ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

সিলেট-৬

পজিটিভ শমসের মবিন, কেন্দ্রের দিকে চেয়ে নাহিদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৮
পজিটিভ শমসের মবিন, কেন্দ্রের দিকে চেয়ে নাহিদ শমসের মবিন চৌধুরী ও নূরুল ইসলাম নাহিদ। ফাইল ফটো

সিলেট: প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা সিলেটের গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার আসন। এ দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৬ আসন। আসন্ন নির্বাচনে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলের মনোনয়ন চেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি) ও দুইবারের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। 

তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভিন্নভাবে আলোচনায় আসছে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটির এই সদস্যের নাম।  

ভোটের হিসাব-নিকাশে মহাজোটের প্রার্থীকে সুযোগ দিতে গিয়ে প্রার্থী তালিকা থেকে তাকে বাদ দিতে পারে আওয়ামী লীগ-সিলেটে এমন আলোচনা এখন তুঙ্গে।

 

তার বদলে এই আসনে প্রার্থী দেওয়া হতে পারে- বিএনপি ত্যাগী সদ্য বিকল্পধারায় যোগ দেওয়া শমশের মবিন চৌধুরীকে।  
 
নির্বাচনী এলাকার মানুষজনের অভিযোগ, নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে মনোযোগ কম থাকায় শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদের জনপ্রিয়তা তুলনামূলকভাবে কমছে। স্থানীয়ভাবে দলের নিয়ন্ত্রণ রেখেছেন শিক্ষামন্ত্রীর কাছের কিছু লোকজন।  

নেতাকর্মীদের থেকে মন্ত্রীকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার কারণে দলীয় নেতাকর্মী কিংবা সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ প্রকট হয়েছে। তবে এলাকার মানুষের সঙ্গে সেই দূরত্ব গোছাতে দীর্ঘ সফরে এলাকায় অবস্থান করছেন শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ।
 
স্থানীয়দের ভাষ্য, শিক্ষামন্ত্রীর মাঠের অবস্থান সুসংহত না থাকার সুযোগে জোটের প্রার্থী হিসেবে শমসের মবিনকে মনোনয়ন দিলেও দলবদল করা এই প্রার্থীর ব্যক্তি ইমেজ নিয়ে সংকট রয়েছে। এটা ভোটের হিসাবে একটি ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে।  
 
জানা যায়, সিলেট-৬ আসন খানদানিভাবে আওয়ামী লীগের। ১৯৭৩ সাল ও ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়। এরপর থেকে প্রায় দেড় যুগ আসনটি বিএনপি, জাপা ও স্বতন্ত্রদের দখলে থাকলেও ১৯৯৬ সালে নূরুল ইসলাম নাহিদকে প্রার্থী করে তা উদ্ধার করে আওয়ামী লীগ।  

এ ধারা অব্যাহত থাকে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনেও। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেটের রাজনৈতিক সচেতন মানুষ বলেন, আসন্ন নির্বাচনে ভোটের হিসাব-নিকাশ মেলাতে গিয়ে ভাগ্যের শিকে ছিঁড়তে পারে নাহিদের। কারণ মহাজোটের নতুন দল ডা. বি চৌধুরীর বিকল্পধারার প্রার্থী বিএনপি ত্যাগী শমসের মবিন চৌধুরী পেতে পারেন বলে আলোচনা চলছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘মনোনয়নের ব্যাপারে আমি নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারবো না। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে মনোনয়ন বোর্ড ও আমার দল আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। নেত্রী যা বলবেন সে সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এ নিয়ে দুই-এক দিনের মধ্যে ঘোষণা আসতে পারে। ’

পড়ুন>> ধারাবাহিক জয় চায় আ’লীগ, মর্যাদার লড়াই বিএনপির
 
এদিকে মহাজোট থেকে এই আসনে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদি শমসের মবিন চৌধুরীও।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমি আশাবাদি। মনোনয়নের বিষয়ে পজেটিভ। এ নিয়ে অফিসিয়াল ঘোষণা পেতে হাতে গোনা ক’দিন অপেক্ষা করতে হবে।

নাহিদ ছাড়াও সিলেটের প্রবাসী অধ্যুষিত এ আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন।
 
আর বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন- দলটির ভাইস চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী, জাসাস কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খান, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মাওলানা রশীদ আহমদ।
 
আর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে নিবন্ধন বাতিল হওয়া রাজনৈতিক দল জামায়াত ইসলামীর সিলেট দক্ষিণ জেলার আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানও প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন কিনেছেন।  

জাতীয় পার্টি থেকে কিনেছেন সিলেট-৫ আসনের বর্তমান এমপি সেলিম উদ্দিন। জাসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও সিলেট জেলা সভাপতি লোকমান আহমদ।
 
তথ্য মতে, এ আসনে ৩ লাখ ৭১  হাজার ৯০৩ ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৫৬ পুরুষ এবং নারী ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৪৭ জন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৮
এনইউ/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।