষয়ক সহ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শিশির, তাড়াশ উপজেলা সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর, দুলাল হোসেন খান ও রকিবুল আলম মিঞা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
জেডএস/এএসআর
** কর্মীদের জন্য কাজ করতে চান মানজাল
** পবা-মোহনপুরে এগিয়ে আয়েন, ‘ফ্যাক্টর’ মোল্লা!
** ‘বহিরাগতদের’ আসন পবা-মোহনপুর